নবীগঞ্জে লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ॥ বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে লাগামহীন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচী ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করেছে ছাত্র-জনতা।
গতকাল দুপুর ২টায় নবীগঞ্জের সাধারণ ছাত্র-জনতার আয়োজনে শহরের গাজির টেক পয়েন্টে অবস্থান করে পল্লী বিদ্যুৎের লাগামহীন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্য দেন তারা। প্রায় ১ ঘন্টা চলা এ কর্মসূচীতে লোডশেডিংয়ের কারনে সীমাহীন ভূগান্তির কথা তুলে ধরেন বক্তারা। এসময় শহরের ওসমানী রোড, শেরপুর রোড ও হবিগঞ্জ রোডে সহস্রাধিক যানবাহন আটকা পড়ে।
বক্তারা বলেন, পৌর শহরে এক থেকে দেড় ঘন্টা পর নিয়ম করে লোডশেডিং করা হলেও শহরতলী ও গ্রামাঞ্চলগুলোর অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। বেশীরভাগ সময়ই থাকে না বিদ্যুৎ। কোথাও এক থেকে দেড় ঘন্টা পরপর আট থেকে মিনিটের জন্য দেয়া হয় বিদ্যুৎ।
আবার কখনো একটানা ঘন্টার পর ঘন্টা থাকে না বিদ্যুৎ। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন সাধারন মানুষ। আবাসিক এলাকার বাসিন্দাসহ বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল গৃহস্থালী কাজে ব্যাঘাত ঘটায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকেই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি অফিসে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা। এজন্য ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগীরা।
এদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসায়ীদের ফটোস্ট্যাট মেশিন, বাসা-বাড়ির ফ্রিজ, টিভি ও কম্পিউটারসহ বিভিন্ন দামি জিনিসপত্র নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেশী সময় বিদ্যুৎ না থাকলে ইন্টারনেট সেবাও কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে।
বিকাল ৩টার দিকে শহর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের দিকে যাত্রা করেন এবং পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্য প্রদান করা হয়।
প্রায় ২০ মিনিট পর আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে একটি প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানালে ৭-৮ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনা করেন নবীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ। পরে বেলা ৪টার দিকে ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে লোডশেডিং ও বিদ্যুৎের সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য দেন ডিজিএম।
লোডশেডিংয়ের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি। নবীগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য যতটুকু লোড প্রয়োজন এ বিষয়ে আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ উদ্যোগ আমি নিয়েছি।
শাহজীবাজার গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীকে চিঠি দেয়া হয়েছে, আশা করছি অবস্থার উন্নতি হবে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে দৃঢ় ঘোষণা দেয়ার মতো অবস্থান আমার নেই। তবে নবীগঞ্জবাসীকে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সেবা দিতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবো।
এসময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন নবীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই স্বপন চন্দ্র দাশ ও এসআই রাজিব রহমান।