ঢাকা ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo হবিগঞ্জে ভুয়া চিকিৎসকের একমাসের কারাদণ্ড Logo স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। Logo হবিগঞ্জে শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা Logo নবীগঞ্জ মসজিদে মাইকিং করে পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই আটক ১৩ Logo চুনারুঘাটে হত্যা মামলার আসমী আ. মান্নান আটক-তাবলীগ জামাতে গিয়ে অপহরণ মামলা সাজিয়েছেন Logo আজমিরীগঞ্জ কালনী নদীর ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে পাড়ে বসে চোখ মুছছেন সুনিতী Logo কুলাউড়ায় হত্যাকান্ডের শিকার আনজুমের বাড়িতে আমিরে জামায়াত Logo মাধবপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট নেই ৩০ বছর ধরে Logo নবীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিএনজি চুরি-ডাকাতি, মাদক নিয়ে উদ্বেগ, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন !

আগামীকালের মধ্যে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হবে: আইনমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট

সরকারের নির্বাহী আদেশে আগামীকাল বুধবারের (৩১ জুলাই) মধ্যেই নিষিদ্ধ ঘোষণা হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুর দেড়টার পরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

এর আগে সোমবার (২৯ জুলাই) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে দেশের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করতে একমত হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত জোটের বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বৈঠক শেষে গণভবনের প্রধান ফটকের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র, চোরাগোপ্তা হামলা করে দেশকে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে যে অপশক্তি, তাদের জাতীয় স্বার্থেই নির্মূল করতে হবে। জাতীয় স্বার্থে দেশবিরোধী অপশক্তি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ছাত্রদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে ও তাদের হয়রানি না করার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।’

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, রাষ্ট্র ও স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত করতে জামায়াত-শিবির কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। দেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত করতে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার দাবি করেন তিনি। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত সরকার দ্রুত বাস্তবায়ন করবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জামায়াত ও শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।’

তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ‘দেশের সাম্প্রতিক ঘটনার বীভৎস বাস্তবতায় জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করা জরুরি। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হলে তারা আর সংবাদ সম্মেলন কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে পারবে না।’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আজকে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। জাতি এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবে বলে তিনি মনে করেন।

জানা গেছে, ১৪ দলের বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সূচনা বক্তব্য দেন। পরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, হাসানুল হক ইনু ও নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে কথা বলেন। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত অন্যরা এতে সমর্থন জানান।

তবে বৈঠকে জামায়াত-শিবিরের নিষিদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। এ সময় হাসানুল হক ইনু বলেন, আমরাও একসময় আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে রাজনীতি করেছি। জনসমর্থন না থাকলে ও জনসমক্ষে আসতে না পারলে রাজনীতি করা যায় না বলেও মত দেন তিনি।

বৈঠকে ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতার বক্তব্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বক্তব্য দেন, সমালোচনা করেন। ছাত্রদের বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় বক্তব্যের সময় আরও সচেতন হওয়া দরকার ছিল বলেও মন্তব্য করা হয়।

কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, এর পরও কেন আন্দোলন? এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের স্বার্থে এদের দমন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। বিভিন্ন পরীক্ষা চালুর ব্যবস্থা করতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

জামায়াতে ইসলামী ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে। শুধু তাই নয়, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী মানুষকে নির্মূল করতে সশস্ত্র কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগিতা করা, মানুষের অর্থ-সম্পদ লুট, নারীদের ধর্ষণ, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাসহ নানাবিধ নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, যা এরই মধ্যে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে প্রমাণ হয়েছে। এসব অপরাধে দলটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট এক রায়ের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দেন। এরপর ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত আপিল করলেও ২০২৩ সালে ১৯ নভেম্বর তা সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:০৫:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪
৯০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

আগামীকালের মধ্যে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হবে: আইনমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৪:০৫:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪

সরকারের নির্বাহী আদেশে আগামীকাল বুধবারের (৩১ জুলাই) মধ্যেই নিষিদ্ধ ঘোষণা হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুর দেড়টার পরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

এর আগে সোমবার (২৯ জুলাই) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে দেশের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করতে একমত হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত জোটের বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বৈঠক শেষে গণভবনের প্রধান ফটকের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র, চোরাগোপ্তা হামলা করে দেশকে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে যে অপশক্তি, তাদের জাতীয় স্বার্থেই নির্মূল করতে হবে। জাতীয় স্বার্থে দেশবিরোধী অপশক্তি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ছাত্রদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে ও তাদের হয়রানি না করার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।’

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, রাষ্ট্র ও স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত করতে জামায়াত-শিবির কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। দেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত করতে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার দাবি করেন তিনি। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত সরকার দ্রুত বাস্তবায়ন করবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জামায়াত ও শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।’

তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ‘দেশের সাম্প্রতিক ঘটনার বীভৎস বাস্তবতায় জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করা জরুরি। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হলে তারা আর সংবাদ সম্মেলন কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে পারবে না।’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আজকে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। জাতি এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবে বলে তিনি মনে করেন।

জানা গেছে, ১৪ দলের বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সূচনা বক্তব্য দেন। পরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, হাসানুল হক ইনু ও নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে কথা বলেন। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত অন্যরা এতে সমর্থন জানান।

তবে বৈঠকে জামায়াত-শিবিরের নিষিদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। এ সময় হাসানুল হক ইনু বলেন, আমরাও একসময় আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে রাজনীতি করেছি। জনসমর্থন না থাকলে ও জনসমক্ষে আসতে না পারলে রাজনীতি করা যায় না বলেও মত দেন তিনি।

বৈঠকে ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতার বক্তব্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বক্তব্য দেন, সমালোচনা করেন। ছাত্রদের বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় বক্তব্যের সময় আরও সচেতন হওয়া দরকার ছিল বলেও মন্তব্য করা হয়।

কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, এর পরও কেন আন্দোলন? এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের স্বার্থে এদের দমন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। বিভিন্ন পরীক্ষা চালুর ব্যবস্থা করতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

জামায়াতে ইসলামী ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে। শুধু তাই নয়, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী মানুষকে নির্মূল করতে সশস্ত্র কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগিতা করা, মানুষের অর্থ-সম্পদ লুট, নারীদের ধর্ষণ, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাসহ নানাবিধ নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, যা এরই মধ্যে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে প্রমাণ হয়েছে। এসব অপরাধে দলটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট এক রায়ের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দেন। এরপর ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত আপিল করলেও ২০২৩ সালে ১৯ নভেম্বর তা সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়।