পানি বাড়লেই ঘর ছাড়তে হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের
মৌলভীবাজারের মনু নদে পানি বাড়লেই ঘর ছাড়তে হয় সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের মাইজপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মনু নদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকের ঘরেই হাঁটুসমান পানি প্রবেশ করেছে। চলতি বর্ষায় আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদেরকে তিনবার ঘর ছাড়তে হয়েছে। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৮৭টি পরিবারের বসবাস।
৩ জুলাই (বুধবার) সকালে মাইজপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, মনু নদের পাড় ঘেঁষে গড়ে তোলা এই প্রকল্পের প্রায় সব ঘরেই কমবেশি পানি উঠেছে।
সকালবেলা ঘরছাড়া অনেকে মনু নদির প্রতিরক্ষা বাঁধের ওপর বসে আছেন। পানিতে ডুবে আছে সবার ঘর। কয়েক জনকে দেখা গেল, পানি ভেঙে ঘর থেকে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে আসছেন। এ রকম অনেকেই যা পেরেছেন, ঘর থেকে বের করে নিয়ে এসেছেন। অনেকে ঘর ছাড়তে চাননি। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন ঘরে থাকার।
কয়েকজন ভুক্তভোগীরা জানান, এ নিয়ে আমাদের দুইবার ঘর ছাড়তে হয়েছে, ঘরে বুকপানি। আমাদের প্রত্যেকটি পরিবারের পাচ থেকে ছয়জন করে আছি। লেপ-তোশক নষ্ট হয়েছে। হোটেল থেকে ক্রয় করে খেতে হচ্ছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক বাসিন্দা আফজল বলেন, আমাদেরকে নদীর পাড়ে আবাসন দেওয়া হয়েছে। এটা কোন সুরক্ষিত জায়গা না, নদীর পানি বাড়লেই ঘরের ভেতর চলে আসে। আরেকটু উঁচু জায়গায় বানিয়ে দিলে ভালো হতো।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন চৌধুরী বলেন, এই বন্যায় তো কিছু সম্ভব না। শুষ্ক মৌসুমে সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিভিন্ন স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার দুপুর ১২টার তথ্য অনুযায়ী, মনু নদ রেলওয়ে ব্রিজের কাছে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ও চাঁদনীঘাটে ৫০ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদী শেরপুরে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, পানি নামছে। উজানে নতুন করে পানি ঢুকছে না। তবে চাঁদনীঘাটে একটু বাড়বে, যেহেতু এদিক দিয়ে পানি যাবে।