চুনারুঘাটে হত্যা মামলার আসমী আ. মান্নান আটক-তাবলীগ জামাতে গিয়ে অপহরণ মামলা সাজিয়েছেন
চাঞ্চল্যকর মাফিল হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে মাদ্রাসা শিক্ষক আ. মান্নান তাবলীগ জামাতে গিয়ে আত্মগোপন করে অপহরণ মামলা সাজিয়েছেন। গতকাল ২৭ জুন শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার পুলিশ তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার বক্তবলি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মাষ্টার বাড়ি জামে মসজিদ হইতে ফতুল্লা থানার এসআই শাহ আলম তাকে আটক করেন।
জানাযায়, চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি ইউনিয়নের নিরিহ কৃষক মফিল মিয়া গত বছর ২৬ ডিসেম্বর নিহত হন। এই মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল মান্নান কে আসামি করে মামলার বাদী পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেন।কারণ মফিল হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড অপহরণ নাটক সাজানো সেই মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল মান্নান।হত্যা মামলার আসামি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে নিজে নিজেই তাবলীগ জামাতের ৪০ দিনের চিল্লায় গিয়ে তার মেয়ে শাহিনা ইয়াসমিন চৌধুরী কে দিয়ে অপহরণ নাটক তৈরী করেন তিনি।
গত ১৩ জুন তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ থেকে ঢাকা কাকরাইল মসজিদে যান।১৬ জুন কাকরাইল মসজিদে তাবলীগ জামাতের রেজিস্টার খাতায় তার প্রকৃত নাম ঠিকানা পরিবর্তন করেন।প্রকৃত নাম আব্দুল মান্নান পিতা: আব্দুর রহিম গ্রাম আলোনিয়া এর পরিবর্তে নাম লিখেন মোঃ আব্দুল্লাহ পিতা: আব্দুর রহমান ঠিকানা হবিগঞ্জ সদর।
১৫ জুন তার মেয়ে শাহিনা ইয়াসমিন চৌধুরী বাদি হয়ে চুনারুঘাট থানা অপহরণ মামলা করেন।ঘটনার পর থেকেই চুনারুঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ নুর আলম তদন্ত কাজ শুরু করেন।এদিকে তার মেয়ে শাহিনা ইয়াসমিন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন অপপ্রচার করতে থাকে।
পুলিশের বিরুদ্ধে অনেক বক্তব্য প্রদান করে।চুনারুঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ নুর আলম তথ্যপ্রযুক্তি ও নিজস্ব গোয়েন্দার মাধ্যমে জানতে পারেন তিনি বেঁচে আছেন এবং মোবাইল ফোনে বিভিন্ন জনের সাথে যোগাযোগ করেন।এর-ই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৭ জুন শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার ভক্ত বলি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মাস্টার পাড়া জামে মসজিদ থেকে তাকে আটক করেন ফতুল্লা থানার এসআই মোঃ শাহ আলম।
অপহরণ নয় হত্যা মামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে এমন নাটক সাজিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ আব্দুল মান্নান।অপহরণ না করেই যে সমস্ত নিরীহ মানুষ ফেঁসে গেছেন তাদের মুক্তি এবং মিথ্যা অপহরণ মামলার বাদী আব্দুল মান্নানের মেয়ে শাহিনা ইয়াসমিন চৌধুরীকে শাস্তি প্রদানের দাবি জানান এলাকাবাসী।
চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম বলেন, ‘তদন্তে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, এটি একটি সাজানো নাটক। প্রাথমিকভাবে অভিযোগকারীর কথার সঙ্গে ঘটনার বাস্তবতার কোন মিল পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের পর থেকেই বিষয়টি সন্দেহজনক ছিল। পরে আমরা ভিকটিমকে উদ্ধারে নানা কৌশল অবলম্বন করি। এক পর্যায়ে তাকে উদ্ধারের পর আমরা মূল রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়েছি।
ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।