শায়েস্তাগঞ্জ সুতাং নদী থেকে অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুতাং নদী থেকে বালু খেকোরা অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলন ও পাচার করে যাচ্ছে। সরকারি ইজারা ছাড়াই প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত নৌকা যোগে বালু তুলে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। এতে নদীর দুই তীর ভাঙন, কৃষিজমি ও চা-বাগানের জমি হুমকির মুখে পড়ছে।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে নুরপুর ইউনিয়ন কেন্দ্রিক একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এই বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিটি নৌকায় উত্তোলিত বালুর বাজার মূল্য ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর সেই নৌকা নদী থেকে তুলতে হলে সিন্ডিকেটকে দিতে হয় ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা কমিশন। টাকা না দিলে নৌকা ঢুকতে দেওয়া হয় না।
প্রতিদিন সুতাং রেলব্রিজ, সুতাং বাজার ব্রিজ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মদনপুর ব্রিজ, পুরাসুন্দা, আলগাপুর, নোয়াগাঁও, শ্রীরামপুর, লাদিয়া, মররা, কাজিরগাঁও ব্রিজসহ বিভিন্ন স্পট থেকে শতাধিক নৌকায় বালু পাচার হচ্ছে। বালু তুলতে কোদাল, বেলচা ও বালতি ব্যবহার করা হলেও এর পেছনে রয়েছে সংগঠিত একটি শক্তিশালী চক্র। তারা স্পটে পাহারাদার বসিয়ে রেখেছে। প্রশাসনের উপস্থিতির খবর মোবাইলে জানিয়ে দেয়। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও মূল হোতারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
পুরাসুন্দা এলাকার এক পথচারী জানান, “আমাদের বাবার আমল থেকে বালু তোলা হতো, তবে এখন যেভাবে দিনের পর দিন পাচার হচ্ছে, তাতে নদী গর্ভে যাচ্ছে জমি ও বসতবাড়ি। মাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকার বালু পাচার হচ্ছে। কিন্তু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।”
স্থানীয়রা জানান, পুরাসুন্দা গ্রামের মোতালিব নামের এক ব্যক্তির ছত্রছায়ায় বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব হোম দাস জানান, “বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি। সুতাং নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেবে না।”
স্থানীয়রা বলছেন, যদি সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের আইনের আওতায় আনা না হয়, তবে সুতাং নদীর তীরবর্তী গ্রাম, কৃষিজমি ও চা-বাগান ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।