পুলিশের গুলিতে নিহত ৮ জনের দাফন সম্পন্ন শোকে স্তব্ধ বানিয়চং
বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হওয়া ৮ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে নিহতদের শোকে স্তব্ধ বানিয়াচং। নিহতদের পরিবারের কান্না থামছেই না।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় বানিয়াচং এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে নিহত ৭ জনের জানাযা সম্পন্ন হয়। জানাযার নামাজে সর্বস্তরের জনসাধারনসহ প্রায় অর্ধলাধিক মুসল্লিরা অংশ গ্রহন করেন। নামাজের পর নিজ নিজ এলাকার কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে। গত সোমবার (৫ আগস্ট) বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই ৫ জন নিহত হন। নিহতরা হলেন- যাত্রাপাশা গ্রামের সানু মিয়ার পুত্র হাসান মিয়া (১২), মাইঝের মহল্লা গ্রামের আঃ নূরের পুত্র আশরাফুল ইসলাম (১৭), পাড়াগাঁও গ্রামের শমশের মিয়ার পুত্র মোজাক্কির মিয়া (৪০), কামালখানী গ্রামের নয়ন মিয়া (১৮), জাতুকর্ণপাড়া গ্রামের আঃ রউফ এর পুত্র তোফাজ্জ্বল মিয়া (১৮), পূর্বঘর গ্রামের ধলাই মিয়ার পুত্র সাদিকুর (৩০)।
সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয় একজনের। অন্যদিকে সংঘর্ষের পর থানা প্রাঙ্গনে উত্তেজিত জনতা বেধড়ক পিটুনি দেয় সুহেল আখঞ্জি নামে এক যুবককে। সে বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৩নং দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়নের সাগরদীঘি পূর্বপাড়ের বাসিন্দা। খোঁজ নিয়ে জানা যায, নিহত সুহেল সাংবাদিক পরিচয়ে ছবি সংগ্রহ করতে বানিয়াচং থানা যায়।
এরই মধ্যে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ ভেবে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আহতাবস্থায় সুহেলকে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার অবস্থার অবনিত হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট প্রেরণ করেন।
পথিমধ্যে হবিগঞ্জের রাস্তায় গাড়িতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে সে। সুহেল হবিগঞ্জ থেকে প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিক লোকালয় বার্তা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিল। এছাড়াও পুলিশের গুলিতে আহত আনাস নামের এক যুবক সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে মারা গেছেন।
আনাস খন্দকার মহল্লার মৃত আবুল হোসেন মিয়ার কনিষ্ঠ ছেলে। গতকাল বাদ এশা জানাযার নামাজের পর তার বাবার কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়। এ নিয়ে বানিয়াচংয়ে পুলিশের গুলিতে মারা যাওয়া নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ জনে।