ঢাকা ০২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নবীগঞ্জে গ্যাস ফিল্ড কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার Logo সাংবাদিক তুহিন হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবের মানববন্ধন Logo হবিগঞ্জে ‘চাঁদার’ ৯০ হাজার টাকাসহ ছাত্রদলের সদস্য সচিব আটক Logo চুনারুঘাটে পৈত্রিক জমি নিয়ে বিরোধ, ভাইকে কুপিয়ে হত্যা Logo হবিগঞ্জে ৯ জনকে গুলি করে হত্যার মামলায় ওসি দেলোয়ার গ্রেফতার Logo নবীগঞ্জে পুলিশের অভিযানে ২৫ কেজি গাঁজাসহ দুই আসামী গ্রেফতার Logo শায়েস্তাগঞ্জে ডাকাতের হামলায় ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনায় ডাকাত আলী গ্রেফতার Logo মাধবপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ ওসি সহ আহত শতাধিক Logo হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত সরকারের Logo সরিনা খাতুন যেন ‘আসমানী’রই প্রতিচ্ছবি

হবিগঞ্জের সাবেক এমপি ভাষা সৈনিক চৌধুরী আব্দুল হাই আর নেই

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-

হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ২৮ পঞ্চায়েত সভাপতি চৌধুরী আব্দুল হাই (৮৬) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকাল প্রায় ৯টা ৪০ মিনিটের সময় আমেরিকার নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।

তার জন্ম হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড় বহুলা গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৯ সালের ২১ মার্চ। বাবা মৃত চৌধুরী আব্দুল গণি ও মা মরহুমা আছিয়া খাতুন চৌধুরী। তিনি হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে সাধারণ ও অতিরিক্ত গণিতে লেটার মার্কসহ প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে বার কাউন্সিলে ও হবিগঞ্জ অ্যাডভোকেট সমিতিতে এনরোলড হন।

১৯৬৫ সালে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করে ভাসানী ন্যাপের হবিগঞ্জ মহকুমার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি মোজাফ্ফর ন্যাপে যোগদান করে হবিগঞ্জে সভাপতির দায়িত্ব চালিয়ে যান। ১৯৮৬-৮৭ সালে আট দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে হবিগঞ্জ-লাখাই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালে প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, বিভিন্ন অধিকার আদায় আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ এবং হবিগঞ্জবাসীর সুখ-দুঃখের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তিনি ভ্রমণ করেছেন ভারত, থাইল্যান্ড, সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া) ও আমেরিকা।

তিনি একজন ত্যাগী ভাষাসংগ্রামী। তার যুগান্তকারী ভূমিকায় ভাষা আন্দোলনে হবিগঞ্জের ছাত্ররা সোচ্চার হয়ে উঠেছিল।

হবিগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্ররা বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে শুরু করেন আন্দোলন। এ সময় তিনি ছাত্রদের মধ্যে প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন। সবার সার্বিক সহযোগিতায় হবিগঞ্জের ছাত্র-জনতা মিলে যখন আন্দোলনে ব্যস্ত, ঠিক সে মুহূর্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ভাষাসংগ্রামী মো. আবিদ আলী হবিগঞ্জে আসেন এবং চৌধুরী আব্দুল হাইকে সঙ্গে নিয়ে কোর্টস্টেশন রোড এলাকায় প্রথম সভা আহ্বান করেন। একপর্যায়ে ঢাকায় এসে ভাষাসংগ্রামীদের সঙ্গে তিনিও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধেরও সংগঠক। হবিগঞ্জ জেলা বারের সভাপতি ও সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জের প্রিয়মুখের একজন। তার মৃত্যুর খবরে দেশ-বিদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১০:২০:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
৭৩ বার পড়া হয়েছে

হবিগঞ্জের সাবেক এমপি ভাষা সৈনিক চৌধুরী আব্দুল হাই আর নেই

আপডেট সময় ১০:২০:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ২৮ পঞ্চায়েত সভাপতি চৌধুরী আব্দুল হাই (৮৬) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকাল প্রায় ৯টা ৪০ মিনিটের সময় আমেরিকার নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।

তার জন্ম হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড় বহুলা গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৯ সালের ২১ মার্চ। বাবা মৃত চৌধুরী আব্দুল গণি ও মা মরহুমা আছিয়া খাতুন চৌধুরী। তিনি হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে সাধারণ ও অতিরিক্ত গণিতে লেটার মার্কসহ প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে বার কাউন্সিলে ও হবিগঞ্জ অ্যাডভোকেট সমিতিতে এনরোলড হন।

১৯৬৫ সালে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করে ভাসানী ন্যাপের হবিগঞ্জ মহকুমার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি মোজাফ্ফর ন্যাপে যোগদান করে হবিগঞ্জে সভাপতির দায়িত্ব চালিয়ে যান। ১৯৮৬-৮৭ সালে আট দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে হবিগঞ্জ-লাখাই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালে প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, বিভিন্ন অধিকার আদায় আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ এবং হবিগঞ্জবাসীর সুখ-দুঃখের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তিনি ভ্রমণ করেছেন ভারত, থাইল্যান্ড, সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া) ও আমেরিকা।

তিনি একজন ত্যাগী ভাষাসংগ্রামী। তার যুগান্তকারী ভূমিকায় ভাষা আন্দোলনে হবিগঞ্জের ছাত্ররা সোচ্চার হয়ে উঠেছিল।

হবিগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্ররা বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে শুরু করেন আন্দোলন। এ সময় তিনি ছাত্রদের মধ্যে প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন। সবার সার্বিক সহযোগিতায় হবিগঞ্জের ছাত্র-জনতা মিলে যখন আন্দোলনে ব্যস্ত, ঠিক সে মুহূর্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ভাষাসংগ্রামী মো. আবিদ আলী হবিগঞ্জে আসেন এবং চৌধুরী আব্দুল হাইকে সঙ্গে নিয়ে কোর্টস্টেশন রোড এলাকায় প্রথম সভা আহ্বান করেন। একপর্যায়ে ঢাকায় এসে ভাষাসংগ্রামীদের সঙ্গে তিনিও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধেরও সংগঠক। হবিগঞ্জ জেলা বারের সভাপতি ও সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জের প্রিয়মুখের একজন। তার মৃত্যুর খবরে দেশ-বিদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।