ঢাকা ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নিখোঁজের ৫ দিন পর উদ্ধার অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ, স্বামী গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাটে জমি বিরোধে কৃষক খুন Logo হবিগঞ্জে নিজ ঘর থেকে গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। Logo নবীগঞ্জে “জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo হবিগঞ্জ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ পুলিশ সুপার Logo বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে- নাহিদ ইসলাম Logo হবিগঞ্জে অর্ধশতাধিক দোকানপাট উচ্ছেদ Logo শায়েস্তাগঞ্জে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু Logo চুনারুঘাটে ঢলে ভেসে গেছে ব্রিজ, দুর্ভোগে মানুষ

শিল্পের কঠিন বর্জ্যে হারিয়ে গেছে শায়েস্তাগঞ্জের সুতাং নদীর জলজ প্রাণি

শায়েস্তাগঞ্জের বাণী ডেস্ক ,

হবিগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী সুতাং নদীতে শিল্প কারখানার কঠিন বর্জ্য প্রবেশ করায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা। এ কারণে নদীতে কোনো প্রজাতির মাছ নেই। এমনকি শামুক পর্যন্ত নেই। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নদীপাড়ের লোকেরা।

হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ ও জলজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকদের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

নদীতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন গবেষক ও হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মো. শাকির আহম্মেদ।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের মাধ্যমে গবেষণাটি পরিচালিত হচ্ছে।

পাঁচ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট প্লাস্টিকের কণাকে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলা হয়। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক পরিবেশ বিনষ্ট করার পাশাপাশি মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। প্লাস্টিক পণ্য তৈরি করা কারখানাগুলো যখন তাদের শিল্পবর্জ্য পরিবেশে ফেলে দেয়, তখন এর থেকে নির্গত কেমিক্যাল ও প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণাগুলো ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। এসব মাটিতে মিশে যাওয়ার ফলে উর্বরতা হ্রাস পায়। আর প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণাগুলো বাতাসের মাধ্যমেও বিভিন্নভাবে মানবদেহে প্রবেশ করে। এ মাইক্রোপ্লাস্টিককে খাবার ভেবে নদীর মাছ, ঝিনুক এমনকি সাগরের তিমিরাও গ্রহণ করে।

হবিগঞ্জের অন্যতম নদী সুতাং। ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ সুতাং নদী হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ, লাখাই ও চুনারুঘাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। একসময় এই নদী এলাকাবাসীর যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল। এখনো বোরো মৌসুমে এই নদীর পানি ব্যবহার করে কৃষিকাজ সম্পন্ন হয়।

এই নদীর অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। এর জন্য দায়ী জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে গড়ে ওঠা শিল্পকারখানাগুলো। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা এসব কারখানার বর্জ্য নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী শৈলজুড়া ভাটি খালের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে সুতাং নদী দূষিত করছে। পানি থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এতে নদীর তীর দিয়ে চলাচলও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। দূষণের কারণে মৎস্যশূন্য হয়ে পড়েছে নদীটি।

অপর দিকে এই নদীর পানি দূষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় নদী অববাহিকায় বিদ্যমান বিস্তীর্ণ হাওরের বোরো ফসলের সেচকাজে ব্যবহার করতে পারছেন না কৃষক। নদীর পানি ব্যবহারকারীরাও পড়েছেন গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। আক্রান্ত হচ্ছেন চর্মরোগসহ নানা অসুখে। নদীর পানির সংস্পর্শে আসা হাঁস, মুরগি ও গবাদিপশু মারা যাচ্ছে।

গবেষক মো. শাকির আহম্মেদ জানান- সুতাং নদীতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব রয়েছে। এ কারণে সুতাং নদীতে এখন কোনো প্রজাতির মাছ নেই। এমনকি শামুক পর্যন্ত নেই।

তিনি জানান, সুতাং নদী ঘেঁষে যতগুলো হাওর আছে। সেই হাওরের কৃষিসেচে সুতাং নদীর পানি ব্যবহার করা হয়। সেই হাওরের ধানেও একই রকম মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব থাকার আশঙ্কা অনেক বেশি।

একই গবেষণায় যুক্ত প্রভাষক ইফতেখার আহমেদ বলেন, “সুতাং নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সংগ্রহ করা পানি এবং মাছের নমুনায় বিভিন্ন রঙ ও আকারের মাইক্রোপ্লাস্টিকের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে। আরও নমুনা পরীক্ষার কাজ গবেষণাগারে চলমান আছে। মূলত বর্ষা ও শীতকালীন নদীর পানির দূষণের মাত্রা এবং মাছ, পানি, সেডিমেন্টে (পলি) মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি, আকার, পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে গবেষণাটি পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব দূষণের ফলে নদতীরবর্তী মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত কীরূপ ঝুঁকি আছে, তাও নিরূপণ করা সম্ভব হবে।”

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, “সুতাং নদীসহ অন্যান্য খাল-বিলে শিল্পবর্জ্য ফেলায় পানি কুচকুচে কালো হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নদীর তলদেশে বর্জ্যরে স্তর (প্লাস্টিক মাইক্রোবেডস) পড়ে গেছে। অসহনীয় দুর্গন্ধ ও দূষণের কারণে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গেছে। শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন নদীপাড়ের লোকেরা। এ শিল্পবর্জ্যের বিষাক্ত কালো পানি সুতাং-বলভদ্র হয়ে এখন মেঘনা নদীতে গিয়েও পড়ছে।”

