বিশ্বমিডিয়া আজকের কোটা আন্দোলন নিয়ে যা বলছে
কোটা সংস্কারের দাবি ঘিরে শুরু হওয়া আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ বিক্ষোভ পালিত হয়েছে। দেশীয় গণমাধ্যম ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও স্থান পেয়েছে আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন খবর। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা, তুরস্কের টিআরটি ওয়াল্ডসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আজকের বিক্ষোভের খবর প্রকাশিত হয়েছে।
‘বাংলাদেশে ছাত্রদের আন্দোলন অব্যাহত, দেশব্যাপী অসহযোগের ডাক’ শীর্ষক শিরোনাম করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে গত মাসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে নিহত ২০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। তাদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে শনিবার বিরাট বিক্ষোভ পালিত হয়েছে। এ সময় ছাত্রনেতারা দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
আল জাজিরার সংবাদিক তানভীর চৌধুরী জানান, রাজধানীর উপকণ্ঠে গাজীপুর ও কুমিল্লা জেলায় বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলন এখন গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এ আন্দোলনে বিভিন্ন শেণিপেশার সর্বস্তরের মানুষ যোগ দিয়েছে। তারা সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারী নেতাদের গণভবনে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তার দরজা সবসময় খোলা রয়েছে। দেশীয় সংবাদমাধ্যমের করাতে বলা হয়েছে, তিনি বলেন, আমি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে তাদের কথা শুনতে চাই। আমি কোনো সংঘাত চাই না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও নিয়োগ করেছেন। জুলাইয়ের শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা রোববার থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
আন্দোলনের এক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এএফপিকে বলেন, অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে রয়েছে ট্যাক্স এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধ না করা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধর্মঘট এবং ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশি রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করা।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়াল্ডের শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।’ এতে বলা হয়েছে, সরকার বিক্ষোভকারীদের ওপর মারাত্মক পুলিশি দমনপীড়ন চালিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্রনেতারা দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে গত মাসে দেশজুড়ে উত্তাল বিক্ষোভ পালিত হয়। এ সময় ২০০ জনের বেশি নিহত হন।
দেশজুড়ে সেনা মোতায়েনের পর শৃঙ্খলা ফিরলেও মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিপুল সংখ্যক জনতা রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলনকারী নেতারা তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে। তারা রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন শুরু করার জন্য তাদের দেশবাসীদের আহ্বান জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক।’ এ ছাড়া ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল, ডনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আন্দোলনের খবর প্রকাশিত হয়েছে।