হবিগঞ্জে রেকর্ডসংখ্যক ৬৬১ মণ্ডপে দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি
বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা এবার হবিগঞ্জ জেলায় ৬৬১টি মণ্ডপে উদযাপিত হতে যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার পূজামণ্ডপের সংখ্যা ১৮টি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা জেলার উৎসবের আমেজকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী তিথিতে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে ৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই শারদীয় দুর্গোৎসব।
পূজাকে ঘিরে জেলার প্রতিটি প্রান্তে পূজারি ও ভক্তদের মাঝে এখন উৎসবের এক ভিন্ন আমেজ বিরাজ করছে।
জেলাজুড়ে ৬৬১টি মণ্ডপের মধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪১টি, হবিগঞ্জ পৌরসভায় ৩৬টি, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ও পৌরসভায় ১৯টি, আজমিরীগঞ্জে ৩৫টি, মাধবপুরে ১১৫টি, চুনারুঘাটে ৮৫টি, নবীগঞ্জে ৯৩টি, লাখাই উপজেলায় ৬৬টি, বাহুবলে ৫২টি এবং বানিয়াচং উপজেলায় সর্বোচ্চ ১১৯টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের দুর্গোৎসব যেন ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়, সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন সর্বস্তরের মানুষ। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার গঙ্গানগর গ্রামের পূজারি সমীরণ চক্রবর্তী শংকু বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী আন্তরিকভাবে কাজ করছে। সবার সহযোগিতায় এবারের পূজা শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করি।
চুনারুঘাট উপজেলার জাজিউতা গ্রামের বাসিন্দা সুমন রায় মন্তব্য করেন, দুর্গাপূজা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি শুভ শক্তির জয়গাথা। ধর্ম, শিল্প, সংস্কৃতি ও সামাজিক ঐতিহ্যের এক অপূর্ব মিলন ঘটে এই উৎসবে। পূজার সফলতা নির্ভর করে সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণের ওপর।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট নলিনী কান্ত রায় নিরু জানান, প্রতিটি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। শিল্পীরা দিন-রাত পরিশ্রম করে তাদের নিপুণ হাতে প্রতিমাগুলোকে জীবন্ত করে তুলছেন। মণ্ডপ সাজসজ্জার কাজ শেষ হলেই পূজার উৎসবমুখর পরিবেশ পরিপূর্ণ রূপ পাবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। আমরা আশাবাদী, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এবারের পূজা সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান জানিয়েছেন, তিনি জেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও মন্দির পরিদর্শন করেছেন। মন্দির কমিটি ও পূজা উদযাপন পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, পূজাকে নির্বিঘ্ন করতে জেলায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সব ধর্মাবলম্বীর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই আমাদের মূল লক্ষ্য।