ঢাকা ০১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা সংস্কার দাবিতে অনড় জাবি শিক্ষার্থীরা, চলছে আন্দোলন

জাবি প্রতিনিধি

সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধান সম্মত উপায়ে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ‘বাংলা ব্লকড’ এর অংশ হিসেবে ৮ম দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে মিছিলটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সমবেত হয়ে উভয়পাশের সড়ক আটকে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সকাল থেকেই মহাসড়কে জড়ো হয়ে কোটার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এছাড়া প্রতিবাদী কবিতা আবৃত্তি, গান ও পথনাটকের আয়োজন করে শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগে শুনানি শেষে এ রায় দেয় আদালত। তবে আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশের পরেও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলছে শিক্ষার্থীদের সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি।আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, জনগণের পক্ষে রায় আসলে আমরা রাস্তা থেকে সরে যাবার ঘোষণা দিয়েছিলাম। তবে আপিল বিভাগ কোটা পদ্ধতি সংস্কার না করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছে। আমরা চাই, সংবিধান সম্মত উপায়ে অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে রায় দেওয়া হোক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আহবায়ক আরিফ সোহেল বলেন, ২০১৮ সালের পরিপত্রে কিছু আইনের জটিলতা আছে। কিছুদিন পরে আবার কেউ রিট করলে পুনরায় কোটা বহাল হয়ে যাবে। আমরা চাই, পরিপূর্ণ কোটা বাতিল না করে আদিবাসী, কেবল মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রেখে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান। স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আন্দোলন সারাদেশে এক ভয়াবহ রূপ নিবে। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ, রায় পুনর্বিবেচনা করে এমন একটা রায় দিবেন যা বাংলাদেশের সকল নাগরিকের চাওয়া পাওয়ার রায় হয়।

এদিকে সকাল থেকে মহাসড়ক অবরুদ্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন আটকা থাকায় পায়ে হেঁটে গন্তব্য পানে ছুটতে থাকেন যাত্রীরা।

ধামরাই থেকে আসা মোহাম্মদ কাশেম মিয়া (৫৬ বছর) নামের এক যাত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা এভাবে পথ আটকে রাখায় আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। তবে তাদের আন্দোলন তো যৌক্তিক। কোটা থাকলে তো মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে। তাই আমিও চাই কোটা সংস্কার হোক। ভোগান্তির থেকেও এখন কোটা আন্দোলন জরুরি। এজন্য একটু কষ্ট মেনে নিতে হচ্ছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৩:৪৪:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪
২৪ বার পড়া হয়েছে

কোটা সংস্কার দাবিতে অনড় জাবি শিক্ষার্থীরা, চলছে আন্দোলন

আপডেট সময় ০৩:৪৪:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধান সম্মত উপায়ে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ‘বাংলা ব্লকড’ এর অংশ হিসেবে ৮ম দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে মিছিলটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সমবেত হয়ে উভয়পাশের সড়ক আটকে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সকাল থেকেই মহাসড়কে জড়ো হয়ে কোটার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এছাড়া প্রতিবাদী কবিতা আবৃত্তি, গান ও পথনাটকের আয়োজন করে শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগে শুনানি শেষে এ রায় দেয় আদালত। তবে আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশের পরেও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলছে শিক্ষার্থীদের সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি।আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, জনগণের পক্ষে রায় আসলে আমরা রাস্তা থেকে সরে যাবার ঘোষণা দিয়েছিলাম। তবে আপিল বিভাগ কোটা পদ্ধতি সংস্কার না করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছে। আমরা চাই, সংবিধান সম্মত উপায়ে অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে রায় দেওয়া হোক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আহবায়ক আরিফ সোহেল বলেন, ২০১৮ সালের পরিপত্রে কিছু আইনের জটিলতা আছে। কিছুদিন পরে আবার কেউ রিট করলে পুনরায় কোটা বহাল হয়ে যাবে। আমরা চাই, পরিপূর্ণ কোটা বাতিল না করে আদিবাসী, কেবল মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রেখে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান। স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আন্দোলন সারাদেশে এক ভয়াবহ রূপ নিবে। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ, রায় পুনর্বিবেচনা করে এমন একটা রায় দিবেন যা বাংলাদেশের সকল নাগরিকের চাওয়া পাওয়ার রায় হয়।

এদিকে সকাল থেকে মহাসড়ক অবরুদ্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন আটকা থাকায় পায়ে হেঁটে গন্তব্য পানে ছুটতে থাকেন যাত্রীরা।

ধামরাই থেকে আসা মোহাম্মদ কাশেম মিয়া (৫৬ বছর) নামের এক যাত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা এভাবে পথ আটকে রাখায় আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। তবে তাদের আন্দোলন তো যৌক্তিক। কোটা থাকলে তো মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে। তাই আমিও চাই কোটা সংস্কার হোক। ভোগান্তির থেকেও এখন কোটা আন্দোলন জরুরি। এজন্য একটু কষ্ট মেনে নিতে হচ্ছে।