ঢাকা ০৫:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

আজমিরীগঞ্জে শিকলবন্দি বাবুল বৈষ্ণব

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-

প্রায় পরিত্যক্ত ভাঙা একটি ঘর। ওই ঘরে পায়ে শিকল পরা অবস্থায় মাটিতে বসে দিন কাটে বাবুল বৈষ্ণবের। পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ওষুধের পাতা।

ঘটনাস্থল হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ঝিলুয়া গ্রাম।

স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, ৩ সপ্তাহ ধরে তাকে স্বজনরা শিকলবন্দি করে রেখেছেন।

কথা হয় ৫০ বছর বয়সী বাবুল বৈষ্ণবের সাথে। তিনি জানান, ছোট একটি ঘটনা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। ওই সময় তিনি স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন। এ ঘটনার পর তার স্ত্রী, ছেলে ও কাকা মিলে তাকে মারপিট করে পাগলের তকমা দিয়ে শিকলে বেঁধে রেখেছে।

তিনি বলেন, “কোনো মানসিক সমস্যা নেই আমার। শুধু পারিবারিক ঝগড়ার কারণে ছেলে, স্ত্রী আর কাকা মিলে আমাকে বেঁধে রেখেছে। ঠিকমতো খাবার দেয় না। আমার বৃদ্ধা মা মাঝে মধ্যে কিছু খাবার দিলে তাকেও গালাগাল করা হয়। মাঝেমধ্যে খাবারের থালা মায়ের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ফেলে দেয়। আধা বালতি পানি দিয়ে গত ২০ দিনে মা আমাকে ৩-৪ দিন গোসল করিয়েছে। অথচ কোনো দিন কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি।”

বাবুল জানান, তিনি অনেক কষ্ট করে সংসার চালিয়েছেন। ছেলেমেয়েকে বড় করেছেন। আটকে রাখার আগেও তিনি কৃষি কাজের বাইরে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে সবজি, বীজ বিক্রি করেছেন।

বাবুলের কাকা রথিন্দ্র চৌধুরী বলেন, “বাবুল প্রায়ই পরিবারের লোকজনকে মারপিট করে। দা নিয়ে হামলা করতে আসে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে।”

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বদলপুরের ইউপি সদস্য দিলীপ কুমার চৌধুরী বলেন, “আমি বিষয়টি জানি না। তবে এখন যেহেতু আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমি খোঁজ নেব। তবে আমার জানা মতে, তার আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক হলেও পাগল বলা যাবে না। এমনকি তিনি কখনো কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন বলেও আমার জানা নেই।”

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:০০:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
৩ বার পড়া হয়েছে

আজমিরীগঞ্জে শিকলবন্দি বাবুল বৈষ্ণব

আপডেট সময় ০৫:০০:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

প্রায় পরিত্যক্ত ভাঙা একটি ঘর। ওই ঘরে পায়ে শিকল পরা অবস্থায় মাটিতে বসে দিন কাটে বাবুল বৈষ্ণবের। পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ওষুধের পাতা।

ঘটনাস্থল হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ঝিলুয়া গ্রাম।

স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, ৩ সপ্তাহ ধরে তাকে স্বজনরা শিকলবন্দি করে রেখেছেন।

কথা হয় ৫০ বছর বয়সী বাবুল বৈষ্ণবের সাথে। তিনি জানান, ছোট একটি ঘটনা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। ওই সময় তিনি স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন। এ ঘটনার পর তার স্ত্রী, ছেলে ও কাকা মিলে তাকে মারপিট করে পাগলের তকমা দিয়ে শিকলে বেঁধে রেখেছে।

তিনি বলেন, “কোনো মানসিক সমস্যা নেই আমার। শুধু পারিবারিক ঝগড়ার কারণে ছেলে, স্ত্রী আর কাকা মিলে আমাকে বেঁধে রেখেছে। ঠিকমতো খাবার দেয় না। আমার বৃদ্ধা মা মাঝে মধ্যে কিছু খাবার দিলে তাকেও গালাগাল করা হয়। মাঝেমধ্যে খাবারের থালা মায়ের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ফেলে দেয়। আধা বালতি পানি দিয়ে গত ২০ দিনে মা আমাকে ৩-৪ দিন গোসল করিয়েছে। অথচ কোনো দিন কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি।”

বাবুল জানান, তিনি অনেক কষ্ট করে সংসার চালিয়েছেন। ছেলেমেয়েকে বড় করেছেন। আটকে রাখার আগেও তিনি কৃষি কাজের বাইরে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে সবজি, বীজ বিক্রি করেছেন।

বাবুলের কাকা রথিন্দ্র চৌধুরী বলেন, “বাবুল প্রায়ই পরিবারের লোকজনকে মারপিট করে। দা নিয়ে হামলা করতে আসে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে।”

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বদলপুরের ইউপি সদস্য দিলীপ কুমার চৌধুরী বলেন, “আমি বিষয়টি জানি না। তবে এখন যেহেতু আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমি খোঁজ নেব। তবে আমার জানা মতে, তার আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক হলেও পাগল বলা যাবে না। এমনকি তিনি কখনো কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন বলেও আমার জানা নেই।”