ঢাকা ০২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পটল চাষে ভাগ্য বদল যশোরে শার্শার কৃষক রায়হান উদ্দিনের

যশোর প্রতিনিধিঃ

যশোরের শার্শায় পটল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন রায়হান উদ্দিন (৬০) নামে এক কৃষক। দীর্ঘদিন ধরে পটল চাষ করে অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন তিনি। গত কয়েক বছর আগেও তাদের সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকতো। পটল চাষ করে তিনি ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা ।

রায়হান উদ্দিন উপজেলার শার্শা ইউনিয়নের বেড়ী গ্রামের তোফাজ্জেল খন্দকারের ছেলে।

জানা যায়, কৃষক রায়হান ৩৩ শতক জমিতে মাচায় বোম্বাই জাতের পটলের চাষ করেছেন। সারিতে সারিতে রোপণ করা পটলগাছের একদিকে থোকায় থোকায় ফুটেছে ফুল, অন্যদিকে দেখা মিলছে ছোট-বড় পটল। তার ক্ষেত থেকে পটল উত্তোলন করা যাবে এখনও দুই থেকে তিন মাস। অন্যান্য ফসল থেকে পটলে বেশি লাভ হওয়ায় ভবিষ্যতে আরো বেশি জমিতে পটলের চাষ করবেন তিনি।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর শার্শা উপজেলায় ৩৪৫ হেক্টর জমিতে পটলের চাষ হয়েছে। ফলন ও লাভ ভাল হওয়ায় এই উপজেলার কৃষকেরা পটল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

পটল চাষি রায়হান উদ্দিন জানান, এক সময় তার সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। বর্তমানে পটল চাষ করে তার সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। এখন তার সে অভাব কেটে গেছে। এবার এক বিঘা জমিতে পটল চাষ করেছেন তিনি। এই জমিতে পটল চাষ করে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে এ পর্যন্ত তিনি ৭০ হাজার টাকা পটল বিক্রি করেছেন।

তার ক্ষেত থেকে সপ্তাহে দুইবারে প্রায় ১৫-২০ মণ পটল তোলেন। উত্তোলন করা এ পটল তিনি উপজেলার সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার নাভারণ কাঁচামালের আড়তে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। অনেক সময় আবার পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকেই পটল নিয়ে যান। আবহাওয়া ভালো থাকলে তার এই জমি থেকে আরো এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার পটল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। অন্যান্য ফসল তুলনায় পটলে বেশি লাভ হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি জমিতে পটলের চাষ করবেন বলেও জানান তিনি।

আরো কয়েকজন পটলচাষি জানান, তারা দীর্ঘদিন যাবত পটল চাষের সাথে যুক্ত আছেন। পটল চাষে তাদের দ্বিগুণ লাভ হয়। এবছর আবহাওয়া ভাল থাকায় তারা বেশি ফলন পাচ্ছেন। বাজারে বেশ ভালো দামে বিক্রি করতে পারছেন। এ বছর পটল চাষে তারা লাভবান হবেন। সারা বছর চাহিদা থাকায় এবং অন্য ফসলের থেকে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে পটলের চাষ করবেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা জানান, পটল একটি জনপ্রিয় সবজি। সারা বছর ধরেই কম-বেশি পাওয়া যায়। চলতি মৌসুমে শার্শা উপজেলায় অনেক চাষি পটল চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। এ বছর শার্শা উপজেলায় ৩৪৫ হেক্টর জমিতে পটল চাষ করেছেন কৃষকরা। কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপদ সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, উপজেলা কৃষি অফিস সব সময় আধুনিক পদ্ধতিতে পটল উৎপাদন এবং পোকা-মাকড় ও রোগ দমনে আইপিএম পদ্ধতিসহ বিভিন্ন কার্যকর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার দিয়ে কৃষকদের ধানের পাশাপাশি সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:১০:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪
৩২ বার পড়া হয়েছে

পটল চাষে ভাগ্য বদল যশোরে শার্শার কৃষক রায়হান উদ্দিনের

আপডেট সময় ০৭:১০:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪

যশোরের শার্শায় পটল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন রায়হান উদ্দিন (৬০) নামে এক কৃষক। দীর্ঘদিন ধরে পটল চাষ করে অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন তিনি। গত কয়েক বছর আগেও তাদের সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকতো। পটল চাষ করে তিনি ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা ।

রায়হান উদ্দিন উপজেলার শার্শা ইউনিয়নের বেড়ী গ্রামের তোফাজ্জেল খন্দকারের ছেলে।

জানা যায়, কৃষক রায়হান ৩৩ শতক জমিতে মাচায় বোম্বাই জাতের পটলের চাষ করেছেন। সারিতে সারিতে রোপণ করা পটলগাছের একদিকে থোকায় থোকায় ফুটেছে ফুল, অন্যদিকে দেখা মিলছে ছোট-বড় পটল। তার ক্ষেত থেকে পটল উত্তোলন করা যাবে এখনও দুই থেকে তিন মাস। অন্যান্য ফসল থেকে পটলে বেশি লাভ হওয়ায় ভবিষ্যতে আরো বেশি জমিতে পটলের চাষ করবেন তিনি।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর শার্শা উপজেলায় ৩৪৫ হেক্টর জমিতে পটলের চাষ হয়েছে। ফলন ও লাভ ভাল হওয়ায় এই উপজেলার কৃষকেরা পটল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

পটল চাষি রায়হান উদ্দিন জানান, এক সময় তার সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। বর্তমানে পটল চাষ করে তার সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। এখন তার সে অভাব কেটে গেছে। এবার এক বিঘা জমিতে পটল চাষ করেছেন তিনি। এই জমিতে পটল চাষ করে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে এ পর্যন্ত তিনি ৭০ হাজার টাকা পটল বিক্রি করেছেন।

তার ক্ষেত থেকে সপ্তাহে দুইবারে প্রায় ১৫-২০ মণ পটল তোলেন। উত্তোলন করা এ পটল তিনি উপজেলার সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার নাভারণ কাঁচামালের আড়তে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। অনেক সময় আবার পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকেই পটল নিয়ে যান। আবহাওয়া ভালো থাকলে তার এই জমি থেকে আরো এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার পটল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। অন্যান্য ফসল তুলনায় পটলে বেশি লাভ হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি জমিতে পটলের চাষ করবেন বলেও জানান তিনি।

আরো কয়েকজন পটলচাষি জানান, তারা দীর্ঘদিন যাবত পটল চাষের সাথে যুক্ত আছেন। পটল চাষে তাদের দ্বিগুণ লাভ হয়। এবছর আবহাওয়া ভাল থাকায় তারা বেশি ফলন পাচ্ছেন। বাজারে বেশ ভালো দামে বিক্রি করতে পারছেন। এ বছর পটল চাষে তারা লাভবান হবেন। সারা বছর চাহিদা থাকায় এবং অন্য ফসলের থেকে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে পটলের চাষ করবেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা জানান, পটল একটি জনপ্রিয় সবজি। সারা বছর ধরেই কম-বেশি পাওয়া যায়। চলতি মৌসুমে শার্শা উপজেলায় অনেক চাষি পটল চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। এ বছর শার্শা উপজেলায় ৩৪৫ হেক্টর জমিতে পটল চাষ করেছেন কৃষকরা। কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপদ সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, উপজেলা কৃষি অফিস সব সময় আধুনিক পদ্ধতিতে পটল উৎপাদন এবং পোকা-মাকড় ও রোগ দমনে আইপিএম পদ্ধতিসহ বিভিন্ন কার্যকর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার দিয়ে কৃষকদের ধানের পাশাপাশি সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।