ঢাকা ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমেনি ডিমের দাম, লাফিয়ে বাড়ছে মুরগি, দিশেহারা মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিমের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একই সাথে সোচ্চার রয়েছে ‘বিশেষ টাস্কফোর্স’। কিন্তু তার সুফল দেখা যাচ্ছেনা বাজারে।

এখনো বাজারে কমতে শুরু করেনি ডিমের দাম। তবে ডিমের দামের পাশাপাশি এবার অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে মুরগির দাম। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে বাজারে কিছুটা কমেছে কাঁচামরিচের ঝাল। পাশাপাশি সামান্য কমলেও সবজির দাম এখনো সাধারণ মানুষের স্বস্তির মধ্যে আসেনি।

আজ শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে কারওয়ান বাজার, কাপ্তান বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্র।

বাজারে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ আলোচনায় ছিলো ডিম। বিশেষ করে চলতি সপ্তাহে প্রতি পিস মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সায়। সে হিসেবে এক হালি লাল ডিম কিনতে জনসাধারণকে গুনতে হচ্ছে ৫৫ টাকা। ১১ টাকা ৮৭ পয়সার ডিম কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সায়।

শুধু তাই নয়, এলাকা ভিত্তিক দোকানে প্রতিপিস ডিম কিনতে হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকায়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ ক্রেতারা। এছাড়াও বাজারে দেশি মুরগীর ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা হালি, মুরগীর সাদা ডিম ৫৪ টাকা হালি, সোনালী মুরগীর ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা হালি এবং কোয়েলের ডিম ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নিয়মিত অভিযান চালালেও আমরা কমদামে ডিম কিনতে পারছি না। আমাদের ক্ষতি করে তো আর ডিম বিক্রি সম্ভব না।

এদিকে একই সময় বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা বাড়তে দেখা গেছে। এ মুরগির দাম আগের সপ্তাহেও বেড়েছিল। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ২০৫ থেকে ২১৫ টাকা পর্যন্ত। যা দুই সপ্তাহ আগে ১৮০ টাকার মধ্যে ছিল।

অন্যদিকে অস্বাভাবিকভাবে সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ৫০ টাকা বেড়ে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ২৭০-২৮০ টাকা ছিলো।

মুরগি বিক্রেতা সোহাগ বলেন, হুট করেই সরবরাহ কমিয়ে মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে পাইকাররা। ওরা (পাইকারি বিক্রেতারা) জানিয়েছে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে মুরগির সরবরাহ কম।

অপরদিকে মাসখানেক ধরে উত্তাপ ছড়ানো সবজির বাজার রয়েছে কমতির দিকে। যদিও এখনকার দাম সাধারণ ক্রেতাদের জন্য মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। বাজারে কমদামের সবজির মধ্যে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এরপর রয়েছে পটল, যার দাম কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। এছাড়া ঢ্যাঁড়শ ৮০-৯০, বরবটি ১০০-১২০, গোল বেগুন ১৩০-১৪০, লম্বা বেগুন ১০০-১২০, টমেটো ১৮০-১৯০, ধুন্দল, ঝিঙ্গে ও চিচিঙ্গা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহজুড়ে তেজ ছড়ানো কাঁচামরিচের বাজারও নামতে শুরু করেছে। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। যদিও এখনো কিছু কিছু খুচরা দোকানি এখনো প্রতি একপোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচামরিচের দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা হাঁকছেন। তারা ১০০ গ্রাম বিক্রি করছেন ৪০ টাকায়।

অপরদিকে চলতি সপ্তাহে তেল ও চিনিতে শুল্কছাড় দিয়েছে নতুন সরকার। কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, শুল্ক কমানোর খবরে পাইকাররা তেল ও চিনির দরে কিছুটা ছাড় দিচ্ছে। তবে ভোক্তারা শুল্কছাড়ের সুফল পেতে কিছু দিন সময় লাগবে। চিনির দর নতুন করে বাড়েনি। বরং এক সপ্তাহে পাইকারিতে বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০-২০০ টাকার মতো কমেছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে এসব পণ্যের খুচরা দাম কমে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:৪৬:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
১৯ বার পড়া হয়েছে

