ঢাকা ০৮:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ Logo হবিগঞ্জ-১: রেজা কিবরিয়ার যোগদানে বিএনপিতে এখন ত্রিমুখী লড়াই Logo হবিগঞ্জের নতুন ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন Logo ড. ফরিদুর রহমান বদলি, নতুন ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন Logo মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করে খুন : অভিযুক্ত আটক Logo ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: শায়েস্তাগঞ্জে তরুণী গ্রেপ্তার Logo ৭ই নভেম্বর ও একজন দেশ প্রেমিক জিয়াউর রহমান Logo হবিগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন নিয়ে তোড়জোর, বিএনপিতে যোগ দিলেন ড. রেজা কিবরিয়া, বদলে যাচ্ছে সমীকরণ! Logo হবিগঞ্জে ৮টির মধ্যে ৪ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ, বেড়েছে লোডশেডিং Logo হবিগঞ্জে চুনারুঘাট শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার

কুমিল্লার ঘটনায় বিচারে দাবিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে লাঞ্ছিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু নিরাপত্তাহীনতার কারণে এলাকা ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন। গতকাল বিকেলেই তিনি কুমিল্লা থেকে ফেনীতে চলে যান। ভিডিও ভাইরাল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনিয়ে সমালোচনা ঝড় চলছে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সোমবার সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিকেকুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এর আগে আজ সোমবার দুপুরে ১ টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সংসদ চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হেনস্তাকারীদের ১২ ঘন্টায় গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। নয়তো মুক্তিযোদ্ধারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে সারা বাংলাদেশ অচল করে দিবে বলে ঘোষণা দেন।

হেনস্তার শিকার হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেন, তিনি এখন ফেনীতে তার ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছেন। মারধর করায় সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ও প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে চৌদ্দগ্রামে বাড়িতে ফিরে আসবেন বলেও জানান তিনি।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আব্দুল হাই বলেন, গতকাল দুপুরে তিনি ওষুধ কিনতে বাড়ির কাছের বাজারে গিয়েছিলেন। এ সময় স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে ধরে জুতার মালা পরিয়ে দেন। সেই সঙ্গে তাকে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরে, আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার এই ঘটনার ভিডিও গতরাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

আজ সকালে আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী রেহানা বেগমের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, গতকালের ঘটনায় আত্মসম্মানে আঘাত পেয়েছেন তার স্বামী। এ কারণে ঘটনার পর পরই তিনি এলাকা ছেড়ে ফেনী চলে যান। মূলত জামায়াত নেতা হোসেন মজুমদার নেতৃত্বে নিযার্তন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুই দফায় তাদের বাড়িতে হামলা হয়। হামলাকারীরা তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ করার কারণেই তাদের বাড়িতে হামলা হয় বলে দাবি করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক কিংবা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে আরও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ দেখে এরই মধ্যে ৭/৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম। তবে ঘটনার পর থেকে জড়িতদের কেউই এলাকায় নেই।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কানু আওয়ামী লীগ করেও বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলা হামলার শিকার হয়েছেন। কারাগারে গেছেন। তার ভুলক্রটি থাকলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ ছিল।

তিনি আরো বলেন, কিন্তু এভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে জুতার মালা গলায় দিয়ে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ জানানো ভাষা আমাদের জানা নেই। আমরা সরকারকে বলবো ১২ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। না হয় সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামবেন।’

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহমত উল্লাহ বলেন, আমরা ওনার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি যখন মিডিয়ার মাধ্যমে এই খবর জানতে পেরেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর সাথেও কথা হয়েছে উনি ফেনীতে আছেন। উনার সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি অবশ্যই অনাকাঙ্ক্ষিত। উনাকে আইনিভাবে সহায়তা করার জন্য যে যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৯:৩৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
৯৬ বার পড়া হয়েছে

কুমিল্লার ঘটনায় বিচারে দাবিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম

আপডেট সময় ০৯:৩৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে লাঞ্ছিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু নিরাপত্তাহীনতার কারণে এলাকা ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন। গতকাল বিকেলেই তিনি কুমিল্লা থেকে ফেনীতে চলে যান। ভিডিও ভাইরাল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনিয়ে সমালোচনা ঝড় চলছে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সোমবার সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিকেকুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এর আগে আজ সোমবার দুপুরে ১ টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সংসদ চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হেনস্তাকারীদের ১২ ঘন্টায় গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। নয়তো মুক্তিযোদ্ধারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে সারা বাংলাদেশ অচল করে দিবে বলে ঘোষণা দেন।

হেনস্তার শিকার হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেন, তিনি এখন ফেনীতে তার ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছেন। মারধর করায় সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ও প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে চৌদ্দগ্রামে বাড়িতে ফিরে আসবেন বলেও জানান তিনি।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আব্দুল হাই বলেন, গতকাল দুপুরে তিনি ওষুধ কিনতে বাড়ির কাছের বাজারে গিয়েছিলেন। এ সময় স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে ধরে জুতার মালা পরিয়ে দেন। সেই সঙ্গে তাকে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরে, আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার এই ঘটনার ভিডিও গতরাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

আজ সকালে আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী রেহানা বেগমের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, গতকালের ঘটনায় আত্মসম্মানে আঘাত পেয়েছেন তার স্বামী। এ কারণে ঘটনার পর পরই তিনি এলাকা ছেড়ে ফেনী চলে যান। মূলত জামায়াত নেতা হোসেন মজুমদার নেতৃত্বে নিযার্তন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুই দফায় তাদের বাড়িতে হামলা হয়। হামলাকারীরা তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ করার কারণেই তাদের বাড়িতে হামলা হয় বলে দাবি করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক কিংবা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে আরও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ দেখে এরই মধ্যে ৭/৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম। তবে ঘটনার পর থেকে জড়িতদের কেউই এলাকায় নেই।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কানু আওয়ামী লীগ করেও বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলা হামলার শিকার হয়েছেন। কারাগারে গেছেন। তার ভুলক্রটি থাকলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ ছিল।

তিনি আরো বলেন, কিন্তু এভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে জুতার মালা গলায় দিয়ে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ জানানো ভাষা আমাদের জানা নেই। আমরা সরকারকে বলবো ১২ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। না হয় সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামবেন।’

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহমত উল্লাহ বলেন, আমরা ওনার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি যখন মিডিয়ার মাধ্যমে এই খবর জানতে পেরেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর সাথেও কথা হয়েছে উনি ফেনীতে আছেন। উনার সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি অবশ্যই অনাকাঙ্ক্ষিত। উনাকে আইনিভাবে সহায়তা করার জন্য যে যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।