নবীগঞ্জে সিএনজি স্টেশনে আগুনে ১২টি বাহন পুড়ে ছাই, আহত ৫
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নে অবস্থিত একটি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে নয়টি সিএনজি অটোরিকশা, একটি যাত্রীবাহী বাস ও দুটি মোটরসাইকেল সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায়। তবে সৌভাগ্যবশত স্টেশনের মূল গ্যাস মজুদ অক্ষত থাকায় আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সময় স্টেশনে কয়েকটি সিএনজি ও একটি যাত্রীবাহী বাস গ্যাস ভরা হচ্ছিল। হঠাৎ করেই বাসের গ্যাস সিলিন্ডারে বিকট শব্দ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, কয়েক মিনিটের মধ্যে একের পর এক গাড়ি জ্বলতে শুরু করে। আশপাশের লোকজন জীবন বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে।
খবর পেয়ে নবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। একই সঙ্গে ওসমানীনগর ও বাহুবল ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইউনিট এসে যোগ দেয়। টানা দেড় ঘণ্টার চেষ্টার পর তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানায়, আগুন মূল গ্যাস মজুদের ট্যাংকে ছড়িয়ে পড়লে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটতে পারত, এতে আশপাশের গ্রাম ও পুরো মহাসড়ক বড় বিপদের মুখে পড়ত। তবে তারা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো গেছে।
এ ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সিএনজি স্টেশনের দুই কর্মচারী নাঈম ও রাসেলের নাম জানা গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরসহ আরও তিনজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের হবিগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথে তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বাসের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ তদন্ত শেষে জানানো হবে।
এ ঘটনার পর আশপাশের রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেশিরভাগ সিএনজি ফিলিং স্টেশনে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। দুর্ঘটনা ঘটলেও তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের মতো প্রস্তুতি থাকে না। তারা দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্যস্ত অংশে এ দুর্ঘটনার কারণে কিছু সময় যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।