হবিগঞ্জে বোরো আবাদে ব্যস্ত হাওরাঞ্চলের কৃষক
হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে বোরো ধান রোপণ শুরু হয়েছে। একদিকে জমি থেকে পানি নামছে অপরদিকে আবাদ শুরু করছেন কৃষকরা। এখনো পুরোপুরি রোপণ শুরু না হলেও কৃষকরা হাওরে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রের তথ্যমতে, এবার জেলার ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমির জন্য জেলায় বীজতলা তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়েছে ৫ হাজার ৬৫২ হেক্টর জমি। এসব বীজতলায় প্রস্তুত করা ধানের চারা এখন জমিতে রোপণের কাজ করছেন বোরো কৃষকরা।
হবিগঞ্জের হাওর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার আগেই স্থানীয় কৃষকরা বীজতলা থেকে চারা উত্তোলনের কাজ শুরু করেন। সরাসরি মাটি ব্যবহার না করে অনেক জায়গায় বীজতলা তৈরি করা হয়েছে ট্রেতে। সেখান থেকেও অনেকে জমিতে রোপণের জন্য চারা সংগ্রহ করছেন। এরপর সকাল থেকেই শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে মূল জমিতে রোপণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যস্ত হাতে। সনাতন পদ্ধতির বাইরে অনেক এলাকায় চারা রোপণের কাজ হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। সে ক্ষেত্রে কৃষকরা রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ করছেন।
চলতি বোরো মৌসুমে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় ১১ হাজার ২০৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এ ছাড়া জেলার ৯টি উপজেলা মিলে মোট ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমিতে তিন ধরনের বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, ৭২ হাজার ৮০১ হেক্টর জমিতে উফশী এবং ৫০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো ধান আবাদ করা হবে বলে জানা গেছে।
হাইব্রিড জাতে হেক্টরপ্রতি ৪ দশমিক ৬৮ টন, উফশীতে ৬ দশমিক ৯৩ টন ও স্থানীয় জাত থেকে প্রতি হেক্টরে ১ দশমিক ৯ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা। সে অনুযায়ী বোরো থেকে হবিগঞ্জে ৫ লাখ ২৪ হাজার ৩৪৫ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ধানের হিসাবে উৎপাদনের এই পরিমাণ দাঁড়াবে ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৮ টনে।
হবিগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আক্তারুজ্জামান জানান, এখন জেলার হাওরজুড়ে বোরো আবাদ চলছে। কৃষি অফিস থেকে সার্বক্ষণিক তাদের পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষকদের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে।