ঢাকা ১২:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মাধবপুরে চালক বিশ্রামাগার চালুর অপেক্ষায় ১৬ মাস Logo সমবায় দিবসে শায়েস্তাগঞ্জে র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo দুটি স্পেশাল ট্রেন চালুসহ ৮ দফা বাস্তাবায়নের দাবিতে শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে মানববন্ধন Logo প্রবাসে ব্যবসার টাকা নিয়ে প্রতারণা শায়েস্তাগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের Logo নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দিয়ে ইসির নতুন নীতিমালা Logo নির্বাচনের আগে গণভোট অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক: মির্জা ফখরুল Logo হবিগঞ্জ-১: বিএনপিতে প্রার্থী জট, মনোনয়ন দৌড়ে প্রবাসীরাও Logo ৫২৩ বছরের ঐতিহ্য শায়েস্তাগঞ্জ দাউদনগর জামে মসজিদ Logo নবীগঞ্জে পাখি শিকারীর কাছ থেকে উদ্ধার করা বন্য বালিহাস পাখি অবমুক্তি,পাখি শিকারীকে অর্থদন্ড Logo আবারও প্রকৃতিপ্রেমীদের হাতছানি দিচ্ছে চুনারুঘাটের শাপলা বিল

মাধবপুরে চালক বিশ্রামাগার চালুর অপেক্ষায় ১৬ মাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাধবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেজুড়ায় যমুনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের অপর দিকে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক চালক বিশ্রামাগার প্রকল্পটি এখনো চালু হয়নি। ভবন নির্মাণ শেষ হলেও টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় পুরো প্রকল্পটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ চালকদের নিরাপদ বিশ্রামের জন্য এই প্রকল্পটি হাতে নেয়, যার লক্ষ্য ছিল চালকদের দীর্ঘপথের ক্লান্তি কমানো ও সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করা। প্রায় সাত একর জায়গাজুড়ে নির্মিত এই কমপ্লেক্সে রয়েছে ডরমিটরি, বিশ্রামকক্ষ, আধুনিক টয়লেট, পার্কিং স্পেস, খাবারের ক্যান্টিন ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা।

স্থানীয়রা জানান, প্রকল্পটি চালু হলে দুর্ঘটনা কমার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতেও গতি আসত, দোকান, হোটেল ও সার্ভিস পয়েন্টে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো। কিন্তু দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় এই সম্ভাবনা এখন অনিশ্চিত। প্রকল্পটি শুরু হয় প্রায় তিন বছর আগে। প্রথম দিকে কাজের গতি ছিল সন্তোষজনক। ২০২৪ সালের জুন মাসে মূল ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হলেও এরপর থেকে প্রায় ১৬ মাস ধরে টেন্ডার প্রক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে পুরো প্রকল্পটি।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, “প্রথমে খুব দ্রুত কাজ হচ্ছিল, কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার পরও প্রায় ১৬ মাস ধরে চালু হচ্ছে না। সরকারের টাকায় তৈরি ভবনগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।” হবিগঞ্জ চালক ইউনিয়নের সভাপতি আবু মিয়া বলেন, “এই প্রকল্পটি ছিল আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। মহাসড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলে, চালকরা ক্লান্ত হয়ে রাস্তার পাশে বা ট্রাকেই ঘুমিয়ে পড়েন—এতে দুর্ঘটনা ঘটে। বিশ্রামাগার চালু হলে দুর্ঘটনা অনেক কমত, অনেক জীবন বাঁচানো যেত। এখন এই জায়গাটা পরিত্যক্ত পড়ে আছে, রাতে নিরাপত্তা নেই, চুরি-ছিনতাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এটি চালু করা হোক।” ট্রাক চালক বেনু মিয়া বলেন, “এই বিশ্রামাগারটি ছিল চালকদের আশার জায়গা। দিনে রাতে গাড়ি চালিয়ে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি, কোথাও বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ নেই। এখানে সেই সুযোগ তৈরি হয়েছিল, কিন্তু এখন ভবনটা ধুলায় ঢাকা পড়ে আছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী সেকশন অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, “২০২৪ সালের জুনে ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এরপর থেকে প্রায় ১৬ মাস ধরে টেন্ডার প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা চলছে। টেন্ডার হলে যিনি কাজ পাবেন তারা ভবন দেখাশুনা ও ভাড়া দিবেন। যাতে তাড়াতাড়ি টেন্ডার হয় আমরা চেষ্টা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ বিন কাশেম বলেন, “এই বিশ্রামাগারটি চালু হলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে, চালকদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হবে। আমি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখব, যাতে ভবনটি দ্রুত চালু করা যায়। সরকারি অর্থে নির্মিত অবকাঠামো কোনো অবস্থাতেই অচল পড়ে থাকা উচিত নয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সওজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব, যেন টেন্ডার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১২:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫
১ বার পড়া হয়েছে

মাধবপুরে চালক বিশ্রামাগার চালুর অপেক্ষায় ১৬ মাস

আপডেট সময় ১২:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

মাধবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেজুড়ায় যমুনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের অপর দিকে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক চালক বিশ্রামাগার প্রকল্পটি এখনো চালু হয়নি। ভবন নির্মাণ শেষ হলেও টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় পুরো প্রকল্পটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ চালকদের নিরাপদ বিশ্রামের জন্য এই প্রকল্পটি হাতে নেয়, যার লক্ষ্য ছিল চালকদের দীর্ঘপথের ক্লান্তি কমানো ও সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করা। প্রায় সাত একর জায়গাজুড়ে নির্মিত এই কমপ্লেক্সে রয়েছে ডরমিটরি, বিশ্রামকক্ষ, আধুনিক টয়লেট, পার্কিং স্পেস, খাবারের ক্যান্টিন ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা।

স্থানীয়রা জানান, প্রকল্পটি চালু হলে দুর্ঘটনা কমার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতেও গতি আসত, দোকান, হোটেল ও সার্ভিস পয়েন্টে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো। কিন্তু দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় এই সম্ভাবনা এখন অনিশ্চিত। প্রকল্পটি শুরু হয় প্রায় তিন বছর আগে। প্রথম দিকে কাজের গতি ছিল সন্তোষজনক। ২০২৪ সালের জুন মাসে মূল ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হলেও এরপর থেকে প্রায় ১৬ মাস ধরে টেন্ডার প্রক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে পুরো প্রকল্পটি।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, “প্রথমে খুব দ্রুত কাজ হচ্ছিল, কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার পরও প্রায় ১৬ মাস ধরে চালু হচ্ছে না। সরকারের টাকায় তৈরি ভবনগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।” হবিগঞ্জ চালক ইউনিয়নের সভাপতি আবু মিয়া বলেন, “এই প্রকল্পটি ছিল আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। মহাসড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলে, চালকরা ক্লান্ত হয়ে রাস্তার পাশে বা ট্রাকেই ঘুমিয়ে পড়েন—এতে দুর্ঘটনা ঘটে। বিশ্রামাগার চালু হলে দুর্ঘটনা অনেক কমত, অনেক জীবন বাঁচানো যেত। এখন এই জায়গাটা পরিত্যক্ত পড়ে আছে, রাতে নিরাপত্তা নেই, চুরি-ছিনতাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এটি চালু করা হোক।” ট্রাক চালক বেনু মিয়া বলেন, “এই বিশ্রামাগারটি ছিল চালকদের আশার জায়গা। দিনে রাতে গাড়ি চালিয়ে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি, কোথাও বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ নেই। এখানে সেই সুযোগ তৈরি হয়েছিল, কিন্তু এখন ভবনটা ধুলায় ঢাকা পড়ে আছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী সেকশন অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, “২০২৪ সালের জুনে ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এরপর থেকে প্রায় ১৬ মাস ধরে টেন্ডার প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা চলছে। টেন্ডার হলে যিনি কাজ পাবেন তারা ভবন দেখাশুনা ও ভাড়া দিবেন। যাতে তাড়াতাড়ি টেন্ডার হয় আমরা চেষ্টা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ বিন কাশেম বলেন, “এই বিশ্রামাগারটি চালু হলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে, চালকদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হবে। আমি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখব, যাতে ভবনটি দ্রুত চালু করা যায়। সরকারি অর্থে নির্মিত অবকাঠামো কোনো অবস্থাতেই অচল পড়ে থাকা উচিত নয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সওজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব, যেন টেন্ডার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়।