ঢাকা ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নিখোঁজের ৫ দিন পর উদ্ধার অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ, স্বামী গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাটে জমি বিরোধে কৃষক খুন Logo হবিগঞ্জে নিজ ঘর থেকে গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। Logo নবীগঞ্জে “জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo হবিগঞ্জ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ পুলিশ সুপার Logo বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে- নাহিদ ইসলাম Logo হবিগঞ্জে অর্ধশতাধিক দোকানপাট উচ্ছেদ Logo শায়েস্তাগঞ্জে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু Logo চুনারুঘাটে ঢলে ভেসে গেছে ব্রিজ, দুর্ভোগে মানুষ

হবিগঞ্জের পাহাড়ে সজনের ফলনে চাষিরা লাভবান

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-

হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলাকায় সজনের ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে সজনের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। তাই পাহাড়ি চাষিরা সজনে বিক্রিতে লাভবান হচ্ছেন।

এখন সজনের মৌসুম। এটি ফাল্গুন মাসের প্রথমে ধরা শুরু করে। চৈত্র ও বৈশাখ মাসজুড়ে বিক্রি হয়। এ সবজিটি এক সময় হবিগঞ্জ জেলার সর্বত্র চাষ হতো। এখন শুধু ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে জেলার পাহাড়ি এলাকায়। তার পাশাপাশি গ্রামের অনেক বাড়িতেও সজনে চাষ হয়। আর এ মৌসুমে সজনের ভালো ফলন হয়েছে।

জেলার চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা পাহাড়ি এলাকা ও দেউন্দি চা-বাগান এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, বাড়ি বাড়ি সজনের গাছ। অনেকে গাছ থেকে সজনে সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন। আবার নিজেদের খাবারে সবজির চাহিদা মেটাচ্ছেন। এভাবে জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি এলাকার প্রতিটি চা-বাগান, আদিবাসী পুঞ্জির বাড়িতে সজনে চাষ হচ্ছে। এর ফলনে কোনো সার বা বিষ প্রয়োগের প্রয়োজন হচ্ছে না।
আলাপকালে দেউন্দি চা-বাগানের বাসিন্দা প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, বাগানের উঁচু-ঢালু স্থানের মাটিতে সজনের ভালো ফলন হয়ে থাকে। এ সবজিতে পুষ্টি রয়েছে। দেউন্দি বাগানের শ্রমিক নেতা আমোদ মাল বলেন, তাদের কয়েকটি গাছ রয়েছে। প্রতিবছর সবকটি গাছে সজনে ধরে। নিজেদের খাওয়াসহ বিক্রি করে ভালো টাকা পাওয়া যায়। মৌসুম শেষে গাছের কিছু কিছু ডাল কেটে দিতে হয়। এতে নতুন ডালে বেশি ফলন হয়।

চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা পাহাড়ের কালিয়াবাড়ী পুঞ্জির হেডম্যান বিনয় দেববর্মা জানান, তাদের বাড়ি বাড়ি সজনে গাছ রয়েছে। গাছে সজনে ধরে। এ সব সজনে তারা বিক্রি করার পাশাপাশি নিজেরা খেতে পারেন। সজনে চাষে কোনো খরচ নেই। বরং বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা। বাহুবলের আলীয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির মন্ত্রী উটিয়ান টংপেয়ার জানান, সজনে গাছের ডালপালা নরম। ঝড় আসলে ভেঙে যায়। তারপরও সজনে চাষে ওষুধ না দিলেও ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রিও করা যাচ্ছে।

সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লীর হেডম্যান চিত্তরঞ্জন দেববর্মা ও সহকারী হেডম্যান আশিষ দেববর্মা জানান, তাদের পল্লীতে বেশ কিছু সজনে গাছ আছে। প্রতি বছরই সজনে ধরছে। নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রি করে তারা অর্থ পাচ্ছেন।

শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজারের পাইকারি ক্রেতা মোতাব্বির হোসেন জানান, গ্রামে এখনো কিছু কিছু বাড়িতে সজনের চাষ হয়। তবে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে পাহাড়ে। তাই তারা পাহাড় থেকে সজনে কিনে বাজারে খুচরা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। এতে ভালো লাভ হচ্ছে। ক্রেতারাও বিষমুক্ত সজনে খেতে পারছেন।

