ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীমান্ত দিয়ে ১ মাসে ৩৩৭ জনকে পুশইন করলো বিএসএফ

অলি আহমদ মাহিন মৌলভীবাজার প্রতিনিধি,

মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ১ মাসে ৩৩৭ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যেই অবৈধভাবে এসব বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।

অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে জেলার বড়লেখা উপজেলা দিয়ে। উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর, দক্ষিণ শাহবাজপুর ও পাল্লথল সীমান্ত, জুড়ী উপজেলার রাজকি সীমান্ত, কুলাউড়া উপজেলার মুরইছড়া সীমান্ত, কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই, বাগীছড়া ও চাম্পাছড়া সীমান্ত দিয়ে এসব অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।

৭ মে থেকে অবৈধভাবে মৌলভীবাজার জেলায় পুশইনের ঘটনায় ৩৩৭জন বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন। তার মধ্যে বড়লেখা উপজেলা দিয়ে ২৫১ জন, জুড়ী উপজেলা দিয়ে ১০ জন, কুলাউড়া উপজেলা দিয়ে ২১ জন ও কমলগঞ্জ উপজেলা দিয়ে ৫৫ জন। এছাড়াও আরও কয়েক শতাধিক লোক সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করলেও বিজিবি বা স্থানীয় প্রশাসন তাদের আটক করতে পারেনি।

আটককৃতদের মধ্যে পুরুষ, মহিলা ও শিশু ছিল। এদের বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল, চট্রগ্রাম, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।

কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শীব নারায়ন শীল জানান, আমরা যাদের আটক করি তাদের কাছে জানতে পারি তারা দীর্ঘ পাঁচ বছর থেকে ভারতের আসামে বসবাস করে আসছিল। হঠাৎ করে ভারতীয় পুলিশ তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দিয়ে হেলিকপ্টারে করে ত্রিপুরার মানিক ভান্ডারে নিয়ে এসে বিএসএফ এর হাতে তুলে দেয়। পরে বিএসএফ কয়েকজনকে ধলই সীমান্ত দিয়ে গেইট খুলে ‘পুশ ইন’ করলে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তবে অন্যদের কোন সীমান্তে নিয়ে গেছে তারা বলতে পারেননি।

পুশইনের ঘটনা নিয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী এম এ হামিদ। তিনি জানান, সীমান্ত দিয়ে হাজারের অধিক মানুষ অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছে। এসব ক্ষেত্রে বিজিবি কয়েকশত লোককে আটক করলেও অধিকাংশদের আটক করতে পারেনি। এদের অনেকেই স্থানীয় দালাল বা অন্যান্য মাধ্যমে গাড়িতে করে নিজ নিজ বাড়ীতে চলে গেছেন।

তিনি জানান, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কেউ এ্যাম্বুলেন্সে করে, কেউ সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা অন্যান্য গাড়িতে করে নিজ নিজ গন্তব্যে গেছেন। কারও কাছে টাকা না থাকলেও তারা বাড়িতে পৌঁছে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দিয়েছেন। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা ছিল বলে জানান তিনি, যারা স্থানীয় লোকদের সহায়তায় চট্রগ্রামে চলে গেছে।

এবিষয়ে ৫২-বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান ও ৪৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া জানান, আটককৃতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০১:০৫:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
১৪ বার পড়া হয়েছে

সীমান্ত দিয়ে ১ মাসে ৩৩৭ জনকে পুশইন করলো বিএসএফ

আপডেট সময় ০১:০৫:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ১ মাসে ৩৩৭ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যেই অবৈধভাবে এসব বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।

অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে জেলার বড়লেখা উপজেলা দিয়ে। উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর, দক্ষিণ শাহবাজপুর ও পাল্লথল সীমান্ত, জুড়ী উপজেলার রাজকি সীমান্ত, কুলাউড়া উপজেলার মুরইছড়া সীমান্ত, কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই, বাগীছড়া ও চাম্পাছড়া সীমান্ত দিয়ে এসব অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।

৭ মে থেকে অবৈধভাবে মৌলভীবাজার জেলায় পুশইনের ঘটনায় ৩৩৭জন বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন। তার মধ্যে বড়লেখা উপজেলা দিয়ে ২৫১ জন, জুড়ী উপজেলা দিয়ে ১০ জন, কুলাউড়া উপজেলা দিয়ে ২১ জন ও কমলগঞ্জ উপজেলা দিয়ে ৫৫ জন। এছাড়াও আরও কয়েক শতাধিক লোক সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করলেও বিজিবি বা স্থানীয় প্রশাসন তাদের আটক করতে পারেনি।

আটককৃতদের মধ্যে পুরুষ, মহিলা ও শিশু ছিল। এদের বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল, চট্রগ্রাম, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।

কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শীব নারায়ন শীল জানান, আমরা যাদের আটক করি তাদের কাছে জানতে পারি তারা দীর্ঘ পাঁচ বছর থেকে ভারতের আসামে বসবাস করে আসছিল। হঠাৎ করে ভারতীয় পুলিশ তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দিয়ে হেলিকপ্টারে করে ত্রিপুরার মানিক ভান্ডারে নিয়ে এসে বিএসএফ এর হাতে তুলে দেয়। পরে বিএসএফ কয়েকজনকে ধলই সীমান্ত দিয়ে গেইট খুলে ‘পুশ ইন’ করলে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তবে অন্যদের কোন সীমান্তে নিয়ে গেছে তারা বলতে পারেননি।

পুশইনের ঘটনা নিয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী এম এ হামিদ। তিনি জানান, সীমান্ত দিয়ে হাজারের অধিক মানুষ অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছে। এসব ক্ষেত্রে বিজিবি কয়েকশত লোককে আটক করলেও অধিকাংশদের আটক করতে পারেনি। এদের অনেকেই স্থানীয় দালাল বা অন্যান্য মাধ্যমে গাড়িতে করে নিজ নিজ বাড়ীতে চলে গেছেন।

তিনি জানান, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কেউ এ্যাম্বুলেন্সে করে, কেউ সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা অন্যান্য গাড়িতে করে নিজ নিজ গন্তব্যে গেছেন। কারও কাছে টাকা না থাকলেও তারা বাড়িতে পৌঁছে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দিয়েছেন। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা ছিল বলে জানান তিনি, যারা স্থানীয় লোকদের সহায়তায় চট্রগ্রামে চলে গেছে।

এবিষয়ে ৫২-বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান ও ৪৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া জানান, আটককৃতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।