হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার ২৮ অভিযোগ
পদত্যাগের পর দেশত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এ পর্যন্ত ২৮টি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটিতে তার দল আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগে রয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, পুলিশের তৎকালীন আইজিসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কয়েকজন ওসি, পরিদর্শক, এসআই, এএসএসআই, কনস্টেবল, র্যাবের তৎকালীন ডিজি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন নেতার নাম। এমনকি কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধেও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগগুলো তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে।
এর মধ্যে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ ১০ জনকে নতুন করে তদন্ত সংস্থায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো বিচারিক প্যানেল না থাকায় এসব অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়া তথা আসামি গ্রেপ্তারের কোনো আদেশ নিতে পারছে না প্রসিকিউশন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, আজকের তিনটিসহ ট্রাইব্যুনালে (প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থায়) এ পর্যন্ত ২৮টি অভিযোগ এসেছে। সবগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাম রয়েছে। আইনের বিধান অনুযায়ী তদন্ত সংস্থা এবং প্রসিকিউশন পর্যালোচনা করে যাদের মূল আসামি মনে হবে, তাদের নাম ট্রাইব্যুনালে পেশ করা হবে।
বাদী পক্ষ যেটা নিয়ে এসেছেন পর্যালোচনা করে তার সাথে সংযোজন বিয়োজন হতেই পারে। ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর যেটা দাখিল করব, সেটাই হবে প্রোপার মামলা। কোর্ট বসামাত্র আমরা এ বিষয়ে যথাযথ আবেদন করব।
প্রথম অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছিল ১৪ আগস্টে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের শহীদ আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির এ অভিযোগ তদন্ত সংস্থায় দায়ের করেন। আবেদনে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনার তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া এ সময়ে আহত হয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে নিহতরা এর আওতায় থাকবেন। ঘটনার স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সমগ্র বাংলাদেশকে।
অপরাধের ধরনে বলা হয়েছে, আসামিদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অপরাধ।
অভিযোগে ব্যক্তি ছাড়াও সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
সবশেষ বৃহস্পতিবার অভিযোগটি প্রসিকিউশনের কাছে দাখিল করে ৩ আগস্ট উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হওয়া ভ্যানচালক জসিম উদ্দিনের পরিবার।