শায়েস্তাগঞ্জ অলিপুর পুলিশ ক্যাম্প চালু হওয়ায় শিল্প এলাকার বেড়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা
সিলেট বিভাগে প্রবেশদ্বার হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর এলাকায় হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ক্যাম্প চালু হওয়ায় অল্প দিনেই শিল্প এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রমিকরা নিরাপদে চলাচল করতে পারছে। মাদক ব্যবসাসহ অসামাজিক কার্যকলাপও হ্রাস পাচ্ছে।
অলিপুর এলাকায় ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে যানজটের কারণে সাধারণ মানুষ, পথচারী, পরিবহন ও ব্যবসায়ীদের ভোগান্তির কারণ ছিল। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অলিপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক এলাকায় যানজটের কারণে যাত্রী ও পরিবহন চালকদের ভোগান্তি পোহাতে হতো। পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনে মাদক ব্যবসায়ীসহ অপরাধিরাও চলে গেছে আত্মগোপনে।
শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ২৪ ঘন্টা চেক পোস্ট কার্যক্রম চালাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ। এতে চোরাচালান ও ফিটনেস বিহীন গাড়ি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছর জুলাই মাসে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা প্রসিকিউশন দেয়া হয়েছিল ১০৭টি। অলিপুরে আগস্ট মাসে পুলিশ ক্যাম্প উদ্বোধন হওয়ায় প্রসিকিউশনের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ১৬৯টিতে। এছাড়া শ্রমিক নিরাপত্তা, পথচারী নিরাপত্তা, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা বেড়েছে। অপরদিকে মাদক বিক্রি সহ অপরাধ কার্যক্রম হ্রাস পেয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ক্যাম্প চালুর পর থেকে নিরাপদ হয়েছে শিল্প এলাকা। প্রাণ আর এফ এল, বাদশা গ্রুপ, স্কয়ার ড্যানিং, যমুনা গ্রুপ, আর কে সিরামিক, স্টার সিরামিক, স্টার পরসোলিন সহ অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ দুটি উপজেলায়। এ সব শিল্প প্রতিষ্ঠানে দু’লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মরত।
প্রাণ আর.এফ.এল এর শ্রমিক সাহিদুল ইসলাম সহ কয়েকজন শ্রমিক বলেন, আগে মাস শেষে বেতন নিয়ে নারী-পুরুষ শ্রমিকরা বাড়ি বা বাসায় ফিরতে গিয়ে অনেকে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়তো। এখন শ্রমিকরা অনেকটা নিরাপত্তা বোধ করছে। শিল্প মালিকরাও নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন। অলিপুর বেশ কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, দুটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পর এলাকায় অনেক শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এসেছে। ব্যবসায়ী রতন ও নুরপুর ইউনিয়নে আলগাপুর এলাকার রাজমিস্ত্রী ঠিকাদার মোঃ শাহাবুদ্দিন জানান, আমরা বহুদিন ধরে এখানে পুলিশ ক্যাম্প চেয়েছিলাম। অবশেষে তা বাস্থবায়ন হওয়ায় এখন সবাই স্বস্তিতে আছি।
হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিওনের পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম বলেন, মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় মহাসড়কে প্রবেশদার। প্রতিদিন হাজার হাজার পথযাত্রী, হাজার হাজার যাত্রী, হাজার হাজার শ্রমিক ও শত শত পণ্যবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী যানবাহন এই মহাসড়ক ব্যবহার করে। মহাসড়ক ও শিল্প এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই পুলিশ ক্যাম্প ছিল সময়ের দাবি। উদ্বোধনের পর থেকে ইতিবাচক ভালো ফল পাচ্ছি। এখন অনেকটা যানজট কমেছে। চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রসিকিউশন বেড়েছে এবং শ্রমিকরাও নিরাপদ বোধ করছেন। স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ীরা অনেক সহযোগিতা করছে। যা অনেক প্রশংসনীয়। বর্তমানে অলিপুর হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্প দায়িত্বে রয়েছেন নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী সহ অনেক পুলিশ সদস্য।