ঢাকা ০২:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শায়েস্তাগঞ্জে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনের মাস পেরোনোর আগেই ত্রুটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

শায়েস্তাগঞ্জে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য স্থাপন করা ‘বায়োমেট্রিক’ ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেশিন স্থাপনের মাস পেরানোর আগেই ত্রুটি দেখা দিয়েছে অনেক মেশিনে।

এছাড়াও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণেরও কম দামে নিম্ন মানের মেশিন সরবরাহেরও অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জানা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যথাযথ উপস্থিতি ও সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া নিশ্চিত করতে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন।

পরে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এডিপির অর্থায়নে ৩২টি ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন স্থাপনের জন্য ৫ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। মেশিন স্থাপনের কাজ পায় সাদী ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রত্যেকটি মেশিনের মূল্য ভ্যাটসহ ১৮ হাজার টাকা ধরা হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তকঞবপড় ক৪০ মডেলের মেশিন সরবরাহ করেছে।

যার বাজার মুল্য ৬০০০-৬৩০০ টাকার মধ্যে। নিম্নমানের মেশিন সরবরাহ করায় অল্প দিনেই দেখা দিয়েছে নানান ত্রুটি। উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার ২৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেশিন স্থাপন করা হলেও এখন পর্যন্ত সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেশিনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। সেগুলি হল লাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জগতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হামুয়া তাজুল ইসলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারোলাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুদিয়াখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিরামচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে স্থাপন করা ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন ২টি বন্ধ হয়ে আছে। কাজিরগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুজলা বসাক জানান, জুনের ১৫ তারিখ থেকে ফিঙ্গার দেওয়া শুরু করেছিলেন তারা। কিন্তু কিছুদিন ফিঙ্গার দেওয়ার পর মেশিন গুলো নষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি তারা শিক্ষা অফিসারকে অবগত করেছেন। একই অভিযোগ লাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষাকা সাদিয়া মাহমুদ ঝুমা’রও। তিনি জানান- দ্রুত মেশিনগুলো সচল করার ব্যবস্থা করলে ভালো হয়।

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহফুজ মিয়া বলেন, আমাদের ২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হাজিরা মেশিন স্থাপনের এক মাসের মধ্যেই বেশ কয়েকটি স্কুলের সমস্যা দেখা দেয়। যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেগুলো স্থাপন করেছে তারা এখন পর্যন্ত আমাদের সাথে কোন সমন্বয় করেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সাদী টেডার্স এর স্বত্বাধিকারী ফারুক মিয়া জানান, মেশিন কেনায় কোন অনিয়ম হয়নি। প্রতিটি মেশিনই ভালো মেশিন দেয়া হয়েছে।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, এখানে শুধু ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিনের খরচ ধরা হয়নি। ইনস্টলেশন খরচ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেট করে দেওয়ার খরচও ধরা হয়েছে। মেশিনগুলোর এক বছরের ওয়ারেন্টি আছে। যে সমস্ত মেশিনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে সেগুলি মেরামত অথবা পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১২:৩১:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪
৯ বার পড়া হয়েছে

শায়েস্তাগঞ্জে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনের মাস পেরোনোর আগেই ত্রুটি

আপডেট সময় ১২:৩১:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

শায়েস্তাগঞ্জে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য স্থাপন করা ‘বায়োমেট্রিক’ ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেশিন স্থাপনের মাস পেরানোর আগেই ত্রুটি দেখা দিয়েছে অনেক মেশিনে।

এছাড়াও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণেরও কম দামে নিম্ন মানের মেশিন সরবরাহেরও অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জানা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যথাযথ উপস্থিতি ও সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া নিশ্চিত করতে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন।

পরে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এডিপির অর্থায়নে ৩২টি ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন স্থাপনের জন্য ৫ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। মেশিন স্থাপনের কাজ পায় সাদী ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রত্যেকটি মেশিনের মূল্য ভ্যাটসহ ১৮ হাজার টাকা ধরা হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তকঞবপড় ক৪০ মডেলের মেশিন সরবরাহ করেছে।

যার বাজার মুল্য ৬০০০-৬৩০০ টাকার মধ্যে। নিম্নমানের মেশিন সরবরাহ করায় অল্প দিনেই দেখা দিয়েছে নানান ত্রুটি। উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার ২৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেশিন স্থাপন করা হলেও এখন পর্যন্ত সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেশিনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। সেগুলি হল লাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জগতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হামুয়া তাজুল ইসলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারোলাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুদিয়াখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিরামচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে স্থাপন করা ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন ২টি বন্ধ হয়ে আছে। কাজিরগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুজলা বসাক জানান, জুনের ১৫ তারিখ থেকে ফিঙ্গার দেওয়া শুরু করেছিলেন তারা। কিন্তু কিছুদিন ফিঙ্গার দেওয়ার পর মেশিন গুলো নষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি তারা শিক্ষা অফিসারকে অবগত করেছেন। একই অভিযোগ লাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষাকা সাদিয়া মাহমুদ ঝুমা’রও। তিনি জানান- দ্রুত মেশিনগুলো সচল করার ব্যবস্থা করলে ভালো হয়।

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহফুজ মিয়া বলেন, আমাদের ২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হাজিরা মেশিন স্থাপনের এক মাসের মধ্যেই বেশ কয়েকটি স্কুলের সমস্যা দেখা দেয়। যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেগুলো স্থাপন করেছে তারা এখন পর্যন্ত আমাদের সাথে কোন সমন্বয় করেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সাদী টেডার্স এর স্বত্বাধিকারী ফারুক মিয়া জানান, মেশিন কেনায় কোন অনিয়ম হয়নি। প্রতিটি মেশিনই ভালো মেশিন দেয়া হয়েছে।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, এখানে শুধু ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিনের খরচ ধরা হয়নি। ইনস্টলেশন খরচ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেট করে দেওয়ার খরচও ধরা হয়েছে। মেশিনগুলোর এক বছরের ওয়ারেন্টি আছে। যে সমস্ত মেশিনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে সেগুলি মেরামত অথবা পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।