ঢাকা ১২:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নিখোঁজের ৫ দিন পর উদ্ধার অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ, স্বামী গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাটে জমি বিরোধে কৃষক খুন Logo হবিগঞ্জে নিজ ঘর থেকে গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। Logo নবীগঞ্জে “জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo হবিগঞ্জ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ পুলিশ সুপার Logo বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে- নাহিদ ইসলাম Logo হবিগঞ্জে অর্ধশতাধিক দোকানপাট উচ্ছেদ Logo শায়েস্তাগঞ্জে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু Logo চুনারুঘাটে ঢলে ভেসে গেছে ব্রিজ, দুর্ভোগে মানুষ

হবিগঞ্জে শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-

হবিগঞ্জ জেলার হাওর, বিল ও নদীসহ প্রাকৃতিক জলাশয়ে কমেছে মাছের পরিমাণ। আগে হাওরে ১৫০ প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও এখন পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির। এ কারণে কমে গেছে শুঁটকির উৎপাদন। ফলে শুঁটকি পল্লীগুলোতে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এ পেশার সঙ্গে জড়িতরা।

জেলার আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, লাখাই, বাহুবল, হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৫ শতাধিক পরিবার শুঁটকি উৎপাদনের পেশায় এখনো জড়িত। পেশা টিকিয়ে রাখতে তারা সরকারি সহায়তা চেয়েছেন। হাওর এলাকার বাঘহাতা, গাজীপুর, শান্তিপুর, ভাটিপাড়া, সুনারু, নাগুরা, নোয়াগাঁও, নোয়াগড়, বিরাট, কোদালিয়া, বদলপুর, উমেদনগরসহ বিভিন্নস্থানে রয়েছে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণের অসংখ্য মাচা।

মাচায় দেশি প্রজাতির পুঁটি, চিংড়ি, কাকিয়া, শইল, গজার, টাকি, বাইম, আইড়, মলা, টেংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতি মাছের শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত শুঁটকি প্রতি মণ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আড়তদাররা ২৫ থেকে ২৮ হাজার টাকা মণ হিসেবে বিক্রি করছেন শুঁটকি। খুচরা বাজারে শুঁটকি প্রতিকেজি ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, গত অর্থবছরে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ২৪০ টন, বানিয়াচংয়ে ৫৭৫ টন, নবীগঞ্জে ২৭ টন, বাহুবলে ২১২ টন, লাখাইয়ে ২৩১ টন এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ৩৪২ টন শুঁটকি উৎপাদন হয়েছিল। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ মৌসুমে আরো কম উৎপাদন হয়েছে শুঁটকি।

মাধবী রানী নামে এক শুঁটকি উৎপাদনকারী বলেন, “বাজার থেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে শইল, বাইম, পুটি, টেংরাসহ নানা প্রজাতির মাছ কিনে এনে শুঁটকি তৈরি করা হয়। হাওর, বিল ও নদীতে পানি কমে যাওয়ায় চাহিদামতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদা সম্পন্ন মাছের দামও অনেক বেশি। আগে জেলা শহরের উমেদনগরে মাসে আটটি পাইকারি শুঁটকির হাট বসত, এখন বসছে মাত্র চারটি।”

পারুল রানী দাশ নামে অপর একজন বলেন, “ভোর ৬টা থেকে শুরু হয় শুঁটকি তৈরির কাজ। প্রতিদিন ৫ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। মাসে ১০ হাজার টাকা মজুরি পাওয়া যায়। বর্তমানে শুঁটকির উৎপাদন কমে যাওয়ায় এ পেশায় কাজ করে খাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য অন্য পেশায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

সরেজমিন উমেদনগর হাটে গিয়ে দেয়া যায়, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ক্রেতারা শুঁটকি কিনতে এসেছেন। চাহিদা অনুযায়ী শুঁটকি না পাওয়ায় হতাশ হয়েছেন তারা।

সিরাজগঞ্জ থেকে পাইকারি দামে শুঁটকি কিনতে আসা ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান জানান, আগে তিনি প্রতিমাসে ৭ থেকে ৮ বার হবিগঞ্জে আসতেন শুঁটকি কিনতে। এখন মাসে দুই থেকে তিনবার আসেন। দাম বেড়ে যাওয়া এবং চাহিদামতো শুঁটকি না পাওয়ায় হবিগঞ্জে কম আসেন বলেও জানান তিনি।

উমেদনগর হাটে শুঁটকির আড়তদার কামরুল ইসলাম বলেন, “আগে এই হাটে নানা রকমের শুঁটকি বিক্রি হত। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা আসতেন শুঁটকি কিনতে। হবিগঞ্জে উৎপাদিত শুঁটকির কদর আলাদা। বর্তমানে হাওর, বিল ও নদীতে মাছ কমায় শুঁটকির উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।”

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, “এ জেলায় অনেক নদী, বিল, হাওরসহ বিস্তীর্ণ জলাশয় রয়েছে। নানা শিল্প প্রতিষ্ঠানের দূষিত কালো পানি প্রাকৃতিক জলাশয়ে প্রবেশ করছে। জমিতে অধিক পরিমাণে কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। জলাশয় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণে বর্তমানে প্রাকৃতিক জলাশয়ে মাছের পরিমাণ কমেছে। তার সঙ্গে কমেছে শুঁটকি উৎপাদন।”

তিনি আরো বলেন, “এখনই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে, না হলে প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে পর্যায়ক্রমে দেশীয় প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে শুঁটকি উৎপাদনও।”

হবিগঞ্জ জেলা মৎস কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান মজুমদার বলেন, “দিন দিন হবিগঞ্জে শুঁটকির উৎপাদন কমে যাচ্ছে। অনেকে এই পেশার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। আমরা মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য হাওরে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছি, বিশেষ করে পোনা মাছ সংরক্ষণের জন্য। যদি পোনা মাছ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়, তাহলে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।”

