হবিগঞ্জের সাবেক তিন এমপিসহ ৩১ জনের নামে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
হবিগঞ্জের সাবেক তিন এমপি, তিন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, দুই মেয়র ও সাবেক পুলিশ সুপারসহ ৩১ জনের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরো একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
জেলা সদরে রাজনগর এলাকার ফজল মোহাম্মদের ছেলে ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সালেহ আহমেদ সোমবার ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বরাবর এ অভিযোগ দায়ের করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে একজন নিহত ও শতাধিক লোককে আহত করেন।
হামলার নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আবু জাহির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ খান ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের যথাযথ তদন্তপূর্বক বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর আবেদন জানান বাদী।
আরো অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন- হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর চৌধুরী, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, মুশফিউল আলম আজাদ ও মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান ও আতাউর রহমান সেলিম, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, হবিগঞ্জের সাবেক পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন, সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান, সদর মডেল থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মুসলেহ উদ্দীন, সাবেক এমপি আবু জাহিরের সরকারি দেহরক্ষী (পুলিশ কনস্টেবল) মাহবুব আহমেদ, ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) সুদীপ দাস, হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় চানপুর গ্রামের আব্দুল মালেক, গোপায়া আনন্দপুরের মো. আকবর আলী, তার ভাই আলী হোসেন ওরফে আহাম্মদ আলী, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আলাউর রহমান সাহেদ, সদর উপজেলায় বালিহাটা গ্রামের আবদুল হাই, উমেদনগর এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা অমিয় রায়, জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি শিমুল পাল, যশের আব্দার মাখন পাল, বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন চন্দ্র গোপ, উমেদনগরের আলোচিত যুবলীগ নেতা সবুজ মিয়া, জেলা তথ্য প্রযুক্তি লীগ সভাপতি আবুল কাশেম, বাবুল রাউত ওরফে পাট্টা বাবুলের ছেলে কৃষ্ণ রাউত, তেঘরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. সেবুল মিয়া, মো. সফর আলী, মাধবপুর উপজেলায় আলাকপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম, একই উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের কাজী পলাশ ও হবিগঞ্জ শহরে রাজনগরের আওয়ামী লীগ নেতা সাকী শাহ।
বুধবার সকালে অভিযোগকারী সালেহ আহমেদ জানান, মো. আবু জাহির ও মো. আব্দুল মজিদ খান ১ জুন এবং ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ৪ আগস্ট উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়েছেন। এতে তিনি নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়ে সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা নেন। প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২ ও ৪ আগস্ট হবিগঞ্জ জেলা শহরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মোস্তাক আহমেদ ও রিপন শীল নামে দু’জনের মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে আলাদা আলাদা মামলা দায়ের হয়েছে।