সুতাং নদীর পানিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ভারী ধাতুর (হেভি মেটাল) অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণাটিতে প্রধান গবেষকের দায়িত্বে আছেন হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. শাকির আহম্মেদ। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের জলজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক ইফতেখার আহম্মেদও এই গবেষণায় যুক্ত আছেন। তারা সুতাং নদীর বুল্লা অংশ থেকে গোড়াবই গ্রাম পর্যন্ত কাজ করতে গিয়ে দুই থেকে তিনটি মাছ ছাড়া আর কোনো জলজ প্রাণির খোঁজ পাননি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৬:৩০:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
৯৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

শিল্পের কঠিন বর্জ্যে হারিয়ে গেছে শায়েস্তাগঞ্জের সুতাং নদীর জলজ প্রাণি

আপডেট সময় ০৬:৩০:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

হবিগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী সুতাং নদীতে শিল্প কারখানার কঠিন বর্জ্য প্রবেশ করায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা। এ কারণে নদীতে কোনো প্রজাতির মাছ নেই। এমনকি শামুক পর্যন্ত নেই। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নদীপাড়ের লোকেরা।

হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ ও জলজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকদের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

নদীতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন গবেষক ও হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মো. শাকির আহম্মেদ।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের মাধ্যমে গবেষণাটি পরিচালিত হচ্ছে।

পাঁচ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট প্লাস্টিকের কণাকে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলা হয়। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক পরিবেশ বিনষ্ট করার পাশাপাশি মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। প্লাস্টিক পণ্য তৈরি করা কারখানাগুলো যখন তাদের শিল্পবর্জ্য পরিবেশে ফেলে দেয়, তখন এর থেকে নির্গত কেমিক্যাল ও প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণাগুলো ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। এসব মাটিতে মিশে যাওয়ার ফলে উর্বরতা হ্রাস পায়। আর প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণাগুলো বাতাসের মাধ্যমেও বিভিন্নভাবে মানবদেহে প্রবেশ করে। এ মাইক্রোপ্লাস্টিককে খাবার ভেবে নদীর মাছ, ঝিনুক এমনকি সাগরের তিমিরাও গ্রহণ করে।

হবিগঞ্জের অন্যতম নদী সুতাং। ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ সুতাং নদী হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ, লাখাই ও চুনারুঘাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। একসময় এই নদী এলাকাবাসীর যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল। এখনো বোরো মৌসুমে এই নদীর পানি ব্যবহার করে কৃষিকাজ সম্পন্ন হয়।

এই নদীর অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। এর জন্য দায়ী জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে গড়ে ওঠা শিল্পকারখানাগুলো। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা এসব কারখানার বর্জ্য নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী শৈলজুড়া ভাটি খালের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে সুতাং নদী দূষিত করছে। পানি থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এতে নদীর তীর দিয়ে চলাচলও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। দূষণের কারণে মৎস্যশূন্য হয়ে পড়েছে নদীটি।

অপর দিকে এই নদীর পানি দূষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় নদী অববাহিকায় বিদ্যমান বিস্তীর্ণ হাওরের বোরো ফসলের সেচকাজে ব্যবহার করতে পারছেন না কৃষক। নদীর পানি ব্যবহারকারীরাও পড়েছেন গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। আক্রান্ত হচ্ছেন চর্মরোগসহ নানা অসুখে। নদীর পানির সংস্পর্শে আসা হাঁস, মুরগি ও গবাদিপশু মারা যাচ্ছে।

গবেষক মো. শাকির আহম্মেদ জানান- সুতাং নদীতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব রয়েছে। এ কারণে সুতাং নদীতে এখন কোনো প্রজাতির মাছ নেই। এমনকি শামুক পর্যন্ত নেই।

তিনি জানান, সুতাং নদী ঘেঁষে যতগুলো হাওর আছে। সেই হাওরের কৃষিসেচে সুতাং নদীর পানি ব্যবহার করা হয়। সেই হাওরের ধানেও একই রকম মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব থাকার আশঙ্কা অনেক বেশি।

একই গবেষণায় যুক্ত প্রভাষক ইফতেখার আহমেদ বলেন, “সুতাং নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সংগ্রহ করা পানি এবং মাছের নমুনায় বিভিন্ন রঙ ও আকারের মাইক্রোপ্লাস্টিকের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে। আরও নমুনা পরীক্ষার কাজ গবেষণাগারে চলমান আছে। মূলত বর্ষা ও শীতকালীন নদীর পানির দূষণের মাত্রা এবং মাছ, পানি, সেডিমেন্টে (পলি) মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি, আকার, পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে গবেষণাটি পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব দূষণের ফলে নদতীরবর্তী মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত কীরূপ ঝুঁকি আছে, তাও নিরূপণ করা সম্ভব হবে।”

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, “সুতাং নদীসহ অন্যান্য খাল-বিলে শিল্পবর্জ্য ফেলায় পানি কুচকুচে কালো হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নদীর তলদেশে বর্জ্যরে স্তর (প্লাস্টিক মাইক্রোবেডস) পড়ে গেছে। অসহনীয় দুর্গন্ধ ও দূষণের কারণে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গেছে। শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন নদীপাড়ের লোকেরা। এ শিল্পবর্জ্যের বিষাক্ত কালো পানি সুতাং-বলভদ্র হয়ে এখন মেঘনা নদীতে গিয়েও পড়ছে।”

সুতাং নদীর পানিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ভারী ধাতুর (হেভি মেটাল) অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণাটিতে প্রধান গবেষকের দায়িত্বে আছেন হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. শাকির আহম্মেদ। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের জলজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক ইফতেখার আহম্মেদও এই গবেষণায় যুক্ত আছেন। তারা সুতাং নদীর বুল্লা অংশ থেকে গোড়াবই গ্রাম পর্যন্ত কাজ করতে গিয়ে দুই থেকে তিনটি মাছ ছাড়া আর কোনো জলজ প্রাণির খোঁজ পাননি।