হবিগঞ্জ শহরে গুলিবিদ্ধ ইলেকট্রিশিয়ানের মৃত্যুতে কেঁপে উঠলো পুরো জেলা
শহরের ভাঙ্গারপুল এলাকার একটি মসজিদে জুমআর নামাজ আদায় করে জুতা কেনার জন্য হবিগঞ্জ শহরে এসেছিলেন ইলেকট্রিশিয়ান মোস্তাক মিয়া। এরপর আর তার ফেরা হলনা আপন ঠিকানায়। শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের ভয়াবহ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
আর এতেই প্রাণ হারিয়ে পৃথিবী ছাড়েন মোস্তাক মিয়া। গতকাল শনিবার সকাল ৯ টার দিকে হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গ থেকে তার লাশ নিয়ে যান আত্মীয়-স্বজন। পরে দুপুরে দেশের বাড়ি সিলেট জেলার জালালাবাদ উপজেলার গৌরিপুর গ্রামে তার দাফন সম্পন্ন করে পরিবারের লোকজন।
মোস্তাক মিয়া ওই গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে। মা, ২ বোন ও ৪ ভাইয়ের মধ্যে ছোট ছিলেন মোস্তাক। পরিবারে আর্থিক যোগান দিতে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন তিনি। ব্যক্তি জীবনে অবিবাহিত থাকায় বিয়ের জন্য টাকা-পয়সার রোজগার করাও ছিল তার মাথায়। প্রায় ১ মাস ৫ দিন আগে তিনি হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)’র অস্থায়ী ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে যোগদান করেন।
এরপর সহকর্মীদের সাথে শহরের ভাঙ্গারপুল এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। শুক্রবার জুমআর নামাজ পড়ে জুতা কেনার জন্য হবিগঞ্জ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড়ে আসেন মোস্তাক। পরে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের ভয়াবহ সংঘর্ষের কবলে পড়েন। আর এতে সে গুলিবিদ্ধ হলে স্থানীয়রা তাকে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
সম্প্রতি কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মারা গেছেন অনেকেই। তবে হবিগঞ্জ শহরে এই প্রথম মারা গেলেন ইলেকট্রিশিয়ান মোস্তাক। আর এতে করেই কেঁেপ উঠেছে পুরো জেলা। তার এই অকাল মৃত্যু নাড়া জাগিয়েছে সকলের হৃদয়ে। কয়েকদিন ধরে হবিগঞ্জ শহরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ হলেও কেউ প্রাণ হারাননি। হবিগঞ্জ শহর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে আতঙ্কিত ছিলেন জেলাবাসী। তবে তার এই প্রথম মৃত্যু সকলের মধ্যে ভীতি ছড়িয়েছে। যে কারণে সাধারণ মানুষ এখন বাসা থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছেন।