আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোটা সংস্কার আন্দোলনের খবর
চলতি মাসের শুরু থেকেই বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ১লা জুলাই থেকে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাজের’ ব্যানারে প্রথম আন্দোলনের ডাক দেয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এর তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে প্রতিটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কারের আন্দোলন শুরু করেন। পরে ধীরে ধীরে আন্দোলনে উচ্চ মাধ্যমকি স্তরের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে শুরু থেকেই কোটাবিরোধী আন্দোলনের খবর গুরুত্বের সাথে প্রকাশ হতে থাকে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ এবং ছাত্রলীগের হামলার খবরও গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করা হয়েছে।
১৮ জুলাইয়ের আন্দোলন নিয়ে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আনাদোলুর খবর বলছে, দেশজুড়ে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করেছে সরকার। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ৭ হাজারের বেশি অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। শেষ দিন যাবৎ আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের চড়াও হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেছে আনাদোলু।
অনলাইন আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ।
গণমাধ্যমটি তার খবরে আরও বলছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের বংশধরদের জন্য প্রায় এক-তৃতীয়ায় কোটা সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত ১লা জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা অপসারণের দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলনে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ৫৬ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে।
এরপর কয়েকদিন আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে পড়ে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা। এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চড়াও হয়েছে ছাত্রলীগ এবং পুলিশ। আল জাজিরার এক বিশ্লেষক বলেছেন, এই বিক্ষোভ শুধুমাত্র আন্দোলনের আকার প্রকাশ করছে না বরং তাদের সতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের বিষয়টিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, আপনারা দেখুন বাংলাদেশে কারা বিক্ষোভে নেমেছেন। অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছেন বর্তমানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ে আন্দোলনে নেমেছেন যাদের দমনের চেষ্টা চলছে।
মালয়শিয়ার গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম মালয়মেইলের খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বিক্ষোভ চালিয়ে শপথ নিয়েছেন তারা। ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি আদালতকে রায়ে শিক্ষার্থীরা ন্যায়বিচার পাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে মালয়মেইল বলছে শিক্ষার্থীরা এই প্রতিশ্রুতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরপরই শিক্ষার্থীরা ১৮ জুলাই সারাদেশে শাটডাউন কর্মসূচি দেন। তার প্রেক্ষিতে আজ সারা দেশে আন্দোলনে নেমেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
















