ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি ৪০০-এর বেশি আসনে নিরঙ্কুশ জয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনে ভরাডু্বি হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টির। এদিকে, নির্বাচনী ফল নিয়ে ইতোমধ্যেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া কিয়ার স্টারমারকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন ঋষি সুনাক।

ক্ষমতার পালাবদলের বার্তা নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে যুক্তরাজ্যে। জনমত সমীক্ষার ফল সত্যি হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) দ্বিগুণ ভোট এবং তিন গুণ আসন নিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে কিয়ের স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, এবিপি নিউজ, বিবিসি, গার্ডিয়ান

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ কমন্স’-এ মোট আসন ৬৫০। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ‘জাদু সংখ্যা’ ৩২৬। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-সহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এবং জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস, লেবার পার্টি এবার ৪০০-এর বেশি আসন পেয়ে ১৪ বছরের কনজারভেটিভ শাসনের ইতি টানতে চলেছে।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। তারপরই শুরু হবে গণনা। রাত ১২টায় প্রকাশিত হবে প্রথম ফল। তার পরের ফল প্রকাশিত হবে যথাক্রমে রাত ৩টা, ভোর ৪টা, ভোর ৫টা এবং সকাল ৭টায়। আজ (শুক্রবার) সকালেই স্পষ্ট হয়ে যাবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা কে হতে চলেছেন। সমীক্ষা যদি সত্যি হয়, তবে শুক্রবার সকালেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের দপ্তরের ‘চাবি হাতে পেয়ে যেতে পারেন’ লেবার নেতা স্টারমার।

৪৪ বছর বয়সি ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কনজারভেটিভরা ১০০-এর নিচে নেমে শতাব্দীর সবচেয়ে খারাপ ফল করতে পারে বলেও পূর্বাভাস মিলেছে বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায়। এমনকি, সুনাক নর্থ ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ডে তার ‘শক্ত ঘাঁটিতে’ হারতে পারেন বলেও কয়েকটি সমীক্ষার ইঙ্গিত দিয়েছে।

জনমত সমীক্ষা বলছে, লেবার পার্টি ৪০ শতাংশ ভোট পাবে, টোরিরা পাবে ২০ শতাংশ ও নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থি দল রিফর্ম ইউকে পাবে ১৬ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ, ভোট কেটে টোরিদের বড় ক্ষতি করতে চলেছে রিফর্মিস্টরা। ইঙ্গিত মিলেছে, গতবার টোরিদের ভোট দেওয়া এক-তৃতীয়াংশ ব্রিটিশ নাগরিকের ভোট এবার কট্টর অভিবাসন বিরোধী রিফর্ম ইউকে পেতে চলেছে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যে এবারের নির্বাচনে মোট চার হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনের এক দিন আগেই কিয়ার স্টারমারের লেবার দলের কাছে একপ্রকার পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি। ক্ষমতাসীন দলটি বুধবার বলেছে, বিরোধী দলে থাকা লেবাররা রেকর্ড ভাঙা জয়ের পথে রয়েছে।

বুধবার স্টারমার ও কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, উভয়েই ভোটের আগে শেষ দিনের মতো প্রচারণা চালান। উভয়েই ভোটারদের সতর্ক করে বলেন, বিপক্ষ দল জিতলে অর্থনীতির অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়বে। কিন্তু দলের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফলের পূর্বাভাসের মুখে কনজারভেটিভরা ক্ষতি সীমাবদ্ধ রাখার দিকেই মনোযোগ দিয়েছিল। লেবার সরকারের মোকাবিলায় কার্যকর বিরোধী দল হয়ে উঠতে তাদের পর্যাপ্ত আসন দরকার বলে প্রচারণা চালিয়েছে তারা।

কনজারভেটিভ মন্ত্রী মেল স্ট্রাইড বলেন, ‘আমি পুরোপুরি মেনে নিচ্ছি এই মুহূর্তে জরিপে যা বোঝা যাচ্ছে, তাতে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) লেবারদের বৃহত্তম জয় দেখতে হতে পারে, বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠতা যা এই দেশ এর আগে দেখেনি। স্ট্রাইডের মন্তব্যের বিষয়ে সুনাকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি দ্বিমত না করে আইটিভিকে বলেন, ‘আমি প্রত্যেকটি ভোটের জন্য কঠিন লড়াই করছি।’