তিনি আরো বলেন, “চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। দেশি মাছ রক্ষা পেলে শুঁটকির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।”

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:৫৮:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
২৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

হবিগঞ্জে শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা

আপডেট সময় ১১:৫৮:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

হবিগঞ্জ জেলার হাওর, বিল ও নদীসহ প্রাকৃতিক জলাশয়ে কমেছে মাছের পরিমাণ। আগে হাওরে ১৫০ প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও এখন পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির। এ কারণে কমে গেছে শুঁটকির উৎপাদন। ফলে শুঁটকি পল্লীগুলোতে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এ পেশার সঙ্গে জড়িতরা।

জেলার আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, লাখাই, বাহুবল, হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৫ শতাধিক পরিবার শুঁটকি উৎপাদনের পেশায় এখনো জড়িত। পেশা টিকিয়ে রাখতে তারা সরকারি সহায়তা চেয়েছেন। হাওর এলাকার বাঘহাতা, গাজীপুর, শান্তিপুর, ভাটিপাড়া, সুনারু, নাগুরা, নোয়াগাঁও, নোয়াগড়, বিরাট, কোদালিয়া, বদলপুর, উমেদনগরসহ বিভিন্নস্থানে রয়েছে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণের অসংখ্য মাচা।

মাচায় দেশি প্রজাতির পুঁটি, চিংড়ি, কাকিয়া, শইল, গজার, টাকি, বাইম, আইড়, মলা, টেংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতি মাছের শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত শুঁটকি প্রতি মণ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আড়তদাররা ২৫ থেকে ২৮ হাজার টাকা মণ হিসেবে বিক্রি করছেন শুঁটকি। খুচরা বাজারে শুঁটকি প্রতিকেজি ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, গত অর্থবছরে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ২৪০ টন, বানিয়াচংয়ে ৫৭৫ টন, নবীগঞ্জে ২৭ টন, বাহুবলে ২১২ টন, লাখাইয়ে ২৩১ টন এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ৩৪২ টন শুঁটকি উৎপাদন হয়েছিল। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ মৌসুমে আরো কম উৎপাদন হয়েছে শুঁটকি।

মাধবী রানী নামে এক শুঁটকি উৎপাদনকারী বলেন, “বাজার থেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে শইল, বাইম, পুটি, টেংরাসহ নানা প্রজাতির মাছ কিনে এনে শুঁটকি তৈরি করা হয়। হাওর, বিল ও নদীতে পানি কমে যাওয়ায় চাহিদামতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদা সম্পন্ন মাছের দামও অনেক বেশি। আগে জেলা শহরের উমেদনগরে মাসে আটটি পাইকারি শুঁটকির হাট বসত, এখন বসছে মাত্র চারটি।”

পারুল রানী দাশ নামে অপর একজন বলেন, “ভোর ৬টা থেকে শুরু হয় শুঁটকি তৈরির কাজ। প্রতিদিন ৫ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। মাসে ১০ হাজার টাকা মজুরি পাওয়া যায়। বর্তমানে শুঁটকির উৎপাদন কমে যাওয়ায় এ পেশায় কাজ করে খাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য অন্য পেশায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

সরেজমিন উমেদনগর হাটে গিয়ে দেয়া যায়, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ক্রেতারা শুঁটকি কিনতে এসেছেন। চাহিদা অনুযায়ী শুঁটকি না পাওয়ায় হতাশ হয়েছেন তারা।

সিরাজগঞ্জ থেকে পাইকারি দামে শুঁটকি কিনতে আসা ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান জানান, আগে তিনি প্রতিমাসে ৭ থেকে ৮ বার হবিগঞ্জে আসতেন শুঁটকি কিনতে। এখন মাসে দুই থেকে তিনবার আসেন। দাম বেড়ে যাওয়া এবং চাহিদামতো শুঁটকি না পাওয়ায় হবিগঞ্জে কম আসেন বলেও জানান তিনি।

উমেদনগর হাটে শুঁটকির আড়তদার কামরুল ইসলাম বলেন, “আগে এই হাটে নানা রকমের শুঁটকি বিক্রি হত। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা আসতেন শুঁটকি কিনতে। হবিগঞ্জে উৎপাদিত শুঁটকির কদর আলাদা। বর্তমানে হাওর, বিল ও নদীতে মাছ কমায় শুঁটকির উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।”

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, “এ জেলায় অনেক নদী, বিল, হাওরসহ বিস্তীর্ণ জলাশয় রয়েছে। নানা শিল্প প্রতিষ্ঠানের দূষিত কালো পানি প্রাকৃতিক জলাশয়ে প্রবেশ করছে। জমিতে অধিক পরিমাণে কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। জলাশয় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণে বর্তমানে প্রাকৃতিক জলাশয়ে মাছের পরিমাণ কমেছে। তার সঙ্গে কমেছে শুঁটকি উৎপাদন।”

তিনি আরো বলেন, “এখনই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে, না হলে প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে পর্যায়ক্রমে দেশীয় প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে শুঁটকি উৎপাদনও।”

হবিগঞ্জ জেলা মৎস কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান মজুমদার বলেন, “দিন দিন হবিগঞ্জে শুঁটকির উৎপাদন কমে যাচ্ছে। অনেকে এই পেশার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। আমরা মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য হাওরে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছি, বিশেষ করে পোনা মাছ সংরক্ষণের জন্য। যদি পোনা মাছ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়, তাহলে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।”

তিনি আরো বলেন, “চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। দেশি মাছ রক্ষা পেলে শুঁটকির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।”