ক্রেতা সজল মিয়া জানান, এক আঁটি সজনে ৬০ টাকা দিয়ে কিনছেন। এ সবজি খেয়ে স্বাদ পাওয়া যায়। আরেক ক্রেতা কামাল মিয়া জানান, সজনে খেতে হলে শুকনো শীমের বীজ ও শুটকির প্রয়োজন। সঙ্গে মাছ দিলে আরও ভালো স্বাদ পাওয়া যায়।

চাষিরা প্রতি কেজি সজনে ডাটা পাইকারদের কাছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করেন। আর ১২টা সজনে এক আঁটি করে বিক্রি করেন ৫০ টাকায়। সেই সজনে ডাটা খুচরা পর্যায়ে যেতে কেজি ১২০ টাকায় ও আঁটি ৭০ টাকায় বিক্রি হয়।

হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ দাশ জানান, গরমের সময় অনেকে পেটের সমস্যায় ভোগেন। পেটে গ্যাস, বদহজম এবং পেটে ব্যথা হলে সজনের তৈরি তরকারি খুব উপকারে আসবে। কারণ সজনের তরকারি হজমে সহায়তা করে। এটি পেটের সমস্যা নিরসনে সহায়তা করবে। সজনে ডাটা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া সজনে পাতার রসও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি খুব উপকারী সবজি।

এছাড়া দাঁতের মাড়ির সমস্যা দূর করতে সজনে ডাটার জুড়ি নেই। প্রাথমিক অবস্থায় টিউমারের প্রতিষেধক হিসেবে সজনে পাতা বেশ কাজের। বাতের ব্যথা ও হেঁচকি উপশমে এই সজনে ডাটা বেশ উপকারে আসে। এছাড়াও আঘাতে ফুলে যাওয়া কমাতে সহায়তা করে। নানা গুণে ভরা সজনে ডাটা আপনার রসনাতৃপ্তি মেটানোর পাশাপাশি দেবে পুষ্টি, রাখবে সুস্থ।

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আকতারুজ্জামান জানান, সজনে সবজিটির পুষ্টিগুণ ভালো। জেলার পাহাড়ি এলাকায়সহ বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ২৭ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয় ৬৫ মেট্রিক টন। শুকনো স্থানে উৎপাদন ভালো হয়। বর্তমানে পাহাড়ি এলাকায় চাষে কৃষকরা লাভবান। পাহাড়ি এলাকার বাড়ি বাড়ি সজনের চাষ হচ্ছে। এর চাষে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। হবিগঞ্জ থেকে কিছু পরিমাণ সজনে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৯:৩১:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
৩৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

হবিগঞ্জের পাহাড়ে সজনের ফলনে চাষিরা লাভবান

আপডেট সময় ০৯:৩১:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলাকায় সজনের ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে সজনের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। তাই পাহাড়ি চাষিরা সজনে বিক্রিতে লাভবান হচ্ছেন।

এখন সজনের মৌসুম। এটি ফাল্গুন মাসের প্রথমে ধরা শুরু করে। চৈত্র ও বৈশাখ মাসজুড়ে বিক্রি হয়। এ সবজিটি এক সময় হবিগঞ্জ জেলার সর্বত্র চাষ হতো। এখন শুধু ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে জেলার পাহাড়ি এলাকায়। তার পাশাপাশি গ্রামের অনেক বাড়িতেও সজনে চাষ হয়। আর এ মৌসুমে সজনের ভালো ফলন হয়েছে।

জেলার চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা পাহাড়ি এলাকা ও দেউন্দি চা-বাগান এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, বাড়ি বাড়ি সজনের গাছ। অনেকে গাছ থেকে সজনে সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন। আবার নিজেদের খাবারে সবজির চাহিদা মেটাচ্ছেন। এভাবে জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি এলাকার প্রতিটি চা-বাগান, আদিবাসী পুঞ্জির বাড়িতে সজনে চাষ হচ্ছে। এর ফলনে কোনো সার বা বিষ প্রয়োগের প্রয়োজন হচ্ছে না।
আলাপকালে দেউন্দি চা-বাগানের বাসিন্দা প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, বাগানের উঁচু-ঢালু স্থানের মাটিতে সজনের ভালো ফলন হয়ে থাকে। এ সবজিতে পুষ্টি রয়েছে। দেউন্দি বাগানের শ্রমিক নেতা আমোদ মাল বলেন, তাদের কয়েকটি গাছ রয়েছে। প্রতিবছর সবকটি গাছে সজনে ধরে। নিজেদের খাওয়াসহ বিক্রি করে ভালো টাকা পাওয়া যায়। মৌসুম শেষে গাছের কিছু কিছু ডাল কেটে দিতে হয়। এতে নতুন ডালে বেশি ফলন হয়।

চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা পাহাড়ের কালিয়াবাড়ী পুঞ্জির হেডম্যান বিনয় দেববর্মা জানান, তাদের বাড়ি বাড়ি সজনে গাছ রয়েছে। গাছে সজনে ধরে। এ সব সজনে তারা বিক্রি করার পাশাপাশি নিজেরা খেতে পারেন। সজনে চাষে কোনো খরচ নেই। বরং বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা। বাহুবলের আলীয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির মন্ত্রী উটিয়ান টংপেয়ার জানান, সজনে গাছের ডালপালা নরম। ঝড় আসলে ভেঙে যায়। তারপরও সজনে চাষে ওষুধ না দিলেও ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রিও করা যাচ্ছে।

সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লীর হেডম্যান চিত্তরঞ্জন দেববর্মা ও সহকারী হেডম্যান আশিষ দেববর্মা জানান, তাদের পল্লীতে বেশ কিছু সজনে গাছ আছে। প্রতি বছরই সজনে ধরছে। নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রি করে তারা অর্থ পাচ্ছেন।

শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজারের পাইকারি ক্রেতা মোতাব্বির হোসেন জানান, গ্রামে এখনো কিছু কিছু বাড়িতে সজনের চাষ হয়। তবে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে পাহাড়ে। তাই তারা পাহাড় থেকে সজনে কিনে বাজারে খুচরা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। এতে ভালো লাভ হচ্ছে। ক্রেতারাও বিষমুক্ত সজনে খেতে পারছেন।

ক্রেতা সজল মিয়া জানান, এক আঁটি সজনে ৬০ টাকা দিয়ে কিনছেন। এ সবজি খেয়ে স্বাদ পাওয়া যায়। আরেক ক্রেতা কামাল মিয়া জানান, সজনে খেতে হলে শুকনো শীমের বীজ ও শুটকির প্রয়োজন। সঙ্গে মাছ দিলে আরও ভালো স্বাদ পাওয়া যায়।

চাষিরা প্রতি কেজি সজনে ডাটা পাইকারদের কাছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করেন। আর ১২টা সজনে এক আঁটি করে বিক্রি করেন ৫০ টাকায়। সেই সজনে ডাটা খুচরা পর্যায়ে যেতে কেজি ১২০ টাকায় ও আঁটি ৭০ টাকায় বিক্রি হয়।

হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ দাশ জানান, গরমের সময় অনেকে পেটের সমস্যায় ভোগেন। পেটে গ্যাস, বদহজম এবং পেটে ব্যথা হলে সজনের তৈরি তরকারি খুব উপকারে আসবে। কারণ সজনের তরকারি হজমে সহায়তা করে। এটি পেটের সমস্যা নিরসনে সহায়তা করবে। সজনে ডাটা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া সজনে পাতার রসও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি খুব উপকারী সবজি।

এছাড়া দাঁতের মাড়ির সমস্যা দূর করতে সজনে ডাটার জুড়ি নেই। প্রাথমিক অবস্থায় টিউমারের প্রতিষেধক হিসেবে সজনে পাতা বেশ কাজের। বাতের ব্যথা ও হেঁচকি উপশমে এই সজনে ডাটা বেশ উপকারে আসে। এছাড়াও আঘাতে ফুলে যাওয়া কমাতে সহায়তা করে। নানা গুণে ভরা সজনে ডাটা আপনার রসনাতৃপ্তি মেটানোর পাশাপাশি দেবে পুষ্টি, রাখবে সুস্থ।

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আকতারুজ্জামান জানান, সজনে সবজিটির পুষ্টিগুণ ভালো। জেলার পাহাড়ি এলাকায়সহ বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ২৭ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয় ৬৫ মেট্রিক টন। শুকনো স্থানে উৎপাদন ভালো হয়। বর্তমানে পাহাড়ি এলাকায় চাষে কৃষকরা লাভবান। পাহাড়ি এলাকার বাড়ি বাড়ি সজনের চাষ হচ্ছে। এর চাষে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। হবিগঞ্জ থেকে কিছু পরিমাণ সজনে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়।