সাবেক এমপি আবু জাহিরসহ ২শ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা
হবিগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত রিপন শীলকে হত্যার অভিযোগে হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মোঃ আবু জাহিরকে প্রধান আসামি করে ৫৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগষ্ট) দুপুরে নিহত রিপন শীলের মা রুবী রানী শীল বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি শহরের অনন্তপুর এলাকার রতন শীলের স্ত্রী। মামলায় অন্যান্য আসামীরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আলমগীর চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌর সভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল, লাখাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদ, বানিয়াচং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন খান, ১৩নং মন্দরী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সামছুল হক, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সুমন, হবিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির প্রেসিডেন্ট ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান শামীম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী বুলবুল ও সুলতান মাহমুদ, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, উমেদনগর এলাকার বাসিন্দা জেলা যুবলীগ নেতা আঃ হান্নান ও আলাই চৌধুরী, রিচি গ্রামের মহসিন মিয়া, বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ, বহুলা গ্রামের এডভোকেট আজিজুর রহমান সজল, সদর উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক রনি আহমেদ, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী, বানিয়াচং উপজেলা যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান খান তুহিন, জেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ছালেক মিয়া, হবিগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর জাহির মিয়া, লস্করপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল জলিল, লস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান হিরো, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুর রহমান রবিন, ব্রাম্মনডুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদিল হোসেন জজ মিয়া, বানিয়াচং উপজেলার নোয়াপাথারিয়া গ্রামের ডিপজল, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি সেবুল মিয়া, হবিগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর ও হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গৌতম কুমার রায়, হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রæপের সাধারণ সম্পাদক শংখ শুভ্র রায়, সাবেক এমপি আবু জাহিরের ব্যক্তিগত সহকারী সুদীপ রায়, কোর্ট স্টেশন এলাকার মোস্তফা কামাল সংগ্রাম, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আশিক মিয়া, সদর উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আহমেদ হারুন, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান আরিফ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান, মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা পংকজ সাহা, হবিগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন কলি, সাবেক এমপি আবু জাহিরের ছেলে রিফাত জামিল, শায়েস্তানগর এলাকার বাবুল মিয়া, কালীগাছতলা এলাকার শাহিন মিয়া, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান, শায়েস্তানগর এলাকার রাজু আলী সুমন, কাশিপুর গ্রামের শাহ জানে আলম জনি, বড় বহুলার নাজমুল হুদা বাদশা, তেঘরিয়া গ্রামের আলী আশরাফ মামুন, বড় বহুলা গ্রামের এমদাদুর রহমান সোহেল, অনন্তপুর এলাকার মাহফুজ মিয়া, হবিগঞ্জ জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক নিলাদ্রি শেখর পুরকায়স্থ টিটু, শায়েস্তানগর এলাকার সাইকুল মিয়া, পশ্চিম ভাদৈ গ্রামের জয়নাল মিয়া, বড় বহুলার আব্দুল আজিজ, আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা তাতীলীগের সাধারণ সম্পাদক সর্দার জসিম ও পশ্চিম এড়ালিয়ার কবির হোসেন। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলা ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৪ আগষ্ট দুপুর সাড়ে ১২ টায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা শহরের টাউন হলের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ আবু জাহির, মন্দরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সামছুল হক, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কাশের চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিমের তত্ত¡াবধানে ও উস্কানিতে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ লাঠি সোটা ও অগ্নেয়াস্থ নিয়ে জড়ো হয়। পরে ১, ২ ও ৩নং আসামীর হুকুমে উল্লেখিত আসামীরা ছাত্র-জনতার সমাবেশে হামলা করে। এতে সংঘর্ষ বাধে। কয়েকঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অনন্তপুর এলাকার রতন শীলের ছেলে রিপন শীল গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক পথচারী ও শিক্ষার্থীরা আহত হন।
হবিগঞ্জ সদর মডল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম জানান, হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি মোঃ আবু জাহিরকে প্রধান আসামী করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২শ জনকে আসামী করা হয়েছে।