হবিগঞ্জে কাঁঠালের ভালো ফলন
আষাঢ় মাস চলছে। গাছে গাছে পাকা কাঁঠালের ঘ্রাণে মন মাতোয়ারা। হাটবাজারে পুরোদমে বিক্রি হচ্ছে জাতীয় এ ফলটি। এবারও পাহাড় ও হাওড় অধ্যুষিত হবিগঞ্জ জেলায় কাঁঠালের আশানুরূপ ফলন হয়েছে। দামও ভালো। এতে খুশি চাষিরা। পাহাড়ি টিলা আর সমতলে চাষ হওয়া পুষ্টিগুণে ভরা কাঁঠাল বিক্রির জন্য চাষিরা পাইকারি বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে সুস্বাদু এ কাঁঠাল ক্রয়ের জন্য ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন বাজারে।
আড়ত মালিকরা জানান, এ বছর কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে। দামও ভালো। এতে করে চাষিদের মাঝে উৎসাহ দেখা দিয়েছে।
চুনারুঘাটের কালেঙ্গার পাহাড়ের বিনয় দেববর্মা, নবীগঞ্জের দিনারপুরের কাজল মিয়া, বাহুবলের রশিদপুরের তোরাব আলী মোল্লা, তাহির মিয়া ও নূরুল ইসলাম জানান, তাদের বাগানে সহযোগী ফসল হিসেবে কাঁঠাল উৎপাদন করা হয়। কাঁঠাল উৎপাদন করতে আলাদা কোনো যত্ন নিতে হয় না বলে উৎপাদন খরচও কম। এ বছর কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে। দামও ভালো হওয়ায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
হবিগঞ্জ শহরের বাসিন্দা বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, বিষমুক্ত তাজা কাঁঠাল ক্রয় করার জন্য মুছাই ও চন্ডিছড়া যেতে হবে। এ বাজারে পাহাড়ি কাঁঠাল পাওয়া যায়। প্রতিদিন ক্রেতাদের মুছাই ও চন্ডিছড়ার কাঁঠাল বাজার বিচরণ হচ্ছে। আমিও ২০০ টাকা দিয়ে একটি কাঁঠাল ক্রয় করেছি। খেয়ে তৃপ্তি পেয়েছি।
হবিগঞ্জের সন্তান সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। এ ফল স্বাদে যেমন অনন্য, তেমনি পুষ্টিতেও ভরপুর। তাই সকল স্তরের লোকজনের কাছেই কাঁঠাল অত্যন্ত প্রিয়। বিশেষ করে এ সময়ে গ্রামের লোকজনের প্রধান খাদ্য তালিকায় চলে আসে এ কাঁঠাল। তারা বাজার থেকে কাঁঠাল এনে পরিবারের সকলে মিলে একবেলা আহারের পরিবর্তে পেট ভরে কাঁঠাল খেয়ে থাকেন। কাঁঠালের বীজ শুকিয়ে তারা রেখে দেন বাড়িতে।
পরে এই বীজ সবজি হিসেবে ব্যবহার করেন। এমনকি কাঁঠালের যে উচ্ছিষ্ট অংশ তাও ব্যবহার করা হয় গো-খাদ্য হিসেবে। অর্থাৎ একটি কাঁঠালের বহুমুখী উপযোগ ভোগ করেন তারা। দরিদ্রদের পাশাপাশি ধনী লোকজনের পাতেও এই কাঁঠালের খোয়া স্থান পায়। হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, সরকারিভাবে অত্যন্ত পুষ্টিকর কাঁঠালের ফলন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রশিক্ষণের। কাঁঠাল উৎপাদন করলে একই সাথে ফসল এবং কাঠ পাওয়া যায়।