নাফিসা হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল মৌলভীবাজার, আদালত ঘেরাও
আমার বোন হত্যার বিচার চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই” এমন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে মৌলভীবাজার শহর। স্কুলছাত্রী নাফিসা জান্নাত আনজুম হত্যার বিচারের দাবিতে গণবিক্ষোভে অংশ নেয় কয়েক হাজার মানুষ।
সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে সকালে চাঁদনীঘাট থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ জনতা আদালত অবরোধ করে। পরে পুলিশি অনুরোধে তারা প্রেসক্লাব মোড়ে গিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যায়।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করে নাফিসার পরিবার, সহপাঠি, এলাকার যুবসমাজসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। এতে বক্তব্য রাখেন নাফিসার পিতা আব্দুল খালিক, বড় ভাই আফিফ ইসলাম রাদিনসহ শিক্ষক, সাংবাদিক, ছাত্রনেতা, রাজনীতিক, ইউপি সদস্য, এবং সমাজকর্মীরা।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে দলে দলে মানুষ এসে মিছিল ও ব্যানার নিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দেন। হাতে ছিলো পোস্টার “ধর্ষকের ফাঁসি চাই”, “নাফিসার রক্ত বৃথা যাবে না”, “আইনের শাসন নিশ্চিত করো”। তাদের চোখেমুখে ছিলো ক্ষোভ, কান্না, প্রতিবাদ আর ন্যায়বিচারের দাবির এক অদম্য আবেগ।
বক্তারা বলেন, “নাফিসা কেবল একজন মেয়ে নয়, সে হাজারো মা-বোনের প্রতীক। এ হত্যাকাণ্ড আমাদের বিচারহীনতার কালো চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। এই বিচার যদি দ্রুত এবং দৃষ্টান্তমূলকভাবে না হয়, তাহলে মানুষ আর আইনের আশ্রয়ে ভরসা পাবে না। তারা হত্যাকারী জুনেলের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতের দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ড যেন আর কোনো ঘরে না ঘটে। আমরা বিচার চাই, দ্রুত বিচার চাই। যেন ভবিষ্যতে কেউ আর এমন ঘৃণ্য অপরাধ করার সাহস না পায়।
নাফিসা জান্নাত আনজুম ছিলেন কুলাউড়া উপজেলার শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্রী। পরিবার, সহপাঠী, এলাকাবাসী সবাই তাকে একনিষ্ঠ, ভদ্র, ও অত্যন্ত প্রতিভাবান হিসেবে জানত। গত ১২ জুন, বাড়ির জুনেল তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ব্যর্থ হয়ে সে নির্মমভাবে হত্যা করে নাফিসাকে। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিলেও আদালতে সে অস্বীকার করে এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা।