অটোরিকশাচালক হত্যায় শায়েস্তাগঞ্জের আলোচিত সন্ত্রাসী ইলিয়াছের মৃত্যুদণ্ড
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দক্ষিণ নরপতি গ্রামের সিএনজি অটোরিকশাচালক আব্দুল জলিলকে হত্যার ঘটনায় শায়েস্তাগঞ্জের আলোচিত সন্ত্রাসী ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটনকে ফাঁসির আদেশ এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আজিজুল হক এই সাজা প্রদান করেন। সাজাপ্রদানকালে আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের স্টেনোগ্রাফার মুখলেছুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৬ এপ্রিল ভাড়া নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে আব্দুল জলিলকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন ইলিয়াছ মিয়া। ওইদিন সন্ধ্যায় বাহুবল উপজেলার ইসলামাবাগ গ্রামের জনৈক আব্দুল্লাহ’র উঠানে তার লাশ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই খলিলুর রহমান বাদী হয়ে ওইদিনই বাহুবল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ ইলিয়াছ মিয়াকে গ্রেফতার করলে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন। বাহুবল থানার এসআই বিশ্বাস মোজাফফর আহমেদ ও ওসি সৈয়দুজ্জামান তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১০ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিজ্ঞ আদালত উপরিউক্ত রায় প্রদান করেন। একই সঙ্গে আসামি চাইলে এক সপ্তাহের মাঝে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন বলে রায়ে উল্লেখ করেন।
এদিকে, সন্ত্রাসী ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটনের বিরুদ্ধে শায়েস্তাগঞ্জের আলোচিত সুজন হত্যা মামলার বিচারও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আরো বিভিন্ন মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ছিলেন। এই মামলা দায়েরের পর তিনি ভারতে পালিয়ে যান। পরে দেশে আসার পর কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হন। আবারো পলাতক হলে গত ২৫ জুলাই শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
জানা যায়, ২০১৫ সালে ঈদুল আজহার নামাজের পর হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের অভ্যন্তরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছকে হত্যার চেষ্টা করলে সারাদেশে আলোচিত হন ইলিয়াছ মিয়া। সে সময় জি কে গউছ অল্পের জন্য বেঁচে যান। এসব মামলায় ইলিয়াছ ২০১৬ সালে জামিনে বেরিয়ে এসে প্রায় শতাধিক মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স সাইলেন্সার বাজিয়ে জেলা জজ কোর্টে মিছিল নিয়ে আসেন। এ ঘটনায়ও একটি মামলা হয়।
রাাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সালেহ উদ্দিন ও এপিপি অ্যাডভোকেট পারভীন আক্তার বলেন, এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ খুশি। এতে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়েছে। অপরাধীরা ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করতে সাবধান হবে।