ভূয়া জামিন নামা দিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেল মাদক মামলার ৪ আসামি
ভুয়া জামিন নামা দিয়ে হবিগঞ্জ কারাগার থেকে বের হয়ে গেলো মাদক মামলার ৪ জন আসামি। এ নিয়ে হবিগঞ্জের আদালতপাড়াসহ সর্বত্র তোলপাড় চলছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে জিআরও এর সহযোগী একজনকে আটক করা হয়েছে। সে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত আরো ৩ জন শনাক্ত হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে বিষয়টি যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
বের হয়ে যাওয়া মাদক ব্যবসায়ীরা হল, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার শিমুলগঞ্জ গ্রামের আব্দুল কদ্দুছ মিয়ার পুত্র রুয়েল মিয়া, একই উপজেলার কিরণ মিয়ার পুত্র আলী হোসেন, জগন্নাথপুর উপজেলার পাগলা গ্রামের সজলু মিয়ার পুত্র আজাদ মিয়া ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার কিরগাও গ্রামের লেবু মিয়ার পুত্র সুয়েব মিয়া।
জানা যায়- গত ৬ জানুয়ারি মাধবপুর থানার মামলা নং-১০, তাং-০৬/০১/২০২৫ইং জিআর ১০/২৫। এ মামলায় উল্লেখিত ৪ জনকে মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া থেকে প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১২-৬৬১৮) গ্রেফতার করা হয়। তখন তাদের কাছ থেকে ৩৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এরপর তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
মাদক কারবারিদের আইনজীবি এডভোকেট ফয়সল আদালতে বেশ কয়েকবার তাদের জামিন আবেদন প্রার্থনা করেন। কিন্ত আদালত তাদেরকে জামিন দেননি। সবশেষ তিনি বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গত ২৬ জানুয়ারিও তাদের জামিন আবদেন করলে সেখানে না মঞ্জুর হয়। এদিকে হঠাৎ করে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) আসামিরা জামিনে বের হয়ে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল (৩০ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার এডভোকেট ফয়সল আদালতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি নিশ্চিত হন তার আসামিরা ভূয়া জামিন নামা তৈরী করে জিআরও অফিসের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেছে। পরে সেখান থেকে তারা ছাড়া পেয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এডভোকেট ফয়সল জানান, উল্লেখিতদের ম্যাজিস্ট্রেট ও জজ কোর্টে জামিন চেয়ে পাইনি। পরবর্তীতে আমি হাইকোর্টে কাগজপত্র পাঠাতে চাইলে তার স্বজনরা জানায় হাইকোর্টে কাগজপত্র পাঠানোর কোন প্রয়োজন নেই। আমাদের লোকজন জামিন নিয়ে বের হয়ে গেছে। এ বিষয়টি জানার পর আমি হতভম্ব হয়ে পরি। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে দেখি ভুয়া জামিন নামা তৈরী করে জিআরও অফিসের মাধ্যমে তা কারাগারে পাঠায়। পরে তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়।
জানতে চাইলে হবিগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর (ওসি) নাজমুল হোসেন বলেন- বিষয়টি জানার পর থেকেই আমরা খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। কে জামিন নামা দিল আবার কিভাবে সেটা কারাগারে গেল তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন- পুরো বিষয়টি জানার পর আপনাদের জানাতে পারব। তাছাড়া ঘটনার সাথে কারা জড়িত আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১ জনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে, সিসি টিভির ফুটেজসহ নানা বিষয় পর্যালোচনা করে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। দ্রæত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোঃ মুজিবুর রহমান বলেন- প্রতিদিনকার নিয়মেই আদালত থেকে আমাদের কাছে জামিন নামা আসে। সেই অনুযায়ী বন্দিরা ছাড়া পায়। তবে সেটি ভুয়া জামিন নামা ছিল এবিষয়টি আমাদের জানা নেই।