শাপলা-শালুক, দেখি বাংলার মুখ!
শাপলা ফুল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল হিসেবে আলাদা মর্যাদা সম্পন্ন। ওই ঐতিহ্যবাহী শাপলা-শালুকের দেশ বাংলাদেশ। দেশের লোকজ ঐতিহ্য শাপলা-শালুক, এতেই দেখি চিরায়ত বাংলার মুখ। বাংলাদেশের হাওর, খাল-বিল ও ভাটি অঞ্চলের পানিমগ্ন এলাকার একটি জলজ উদ্ভিদের নাম শাপলা ফুল।
শাপলা সপুষ্পক উদ্ভিদ পরিবারের এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ। এ পরিবারভূক্ত সকল উদ্ভিদই শাপলা নামে পরিচিত। সাদা শাপলা ফুল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল সাধারণত ভারত উপমহাদেশে দেখা যায়। হাওড়-বিল ও দিঘিতে এটি বেশি ফোটে। বিভিন্ন রঙের ও আকারে শাপলা ফুল নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের অবতারণা করলেও, বাংলাদেশে সাদা ও লাল রঙের শাপলা ফুল দেখতে পাওয়া যায়।
হাওর-বিলে ফুটন্ত শাপলা ফুলের চাঁই দূর থেকে দেখতে কার্পেটের মতো মনে হয়। সাদা রঙের শাপলার চাঁই দেখতে সাদা কর্পোরেট মতো মন হয়। লাল রঙের শাপলার চাঁই দেখতে লাল কর্পোরেট মতো মন হয়। এই শাপলা ফুল শুধু হাওর বিলের সৌন্দর্য বর্ধন করে! তা কিন্তু নয়, এটি একটি মজাদার সবজিও বটে। ভাটি অঞ্চলের দুরন্ত কিশোর কিশোরীরা দিনভর শাপলার ডাটা সংগ্রহ করে নিয়ে যায় বাড়িতে সবজির যোগান দিতে। ছোট চিংড়ি মাছ দিয়ে শাপলা ডাঁটার সবজি খুবই মজাদার।
এই শাপলা ফুলের পাতা গজানোর মূল উৎস হচ্ছে শালুক। শালুক মূলত: এক প্রকারের বড় আলুর মতো জলজ উদ্ভিদ। শালুক আলুর মতো আগুনে পুড়িয়ে খাওয়া যায়। তাই, পল্লীকবি জসীমউদ্দীন তার কবিতায় শালুক কুড়ানোর কথা উল্লেখ করেছেন। শালুক পানির তলায় কাদায় জন্মানো জলজ উদ্ভিদ।
এই শালুক থেকে শাপলা ফুল ও পাতার জন্ম হয় ও বেড়ে ওঠে। শালুক সবজি জাতীয় খাদ্য, শাপলার সাথে শালুক হাওর বিল অঞ্চলের মানুষের খাদ্য তালিকায় থাকে। শাপলা ফুল পরিপুষ্ট হলে এতে এক ধরনের বীজ উৎপন্ন হয়, সেই বীজ শুকিয়ে এর থেকে খৈ তৈরি করা হয়।
শাপলা ফুলের বীজ থেকে তৈরি করা খাবারকে বলা হয় ভেটের খৈ। ওই ভেটের খৈ একটি মুখরোচক খাবার, কুটুম বাড়িতে যেতে , অতিথি আপ্যায়নে এর জুরি মেলা ভার। কবির ছন্দে বলা যায়। হে শহুরে ভাই, তুমি কি যাবে আমার ছোট গাঁয়ে, হেথায় দিন কাটাব, শাপলা-শালুকের গান গেয়ে।