ঢাকা ০৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাসিনার পতনে আমেরিকার ভূমিকা ছিল না : ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ধারণা যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদদ ছিল। এমনকি আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলেছেন ড. ইউনুস বাইডেনের সহযোগিতায় তাদের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।

জানা যায়, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনে মার্কিন ডিপ স্টেটের ভূমিকা ছিল না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এ কথা বলেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতীয় এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের বিষয়ে আপনার অভিমত কি? কারণ এটা স্পষ্ট যে বাইডেন প্রশাসনের আমলে মার্কিন ডিপ স্টেট বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এমন কী, মুহাম্মদ ইউনূসও জুনিয়র সরোসের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। বাংলাদেশের বিষয়টি নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি?জবাবে ট্রাম্প বলেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না। এটা এমন একটি বিষয় যেটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী (মোদি) দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এবং সত্য বলতে, শত শত বছর ধরে এ বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। কিন্তু আমি এটা প্রধানমন্ত্রীর (মোদির) হাতে ছেড়ে দিচ্ছি।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে কোনো কথা বলেননি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি ।

ডিপ স্টেট বা ছায়া রাষ্ট্র বলতে সাধারণত অনির্বাচিত সরকারি কর্মকর্তা ও প্রাইভেট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কথিত গোপন নেটওয়ার্ককে বোঝানো হয়ে থাকে, যারা বেআইনিভাবে সরকারি নীতিতে প্রভাব বিস্তার ও তা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখে।

সরকারি নীতিতে এমন প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে ডিপ স্টেটকে প্রায়ই দায়ী করে থাকেন ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা। কথিত ডিপ স্টেট বিরোধী প্রচারণার অগ্রভাগে রয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনে প্রভাবশালী পদে থাকা বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক।

বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন সহযোগিতা দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘জাতীয় স্বার্থ’ দেখা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়ন ও কার্যক্রমে ৯০ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রে ইউএসএআইডির কার্যক্রম বন্ধের পক্ষে যুক্তি দেখানোর সময় দেশটিতে দক্ষিণপন্থিদের বক্তব্যে ‘সাম্প্রতিক ঘটনা’ হিসাবে বাংলাদেশ প্রসঙ্গও ঘুরে ফিরে আসছে।

এই প্রচারণায় উদাহরণ টেনে বলা হচ্ছে, ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে ‘ক্ষমতা পরিবর্তনে’ অর্থায়ন করেছে ইউএসএআইডি। ‘গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করার’ জন্য ট্রান্সজেন্ডার ও ‌র‌্যাপারদের অর্থায়ন করার কথাও সামনে আনা হচ্ছে।

এর মধ্যে ৩০ জানুয়ারি হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী জর্জ সরোসের ছেলে অ্যালেক্স সরোস ঢাকা সফরে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। সরোস ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনেরও চেয়ারম্যান।

ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিষয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের আদালতে ঘুষের অভিযোগ আনার মাসখানেক পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে সরাসরি ‘ভারতকে অস্থিতিশীল’ করার অভিযোগ এনেছিল ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।

এক্ষেত্রে জর্জ সরোস, মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’, মিডিয়া গ্রুপ ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ (ওসিসিআরপি) ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়- একদল অনুসন্ধানী সাংবাদিক এবং ভারতের বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একযোগে কাজ করছে বলে অভিযোগ তুলেছিল নরেন্দ্র মোদির দল।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:২৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৭ বার পড়া হয়েছে

হাসিনার পতনে আমেরিকার ভূমিকা ছিল না : ট্রাম্প

আপডেট সময় ০৮:২৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ধারণা যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদদ ছিল। এমনকি আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলেছেন ড. ইউনুস বাইডেনের সহযোগিতায় তাদের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।

জানা যায়, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনে মার্কিন ডিপ স্টেটের ভূমিকা ছিল না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এ কথা বলেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতীয় এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের বিষয়ে আপনার অভিমত কি? কারণ এটা স্পষ্ট যে বাইডেন প্রশাসনের আমলে মার্কিন ডিপ স্টেট বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এমন কী, মুহাম্মদ ইউনূসও জুনিয়র সরোসের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। বাংলাদেশের বিষয়টি নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি?জবাবে ট্রাম্প বলেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না। এটা এমন একটি বিষয় যেটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী (মোদি) দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এবং সত্য বলতে, শত শত বছর ধরে এ বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। কিন্তু আমি এটা প্রধানমন্ত্রীর (মোদির) হাতে ছেড়ে দিচ্ছি।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে কোনো কথা বলেননি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি ।

ডিপ স্টেট বা ছায়া রাষ্ট্র বলতে সাধারণত অনির্বাচিত সরকারি কর্মকর্তা ও প্রাইভেট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কথিত গোপন নেটওয়ার্ককে বোঝানো হয়ে থাকে, যারা বেআইনিভাবে সরকারি নীতিতে প্রভাব বিস্তার ও তা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখে।

সরকারি নীতিতে এমন প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে ডিপ স্টেটকে প্রায়ই দায়ী করে থাকেন ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা। কথিত ডিপ স্টেট বিরোধী প্রচারণার অগ্রভাগে রয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনে প্রভাবশালী পদে থাকা বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক।

বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন সহযোগিতা দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘জাতীয় স্বার্থ’ দেখা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়ন ও কার্যক্রমে ৯০ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রে ইউএসএআইডির কার্যক্রম বন্ধের পক্ষে যুক্তি দেখানোর সময় দেশটিতে দক্ষিণপন্থিদের বক্তব্যে ‘সাম্প্রতিক ঘটনা’ হিসাবে বাংলাদেশ প্রসঙ্গও ঘুরে ফিরে আসছে।

এই প্রচারণায় উদাহরণ টেনে বলা হচ্ছে, ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে ‘ক্ষমতা পরিবর্তনে’ অর্থায়ন করেছে ইউএসএআইডি। ‘গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করার’ জন্য ট্রান্সজেন্ডার ও ‌র‌্যাপারদের অর্থায়ন করার কথাও সামনে আনা হচ্ছে।

এর মধ্যে ৩০ জানুয়ারি হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী জর্জ সরোসের ছেলে অ্যালেক্স সরোস ঢাকা সফরে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। সরোস ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনেরও চেয়ারম্যান।

ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিষয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের আদালতে ঘুষের অভিযোগ আনার মাসখানেক পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে সরাসরি ‘ভারতকে অস্থিতিশীল’ করার অভিযোগ এনেছিল ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।

এক্ষেত্রে জর্জ সরোস, মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’, মিডিয়া গ্রুপ ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ (ওসিসিআরপি) ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়- একদল অনুসন্ধানী সাংবাদিক এবং ভারতের বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একযোগে কাজ করছে বলে অভিযোগ তুলেছিল নরেন্দ্র মোদির দল।