ঢাকা ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নবীগঞ্জে পাখি শিকারীর কাছ থেকে উদ্ধার করা বন্য বালিহাস পাখি অবমুক্তি,পাখি শিকারীকে অর্থদন্ড Logo আবারও প্রকৃতিপ্রেমীদের হাতছানি দিচ্ছে চুনারুঘাটের শাপলা বিল Logo বাহুবল শিশুদের ঝগড়া থেকে বড়দের সংঘর্ষ, আহত ৫০ Logo হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান, ৯ জনকে কারাদন্ড Logo হবিগঞ্জ পৌরসভার কোটি টাকার অব্যবহৃত যানে গজিয়েছে গাছ Logo দুটি স্পেশাল ট্রেন চালুসহ ৯ দফা দাবীতে শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনে মানববন্ধন পালন Logo হবিগঞ্জ থেকে প্রতিদিন মিলবে আরও ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস Logo নবীগঞ্জে পিতার দায়ের কোপে মেয়ে খুন,ঘাতক পিতা আটক। Logo হবিগঞ্জে বাস উল্টে যুবকের মৃত্যু, আহত ৫০ Logo তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে শায়েস্তাগঞ্জে ফুটবল টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠিত

বৃষ্টির অভাবে দামুড়হুদায় পাট পচানো নিয়ে বিপাকে কৃষকরা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চলছে বর্ষাকাল, তবুও দেখা মিলছেনা বৃষ্টিপাত। এ কারণে পাট জাগ দিতে পারছেন না দামুড়হুদা উপজেলার কৃষকরা। এ বছর বর্ষাকালের আষাঢ় পেরিয়ে শ্রবাণের মাঝামাঝিতেও নেই বৃষ্টি। প্রচন্ড গরম ও রোদের তাপে পাটের গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে যাতে করে ফলন ভালো হবে না ।

এ অবস্থায় পাট কেটে জমিতে কেউবা বিল-জলাশয়ের কাছে রেখে দিচ্ছেন। যাতে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি হলে পাট জাগ দিতে পারেন। দামুড়হুদা উপজেলায় বৃষ্টির অভাবে নদীনালা, বিলখাল, পুকুরসহ জলাশয়গুলো পানি শূন্য থাকায় কৃষকেরা পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না। অনেক কৃষক পাট কেটে জমিতেই ফেলে রেখেছেন।

এখন পাট কাটার ভরা মৌসুম হলেও কৃষকরা পানির অভাবে তা কাটতে দেরী করছে। এ অবস্থায় কৃষকেরা পড়েছেন মহাবিপাকে । কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এ বছর দামুড়হুদা উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ২ শত ৭০ হেক্টর জমিতে। এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় ডোবায় পানি নেই। তাই পাট জাগ দিতে পারেননি অনেক কৃষক। মাঠে ফেলে রাখা পাটের আঁশও শুকিয়ে যাচ্ছে। পাট জাগ দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

উপজেরায় এ বছর পাট পচানোর পানির অভাবে এবার চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টি না হওয়ায় হতাশ পাট চাষিরা। সাধারণত আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে খাল, বিল, নদী, নালা পানিতে ভরপুর থাকে। কিন্তু পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাট জাগ দেওয়ার মতো পানি নেই খাল-বিলে। বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, চাষিরা পাট কেটে জমির পাশে বা রাস্তার ধারে, খাল-বিল বা জলাশয়ের পাশে স্তুপকরে রেখেছেন। কেউ আবার অল্প পানিতেই পাটের ওপর মাটি চাপা দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। শত শত কৃষকরা পাট জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না। এ কারণে অনেকের পাট ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। কেউ কেউ ভৈরব নদীতে ২০-২৫ কিলোমিটার দূরে ভ্যান ও ট্রলিতে করে নদীতে নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। এতে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে পাট চাষিদের।

উপজেলার নাটুদা ইউনিয়নের চন্দ্রবাস গ্রামের চাষি আব্দুল্লাহ জানান, এবছর ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না। ক্ষেত থেকে পাটগাছ কেটে দূরে কোথাও নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। এর ফলে অতিরিক্ত শ্রমিক খরচ লাগছে।

দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গার কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন এ বছর বৃষ্টিপাত তেমন একটা না হওয়ায় মাঠ-ঘাট প্রায় পানি শূন্য। এখন পাট কাটার উপযোগী হলেও বৃষ্টির পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। চলতি বছর প্রতি বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনের জন্য ১১-১২ হাজার টাকা খরচ হয়।

উপজেলার ধান্যঘরা গ্রামের পাট চাষি হাসান আলী বলেন, ভরা বর্ষায় বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতেই পাট নষ্ট হচ্ছে।

উপজেলার কুড়–লগাছির সীমান্তবর্তী চাকুলিয়া গ্রামের আমির হেসেন বলেন, এ বছর বৃষ্টির পানির অভাবে পাট জাগ দিতে সমস্যা হচ্ছে। এ সময় আমন ধান রোপন ও পাট জাগ দেয়ার জন্য বৃষ্টির পানির খুবই প্রয়োজন। এ বছর ভরা বর্ষাকালেও বৃষ্টিপাত হয়নি।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, চাষিরা পাট কেটে জাগ দিতে শুরু করেছেন। কোথাও কোথাও পাট পচানোর পানির অভাবে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তবে আমাদের কাছে উপজেলার কোন কৃষক এখনো কেহ বলেনি তবে আসলে অবশ্যই আমরা চাষিদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করি এমাসেই হতো বৃষ্টি হবে আর অসুবিধা হবে না। পাশাপাশি অর্থকরী ফসল হিসেবে পাট অন্যতম হওয়ায় সেটাকে বাঁচিয়ে রাখতে কৃষকদের আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়াসহ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৯:৩৭:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
১৩১ বার পড়া হয়েছে

বৃষ্টির অভাবে দামুড়হুদায় পাট পচানো নিয়ে বিপাকে কৃষকরা

আপডেট সময় ০৯:৩৭:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

চলছে বর্ষাকাল, তবুও দেখা মিলছেনা বৃষ্টিপাত। এ কারণে পাট জাগ দিতে পারছেন না দামুড়হুদা উপজেলার কৃষকরা। এ বছর বর্ষাকালের আষাঢ় পেরিয়ে শ্রবাণের মাঝামাঝিতেও নেই বৃষ্টি। প্রচন্ড গরম ও রোদের তাপে পাটের গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে যাতে করে ফলন ভালো হবে না ।

এ অবস্থায় পাট কেটে জমিতে কেউবা বিল-জলাশয়ের কাছে রেখে দিচ্ছেন। যাতে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি হলে পাট জাগ দিতে পারেন। দামুড়হুদা উপজেলায় বৃষ্টির অভাবে নদীনালা, বিলখাল, পুকুরসহ জলাশয়গুলো পানি শূন্য থাকায় কৃষকেরা পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না। অনেক কৃষক পাট কেটে জমিতেই ফেলে রেখেছেন।

এখন পাট কাটার ভরা মৌসুম হলেও কৃষকরা পানির অভাবে তা কাটতে দেরী করছে। এ অবস্থায় কৃষকেরা পড়েছেন মহাবিপাকে । কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এ বছর দামুড়হুদা উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ২ শত ৭০ হেক্টর জমিতে। এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় ডোবায় পানি নেই। তাই পাট জাগ দিতে পারেননি অনেক কৃষক। মাঠে ফেলে রাখা পাটের আঁশও শুকিয়ে যাচ্ছে। পাট জাগ দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

উপজেরায় এ বছর পাট পচানোর পানির অভাবে এবার চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টি না হওয়ায় হতাশ পাট চাষিরা। সাধারণত আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে খাল, বিল, নদী, নালা পানিতে ভরপুর থাকে। কিন্তু পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাট জাগ দেওয়ার মতো পানি নেই খাল-বিলে। বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, চাষিরা পাট কেটে জমির পাশে বা রাস্তার ধারে, খাল-বিল বা জলাশয়ের পাশে স্তুপকরে রেখেছেন। কেউ আবার অল্প পানিতেই পাটের ওপর মাটি চাপা দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। শত শত কৃষকরা পাট জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না। এ কারণে অনেকের পাট ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। কেউ কেউ ভৈরব নদীতে ২০-২৫ কিলোমিটার দূরে ভ্যান ও ট্রলিতে করে নদীতে নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। এতে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে পাট চাষিদের।

উপজেলার নাটুদা ইউনিয়নের চন্দ্রবাস গ্রামের চাষি আব্দুল্লাহ জানান, এবছর ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না। ক্ষেত থেকে পাটগাছ কেটে দূরে কোথাও নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। এর ফলে অতিরিক্ত শ্রমিক খরচ লাগছে।

দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গার কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন এ বছর বৃষ্টিপাত তেমন একটা না হওয়ায় মাঠ-ঘাট প্রায় পানি শূন্য। এখন পাট কাটার উপযোগী হলেও বৃষ্টির পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। চলতি বছর প্রতি বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনের জন্য ১১-১২ হাজার টাকা খরচ হয়।

উপজেলার ধান্যঘরা গ্রামের পাট চাষি হাসান আলী বলেন, ভরা বর্ষায় বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতেই পাট নষ্ট হচ্ছে।

উপজেলার কুড়–লগাছির সীমান্তবর্তী চাকুলিয়া গ্রামের আমির হেসেন বলেন, এ বছর বৃষ্টির পানির অভাবে পাট জাগ দিতে সমস্যা হচ্ছে। এ সময় আমন ধান রোপন ও পাট জাগ দেয়ার জন্য বৃষ্টির পানির খুবই প্রয়োজন। এ বছর ভরা বর্ষাকালেও বৃষ্টিপাত হয়নি।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, চাষিরা পাট কেটে জাগ দিতে শুরু করেছেন। কোথাও কোথাও পাট পচানোর পানির অভাবে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তবে আমাদের কাছে উপজেলার কোন কৃষক এখনো কেহ বলেনি তবে আসলে অবশ্যই আমরা চাষিদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করি এমাসেই হতো বৃষ্টি হবে আর অসুবিধা হবে না। পাশাপাশি অর্থকরী ফসল হিসেবে পাট অন্যতম হওয়ায় সেটাকে বাঁচিয়ে রাখতে কৃষকদের আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়াসহ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।