ঢাকা ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নবীগঞ্জে কমছে বন্যার পানি দূর্ভোগ কমেনি বানভাসিদের

নবীগঞ্জ( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:

নবীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও এখনো দুর্ভোগ কমেনি বন্যা কবলিত মানুষের। গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে রয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারাও। পাশাপাশি স্যানিটেশন ও খাদ্য সংকটে ভুগছেন প্রতিনিয়ত। যদিও বন্যাদূর্গতদের পাশে রয়েছে জেলা প্রশাসন। এখন পর্যন্ত বন্যাদূর্গতদের মধ্যে ৩১ মেট্টিক টন চাল ও ৩১০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবায় ৯টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। যদিও উপজেলার আঞ্চলিক সড়ক গুলো শুকিয়ে গেছে। যে কারণে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে গ্রামের রাস্তা ও বাসা-বাড়িতে বন্যা পানি বিরাজ করছে। এতে দূর্ভোগ কাটেনি বানভাসিদের।
এদিকে, বন্যায় উপজেলায় ৪০ হেক্টর শাক সবজি ও ২৫ হেক্টর আউশ ধানের জমির ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও বৃষ্টির পানিতে উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। দীঘলবাক ইউনিয়নের দক্ষিণ কসবা গ্রামের পাকা সড়ক ভেঙে দ্রæত গতিতে বিভিন্ন গ্রামে পানি প্রবেশ করে। এতে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের রাজনগর, উমরপুর, মোস্তফাপুর, দণিগ্রাম, পাঠানহাটি, মনসুরপুর, দরবেশপুর, দিঘীরপাড়, নোয়াগাঁও, চন্ডিপুর, প্রজাতপুর, লামলীপাড়, দীঘলবাক ইউনিয়নের রাধাপুর, ফাদুল্লাহ, দুর্গাপুর, মথুরাপুর, হোসেনপুর, মাধবপুর, পশ্চিম মাধবপুর, গালিমপুর, আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহাড়পুর, পারকুল, উমরপুর, দীঘর ব্রাহ্মণগ্রাম, বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নের সোনাপুর, চরগাঁও, বড় ভাকৈর (পূর্ব), করগাঁও, কালিয়াভাঙ্গা, দেবপাড়া ও কুর্শি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ১০টি পাকা সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় । এতে বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। কুশিয়ারা নদী ঘেঁষা ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে যায়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় মৎস্য খামারীদের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করলে ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রস্তুত করে প্রশাসন। এতে ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২৯৭টি পরিবার আশ্রয় নেয়। বর্তমানে কমতে শুরু করেছে কুশিয়ারা নদীর পানি। এ নদীর অন্তর্গত উপজেলার শেরপুর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলী পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা কবলিত বাড়িঘর থেকে পুরোপুরি পানি না কমলেও ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বন্যার্ত মানুুষের দুর্ভোগ থেমে নেই। পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্য সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে বন্যার্ত মানুষের। তবে বাড়িঘরের পানি পুরোপুরি নামতে আরো ৪/৫ দিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) অফিস জানায়, বন্যাদূর্গতদের পাশে থেকে কাজ করছেন তারা। এ পর্যন্ত বন্যায় কবলিত এলাকায় ৩১ মেট্টিকটন চাল ও ৩১০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২৯৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছিলেন। বর্তমানে অনেকেই বাড়িতে ফিরছেন। ২৫০টি পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, দ্রæত কমতে শুরু করেছে কুশিয়ার নদীর পানি। যে কারণে নবীগঞ্জ উপজেলার অনেক এলাকা শুকিয়ে গেছে। বর্তমানে নদীর শেরপুর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৬:২৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪
৪৩ বার পড়া হয়েছে

নবীগঞ্জে কমছে বন্যার পানি দূর্ভোগ কমেনি বানভাসিদের

আপডেট সময় ০৬:২৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

নবীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও এখনো দুর্ভোগ কমেনি বন্যা কবলিত মানুষের। গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে রয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারাও। পাশাপাশি স্যানিটেশন ও খাদ্য সংকটে ভুগছেন প্রতিনিয়ত। যদিও বন্যাদূর্গতদের পাশে রয়েছে জেলা প্রশাসন। এখন পর্যন্ত বন্যাদূর্গতদের মধ্যে ৩১ মেট্টিক টন চাল ও ৩১০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবায় ৯টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। যদিও উপজেলার আঞ্চলিক সড়ক গুলো শুকিয়ে গেছে। যে কারণে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে গ্রামের রাস্তা ও বাসা-বাড়িতে বন্যা পানি বিরাজ করছে। এতে দূর্ভোগ কাটেনি বানভাসিদের।
এদিকে, বন্যায় উপজেলায় ৪০ হেক্টর শাক সবজি ও ২৫ হেক্টর আউশ ধানের জমির ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও বৃষ্টির পানিতে উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। দীঘলবাক ইউনিয়নের দক্ষিণ কসবা গ্রামের পাকা সড়ক ভেঙে দ্রæত গতিতে বিভিন্ন গ্রামে পানি প্রবেশ করে। এতে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের রাজনগর, উমরপুর, মোস্তফাপুর, দণিগ্রাম, পাঠানহাটি, মনসুরপুর, দরবেশপুর, দিঘীরপাড়, নোয়াগাঁও, চন্ডিপুর, প্রজাতপুর, লামলীপাড়, দীঘলবাক ইউনিয়নের রাধাপুর, ফাদুল্লাহ, দুর্গাপুর, মথুরাপুর, হোসেনপুর, মাধবপুর, পশ্চিম মাধবপুর, গালিমপুর, আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহাড়পুর, পারকুল, উমরপুর, দীঘর ব্রাহ্মণগ্রাম, বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নের সোনাপুর, চরগাঁও, বড় ভাকৈর (পূর্ব), করগাঁও, কালিয়াভাঙ্গা, দেবপাড়া ও কুর্শি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ১০টি পাকা সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় । এতে বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। কুশিয়ারা নদী ঘেঁষা ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে যায়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় মৎস্য খামারীদের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করলে ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রস্তুত করে প্রশাসন। এতে ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২৯৭টি পরিবার আশ্রয় নেয়। বর্তমানে কমতে শুরু করেছে কুশিয়ারা নদীর পানি। এ নদীর অন্তর্গত উপজেলার শেরপুর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলী পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা কবলিত বাড়িঘর থেকে পুরোপুরি পানি না কমলেও ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বন্যার্ত মানুুষের দুর্ভোগ থেমে নেই। পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্য সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে বন্যার্ত মানুষের। তবে বাড়িঘরের পানি পুরোপুরি নামতে আরো ৪/৫ দিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) অফিস জানায়, বন্যাদূর্গতদের পাশে থেকে কাজ করছেন তারা। এ পর্যন্ত বন্যায় কবলিত এলাকায় ৩১ মেট্টিকটন চাল ও ৩১০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২৯৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছিলেন। বর্তমানে অনেকেই বাড়িতে ফিরছেন। ২৫০টি পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, দ্রæত কমতে শুরু করেছে কুশিয়ার নদীর পানি। যে কারণে নবীগঞ্জ উপজেলার অনেক এলাকা শুকিয়ে গেছে। বর্তমানে নদীর শেরপুর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।