হবিগঞ্জে ৭০টি ইটভাটা বন্ধের আশঙ্কা কর্মহীন হওয়ার শঙ্কায় ৪০ হাজার শ্রমিক
হবিগঞ্জ জেলায় ৭০টি ইটভাটা এখন বন্ধ হওয়ার মুখে। গত জুন মাসে এসব ইটভাটার লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও নতুন করে নবায়নের
অনুমোদন দিচ্ছে না পরিবেশ অধিদপ্তর। এর ফলে প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবারের জীবিকা চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে। দ্রুত লাইসেন্স নবায়ন না হলে জেলার ইট উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে, যার প্রভাব পড়বে নির্মাণ খাত, শ্রমবাজার ও স্থানীয় অর্থনীতিতে।
হবিগঞ্জ জেলা ইটভাটা মালিক সমিতি সুত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলায় ৭০টি ইটভাটার লাইসেন্সের মেয়াদ গত জুন মাসে উত্তীর্ণ হয়েছে। নতুন করে লাইসেন্সের জন্য সংশ্লিষ্ট মালিকেরা আবেদন করলেও এখনো পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো ছাড়পত্র দেয়নি। এর ফলে জেলার ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। অপরদিকে এসব ইটভাটায় প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক সরাসরি কর্মরত আছেন। তাদের সঙ্গে পরিবার-পরিজনসহ জীবিকা নির্বাহ করে লাখো মানুষ। লাইসেন্স নবায়ন না হলে এসব ইটভাটা বন্ধ হয়ে যাবে, ফলে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে এবং মালিকদের কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ অনাদায়ী হয়ে পড়বে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, কোনো ইটভাটা রেলপথ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা অনুরূপ স্থাপনা থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরত্বে স্থাপন করতে হয়। তবে আইন প্রণয়নের পূর্বে স্থাপিত ইটভাটাগুলোর ক্ষেত্রে এই শর্ত শিথিলযোগ্য। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর বর্তমানে সেই শর্তের নমনীয়তা প্রয়োগ না করে দূরত্বের কড়াকড়ি আরোপ করছে বলে অভিযোগ মালিকদের।
হবিগঞ্জ জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মোতাব্বির হোসেন বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুস্বরণ করে হবিগঞ্জ জেলার সব ইটভাটা বৈধভাবে ঝিকঝাক পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। তারপরও এক কিলোমিটার দূরত্বের অজুহাতে পরিবেশ ছাড়পত্র না দেওয়া অযৌক্তিক। অটো ব্রিকসগুলোকে যদি ৪০০ মিটার দূরত্বে ছাড়পত্র দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হওয়া উচিত। একই দেশে দুই রকম আইন চলতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি ঝিকঝাক পদ্ধতির ইটভাটার জন্য দূরত্বের শর্ত এক হাজার মিটার থেকে কমিয়ে ৪০০ মিটার করতে হবে এবং এর জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি।
জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কুতুব উদ্দিন বলেন, ইটভাটাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে হবিগঞ্জে প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন। এসব শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল তাদের পরিবারের লাখো সদস্য রয়েছে। তাদের খাবার জোটানো কঠিন হবে। তাই দ্রুত একটি বাস্তসম্মত সমাধান প্রয়োজন, যাতে আইনও মানা হয়, আবার শ্রমজীবী মানুষের জীবিকাও রক্ষা পায়।




















