পুলিশের ইউনিফর্ম ও লোগো পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর সবচেয়ে বেশি জনরোষে পড়েছে পুলিশ সদস্য ও পুলিশের স্থাপনা। এতে ভেঙে পড়ে বাহিনীটির চেইন অব কমান্ড। এছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরই বদলে ফেলা হয় পুলিশের আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারকে। এর মধ্যেই নানা দাবি পূরণে কর্মবিরতি শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। পরে দাবি পূরণের আশ্বাসে রবিবার থেকেই কর্মস্থলে যোগদানের ঘোষণা দেন তারা। এছাড়া পুলিশের মনোবল চাঙা ও সংস্কারের লক্ষ্যে ইউনিফর্ম ও লোগো পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রোববার (১১ আগস্ট) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। ওই বৈঠকের পর কর্মবিরতি প্রত্যাহারেরও ঘোষণা দেন আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যরা।
বৈঠক শেষে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেনে বলেন, পুলিশের ইউনিফর্ম, লোগো সব পরিবর্তন করা হবে। পুলিশের অনেকের মন ভেঙে গেছে। এই ইউনিফর্ম পরে পুলিশ আর কাজ করতে চাইছে না।
তিনি আরও বলেন, খুব দ্রুতই তা পরিবর্তন করা হবে। এসব বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে আন্দোলনকারী পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ক পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও কনস্টেবল শোয়াইব হাসান কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুলিশের ওপর কোনও ধরনের হামলা চালানো যাবে না। পুলিশের কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাতে হবে।
পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বসার আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। গত কয়েক দিনের ঘটনায় পুলিশের মনোবল ভেঙে গেছে বলে বৈঠক শেষে জানান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘তারা যে দাবিদাওয়া পেশ করেছে, সেগুলো যৌক্তিক। তাই আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে আমরা স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে তাদের দাবিগুলো মেনে নেব। কিছু দাবি আমরা এখনই মেনে নেব।’
রাজনৈতিক সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘পুলিশের যতখানি না দোষ, তার চেয়ে বেশি দোষ তাদের যারা কমান্ড করেছে। তাদের দিয়ে অনেক রাজনৈতিক কাজ করানো হয়েছে। এসব বিষয়ে আমরা বিস্তারিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা করব। পুলিশ সদস্যরা আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে এখন থেকে তাঁরা ঠিকমতো কাজ করবেন। এর আগে বিকেলে আমি ছাত্রদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ছাত্ররা আমাকে বলেছে, পুলিশের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করবে।’