কমেনি ডিমের দাম, লাফিয়ে বাড়ছে মুরগি, দিশেহারা মানুষ

আপডেট সময় ০৭:৪৬:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

ডিমের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একই সাথে সোচ্চার রয়েছে ‘বিশেষ টাস্কফোর্স’। কিন্তু তার সুফল দেখা যাচ্ছেনা বাজারে।

এখনো বাজারে কমতে শুরু করেনি ডিমের দাম। তবে ডিমের দামের পাশাপাশি এবার অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে মুরগির দাম। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে বাজারে কিছুটা কমেছে কাঁচামরিচের ঝাল। পাশাপাশি সামান্য কমলেও সবজির দাম এখনো সাধারণ মানুষের স্বস্তির মধ্যে আসেনি।

আজ শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে কারওয়ান বাজার, কাপ্তান বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্র।

বাজারে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ আলোচনায় ছিলো ডিম। বিশেষ করে চলতি সপ্তাহে প্রতি পিস মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সায়। সে হিসেবে এক হালি লাল ডিম কিনতে জনসাধারণকে গুনতে হচ্ছে ৫৫ টাকা। ১১ টাকা ৮৭ পয়সার ডিম কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সায়।

শুধু তাই নয়, এলাকা ভিত্তিক দোকানে প্রতিপিস ডিম কিনতে হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকায়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ ক্রেতারা। এছাড়াও বাজারে দেশি মুরগীর ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা হালি, মুরগীর সাদা ডিম ৫৪ টাকা হালি, সোনালী মুরগীর ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা হালি এবং কোয়েলের ডিম ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নিয়মিত অভিযান চালালেও আমরা কমদামে ডিম কিনতে পারছি না। আমাদের ক্ষতি করে তো আর ডিম বিক্রি সম্ভব না।

এদিকে একই সময় বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা বাড়তে দেখা গেছে। এ মুরগির দাম আগের সপ্তাহেও বেড়েছিল। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ২০৫ থেকে ২১৫ টাকা পর্যন্ত। যা দুই সপ্তাহ আগে ১৮০ টাকার মধ্যে ছিল।

অন্যদিকে অস্বাভাবিকভাবে সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ৫০ টাকা বেড়ে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ২৭০-২৮০ টাকা ছিলো।

মুরগি বিক্রেতা সোহাগ বলেন, হুট করেই সরবরাহ কমিয়ে মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে পাইকাররা। ওরা (পাইকারি বিক্রেতারা) জানিয়েছে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে মুরগির সরবরাহ কম।

অপরদিকে মাসখানেক ধরে উত্তাপ ছড়ানো সবজির বাজার রয়েছে কমতির দিকে। যদিও এখনকার দাম সাধারণ ক্রেতাদের জন্য মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। বাজারে কমদামের সবজির মধ্যে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এরপর রয়েছে পটল, যার দাম কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। এছাড়া ঢ্যাঁড়শ ৮০-৯০, বরবটি ১০০-১২০, গোল বেগুন ১৩০-১৪০, লম্বা বেগুন ১০০-১২০, টমেটো ১৮০-১৯০, ধুন্দল, ঝিঙ্গে ও চিচিঙ্গা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহজুড়ে তেজ ছড়ানো কাঁচামরিচের বাজারও নামতে শুরু করেছে। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। যদিও এখনো কিছু কিছু খুচরা দোকানি এখনো প্রতি একপোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচামরিচের দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা হাঁকছেন। তারা ১০০ গ্রাম বিক্রি করছেন ৪০ টাকায়।

অপরদিকে চলতি সপ্তাহে তেল ও চিনিতে শুল্কছাড় দিয়েছে নতুন সরকার। কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, শুল্ক কমানোর খবরে পাইকাররা তেল ও চিনির দরে কিছুটা ছাড় দিচ্ছে। তবে ভোক্তারা শুল্কছাড়ের সুফল পেতে কিছু দিন সময় লাগবে। চিনির দর নতুন করে বাড়েনি। বরং এক সপ্তাহে পাইকারিতে বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০-২০০ টাকার মতো কমেছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে এসব পণ্যের খুচরা দাম কমে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।