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৬:২০:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
২৬ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি ৪০০-এর বেশি আসনে নিরঙ্কুশ জয়

আপডেট সময় ০৬:২০:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনে ভরাডু্বি হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টির। এদিকে, নির্বাচনী ফল নিয়ে ইতোমধ্যেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া কিয়ার স্টারমারকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন ঋষি সুনাক।

ক্ষমতার পালাবদলের বার্তা নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে যুক্তরাজ্যে। জনমত সমীক্ষার ফল সত্যি হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) দ্বিগুণ ভোট এবং তিন গুণ আসন নিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে কিয়ের স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, এবিপি নিউজ, বিবিসি, গার্ডিয়ান

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ কমন্স’-এ মোট আসন ৬৫০। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ‘জাদু সংখ্যা’ ৩২৬। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-সহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এবং জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস, লেবার পার্টি এবার ৪০০-এর বেশি আসন পেয়ে ১৪ বছরের কনজারভেটিভ শাসনের ইতি টানতে চলেছে।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। তারপরই শুরু হবে গণনা। রাত ১২টায় প্রকাশিত হবে প্রথম ফল। তার পরের ফল প্রকাশিত হবে যথাক্রমে রাত ৩টা, ভোর ৪টা, ভোর ৫টা এবং সকাল ৭টায়। আজ (শুক্রবার) সকালেই স্পষ্ট হয়ে যাবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা কে হতে চলেছেন। সমীক্ষা যদি সত্যি হয়, তবে শুক্রবার সকালেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের দপ্তরের ‘চাবি হাতে পেয়ে যেতে পারেন’ লেবার নেতা স্টারমার।

৪৪ বছর বয়সি ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কনজারভেটিভরা ১০০-এর নিচে নেমে শতাব্দীর সবচেয়ে খারাপ ফল করতে পারে বলেও পূর্বাভাস মিলেছে বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায়। এমনকি, সুনাক নর্থ ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ডে তার ‘শক্ত ঘাঁটিতে’ হারতে পারেন বলেও কয়েকটি সমীক্ষার ইঙ্গিত দিয়েছে।

জনমত সমীক্ষা বলছে, লেবার পার্টি ৪০ শতাংশ ভোট পাবে, টোরিরা পাবে ২০ শতাংশ ও নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থি দল রিফর্ম ইউকে পাবে ১৬ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ, ভোট কেটে টোরিদের বড় ক্ষতি করতে চলেছে রিফর্মিস্টরা। ইঙ্গিত মিলেছে, গতবার টোরিদের ভোট দেওয়া এক-তৃতীয়াংশ ব্রিটিশ নাগরিকের ভোট এবার কট্টর অভিবাসন বিরোধী রিফর্ম ইউকে পেতে চলেছে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যে এবারের নির্বাচনে মোট চার হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনের এক দিন আগেই কিয়ার স্টারমারের লেবার দলের কাছে একপ্রকার পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি। ক্ষমতাসীন দলটি বুধবার বলেছে, বিরোধী দলে থাকা লেবাররা রেকর্ড ভাঙা জয়ের পথে রয়েছে।

বুধবার স্টারমার ও কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, উভয়েই ভোটের আগে শেষ দিনের মতো প্রচারণা চালান। উভয়েই ভোটারদের সতর্ক করে বলেন, বিপক্ষ দল জিতলে অর্থনীতির অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়বে। কিন্তু দলের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফলের পূর্বাভাসের মুখে কনজারভেটিভরা ক্ষতি সীমাবদ্ধ রাখার দিকেই মনোযোগ দিয়েছিল। লেবার সরকারের মোকাবিলায় কার্যকর বিরোধী দল হয়ে উঠতে তাদের পর্যাপ্ত আসন দরকার বলে প্রচারণা চালিয়েছে তারা।

কনজারভেটিভ মন্ত্রী মেল স্ট্রাইড বলেন, ‘আমি পুরোপুরি মেনে নিচ্ছি এই মুহূর্তে জরিপে যা বোঝা যাচ্ছে, তাতে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) লেবারদের বৃহত্তম জয় দেখতে হতে পারে, বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠতা যা এই দেশ এর আগে দেখেনি। স্ট্রাইডের মন্তব্যের বিষয়ে সুনাকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি দ্বিমত না করে আইটিভিকে বলেন, ‘আমি প্রত্যেকটি ভোটের জন্য কঠিন লড়াই করছি।’