ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

নবীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাকে কানধরে উঠবস করিয়ে পুলিশে দিলো যুবদল-ছাত্রদল,হত্যা মামলায় আটক

সলিল বরণ দাশ, নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রিজভী আহমেদ খালেদ (৫০) ও আওয়ামী লীগ নেতা গৌরমনি সরকার (৫৫) কে আটক করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে পুলিশে দিলো ছাত্রদল-যুবদল নেতা কর্মীরা।এই ঘটনায় ০২ আওয়ামীলীগ নেতাকে হত্যা মামলায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আওয়ামী লীগপন্থী বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

গতকাল রবিবার ১০ অক্টোবর দুপুরে ও সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের আটকের ঘটনা ঘটে।

আটককৃত শাহ রিজভী আহমেদ খালেদ উপজেলা কুর্শি ইউনিয়নের মুছন আলীর পুত্র ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও অপর আটককৃত গৌরমনি সরকার নবীগঞ্জ পৌরসভার জয়নগর এলাকার ধরনি সরকারের ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা।

স্থানীয়রা সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার নূর হোসেন চত্বরে আওয়ামী লীগের অবস্থান কর্মসূচির ডাকে সারাদেশে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার ডাক দিয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার মোড়ে রবিবার সকাল থেকে আলাদা আলাদা বলয়ের বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়।

নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়কে পৃথক পৃথকভাবে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে নানা শ্লোগানে মিছিল ও শো-ডাউন দেয়া হয়। রবিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা গৌরমনি সরকার নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার এলাকায় আসলে নবীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোশাহিদ আলম মুরাদের নেতৃত্বে কতিপয় যুবদল-ছাত্রদলের উচ্ছৃঙ্খল একটি অংশ গৌরমনিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং কানধরে উঠবস করে। পরে গৌরমনি সরকারকে হেনস্তা করে নবীগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নবীগঞ্জ শহরের গোল্ডেন প্লাজা মার্কেটের আয়েশা ভেরাইটিজ স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী শাহ রিজভী আহমেদ খালেদকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে আটক করা হয়। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে যুবদল-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

দুই নেতাকে আটকের পর হবিগঞ্জের রিপন শীল হত্যাকান্ডের সঙ্গে খালেদ ও গৌরমনির সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবী করে যুবদল-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

আটককৃত আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিবারের দাবী- খালেদ নবীগঞ্জ শহরের গোল্ডেন প্লাজা আয়েশা ভেরাইটিজ স্টোর নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় তাকে আটক করা হয় এবং গৌরমনি সরকারকে নবীগঞ্জ বাজারে সবজি কিনতে আসলে তাকে আটক করা হয়। অপরদিকে যুবদল-ছাত্রদলের দাবী- পলাতক শেখ হাসিনার নির্দেশে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার চেষ্টাকালে সাধারণ জনগণ ও ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
১১ই অক্টোবর ০২ আওয়ামীলীগ নেতাকে হবিগঞ্জ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত রিপন শীল হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে তুললে বিঞ্জ আদালত তাদেরকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়।

এদিকে এঘটনার পর থেকে আওয়ামী লীগ পন্থি নবীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এছাড়া অনেক আওয়ামী লীগপন্থী ব্যবসায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী রেখে পালিয়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে সুশীল সমাজের দাবী- বিগত সময়ে নবীগঞ্জ উপজেলায় সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে কোনো ধরণের সহিংসতার ঘটনার ঘটেনি।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন- আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে বিএনপি-যুবদলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আটক করে আমাদের কাছে সোপর্দ করে। আমরা প্রাথমিকভাবে তাদেরকে আটক করেছি।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তাই তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:০১:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪
৫ বার পড়া হয়েছে

নবীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাকে কানধরে উঠবস করিয়ে পুলিশে দিলো যুবদল-ছাত্রদল,হত্যা মামলায় আটক

আপডেট সময় ০৮:০১:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রিজভী আহমেদ খালেদ (৫০) ও আওয়ামী লীগ নেতা গৌরমনি সরকার (৫৫) কে আটক করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে পুলিশে দিলো ছাত্রদল-যুবদল নেতা কর্মীরা।এই ঘটনায় ০২ আওয়ামীলীগ নেতাকে হত্যা মামলায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আওয়ামী লীগপন্থী বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

গতকাল রবিবার ১০ অক্টোবর দুপুরে ও সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের আটকের ঘটনা ঘটে।

আটককৃত শাহ রিজভী আহমেদ খালেদ উপজেলা কুর্শি ইউনিয়নের মুছন আলীর পুত্র ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও অপর আটককৃত গৌরমনি সরকার নবীগঞ্জ পৌরসভার জয়নগর এলাকার ধরনি সরকারের ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা।

স্থানীয়রা সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার নূর হোসেন চত্বরে আওয়ামী লীগের অবস্থান কর্মসূচির ডাকে সারাদেশে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার ডাক দিয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার মোড়ে রবিবার সকাল থেকে আলাদা আলাদা বলয়ের বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়।

নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়কে পৃথক পৃথকভাবে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে নানা শ্লোগানে মিছিল ও শো-ডাউন দেয়া হয়। রবিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা গৌরমনি সরকার নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার এলাকায় আসলে নবীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোশাহিদ আলম মুরাদের নেতৃত্বে কতিপয় যুবদল-ছাত্রদলের উচ্ছৃঙ্খল একটি অংশ গৌরমনিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং কানধরে উঠবস করে। পরে গৌরমনি সরকারকে হেনস্তা করে নবীগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নবীগঞ্জ শহরের গোল্ডেন প্লাজা মার্কেটের আয়েশা ভেরাইটিজ স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী শাহ রিজভী আহমেদ খালেদকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে আটক করা হয়। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে যুবদল-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

দুই নেতাকে আটকের পর হবিগঞ্জের রিপন শীল হত্যাকান্ডের সঙ্গে খালেদ ও গৌরমনির সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবী করে যুবদল-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

আটককৃত আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিবারের দাবী- খালেদ নবীগঞ্জ শহরের গোল্ডেন প্লাজা আয়েশা ভেরাইটিজ স্টোর নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় তাকে আটক করা হয় এবং গৌরমনি সরকারকে নবীগঞ্জ বাজারে সবজি কিনতে আসলে তাকে আটক করা হয়। অপরদিকে যুবদল-ছাত্রদলের দাবী- পলাতক শেখ হাসিনার নির্দেশে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার চেষ্টাকালে সাধারণ জনগণ ও ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
১১ই অক্টোবর ০২ আওয়ামীলীগ নেতাকে হবিগঞ্জ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত রিপন শীল হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে তুললে বিঞ্জ আদালত তাদেরকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়।

এদিকে এঘটনার পর থেকে আওয়ামী লীগ পন্থি নবীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এছাড়া অনেক আওয়ামী লীগপন্থী ব্যবসায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী রেখে পালিয়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে সুশীল সমাজের দাবী- বিগত সময়ে নবীগঞ্জ উপজেলায় সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে কোনো ধরণের সহিংসতার ঘটনার ঘটেনি।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন- আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে বিএনপি-যুবদলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আটক করে আমাদের কাছে সোপর্দ করে। আমরা প্রাথমিকভাবে তাদেরকে আটক করেছি।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তাই তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।