ঢাকা ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরগুনার তালতলীতে ২৯টি সেতু যেন মরণফাঁদ

বরগুনা প্রতিনিধিঃ

বরগুনার তালতলীতে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে ২৯টি লোহার সেতু ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৭টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দি‌য়েই প্রতিনিয়ত চল‌ছে যানবাহন। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো পুনর্নির্মাণ করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বরগুনা জেলা কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে এলজিইডির আওতায় ‘হালকা যান চলাচল প্রকল্প’ এর অধীনে এসব লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়। এরপর সেতুগুলো আর সংস্কার করা হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর, ২০০৯ সালে আইলা, মহাসেন, বুলবুল, জাওয়াদ, ইয়াসসহ বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেতুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেকগুলো সেতুর হাতল, অ্যাঙ্গেলসহ অন্য মালামাল চুরি হয়ে গেছে। এর মধ্যে ধসে পড়া কিছু সেতুর স্থানে স্থানীয় লোকজন বাঁশ, সুপারিগাছ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করেছেন। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা শহরের খোট্রার চর-মাছ বাজার এলাকার সেতুটির নিচের লোহার পাইলিং ভেঙে গিয়ে আলাদা হয়ে গেছে। বন্যার আঘাতেও বিভিন্ন অংশ ভেঙে তাই কাঠের পাটাতন দিয়ে মানুষ চলাচল করছে। এ ছাড়াও সেতুটি একদিকে হেলে পড়েছে ছোট কোনো যানবাহনও চলাচল করতে পারে না।

এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ পারাপার হন। বর্তমানে ব্রিজটি পারাপারের অনুপযোগী। যেকোনো সময় এটি ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেতে পারে। একই অবস্থা অধিকাংশ ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর। কিছু সেতুর মাঝের অংশ ধসে পড়ে গেছে তাই চলাচলের জন্য জন্য বাঁশ, সুপারিগাছ ও কাঠের তক্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

ছোট ভাইজোড়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য খালেদ মাসুদ বলেন, আমার এলাকার ৪টি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ৩টি বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয় তাদের। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেতে পারে।

নিশান বাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, খোট্টারচরের সেতুটি দিয়ে অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ শহরে যাতায়াত করেন। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় তাদের। সেতুটি দিয়ে গাড়ি চলাচল না করায় রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার কোনো সুব্যবস্থা নেই। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন।

বরগুনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান খান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলোর মধ্যে কতগুলো সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ সেটা নির্ণয় করে বাজেট আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর বরাদ্দ পেলে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করা হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:০৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪
১৯ বার পড়া হয়েছে

বরগুনার তালতলীতে ২৯টি সেতু যেন মরণফাঁদ

আপডেট সময় ০৭:০৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪

বরগুনার তালতলীতে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে ২৯টি লোহার সেতু ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৭টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দি‌য়েই প্রতিনিয়ত চল‌ছে যানবাহন। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো পুনর্নির্মাণ করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বরগুনা জেলা কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে এলজিইডির আওতায় ‘হালকা যান চলাচল প্রকল্প’ এর অধীনে এসব লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়। এরপর সেতুগুলো আর সংস্কার করা হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর, ২০০৯ সালে আইলা, মহাসেন, বুলবুল, জাওয়াদ, ইয়াসসহ বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেতুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেকগুলো সেতুর হাতল, অ্যাঙ্গেলসহ অন্য মালামাল চুরি হয়ে গেছে। এর মধ্যে ধসে পড়া কিছু সেতুর স্থানে স্থানীয় লোকজন বাঁশ, সুপারিগাছ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করেছেন। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা শহরের খোট্রার চর-মাছ বাজার এলাকার সেতুটির নিচের লোহার পাইলিং ভেঙে গিয়ে আলাদা হয়ে গেছে। বন্যার আঘাতেও বিভিন্ন অংশ ভেঙে তাই কাঠের পাটাতন দিয়ে মানুষ চলাচল করছে। এ ছাড়াও সেতুটি একদিকে হেলে পড়েছে ছোট কোনো যানবাহনও চলাচল করতে পারে না।

এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ পারাপার হন। বর্তমানে ব্রিজটি পারাপারের অনুপযোগী। যেকোনো সময় এটি ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেতে পারে। একই অবস্থা অধিকাংশ ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর। কিছু সেতুর মাঝের অংশ ধসে পড়ে গেছে তাই চলাচলের জন্য জন্য বাঁশ, সুপারিগাছ ও কাঠের তক্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

ছোট ভাইজোড়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য খালেদ মাসুদ বলেন, আমার এলাকার ৪টি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ৩টি বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয় তাদের। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেতে পারে।

নিশান বাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, খোট্টারচরের সেতুটি দিয়ে অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ শহরে যাতায়াত করেন। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় তাদের। সেতুটি দিয়ে গাড়ি চলাচল না করায় রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার কোনো সুব্যবস্থা নেই। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন।

বরগুনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান খান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলোর মধ্যে কতগুলো সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ সেটা নির্ণয় করে বাজেট আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর বরাদ্দ পেলে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করা হবে।