বন্যাদুর্গত এলাকায় এখনও বিকল ৯১১ মোবাইল টাওয়ার
হঠাৎ বন্যার কারণে বিপর্যস্ত অবস্থা দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১৫টির বেশি জেলার মানুষজন। ভারত থেকে নেমে আসা ঢল আর অতি বৃষ্টির কারণে অপ্রত্যাশিত ও আকস্মিকভাবেই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে এসব অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষকে। বন্যাদুর্গত জেলাগুলোতে এখনো স্বাভাবিক হয়নি টেলিযোগাযোগ সেবা। মোবাইল অপারেটর কোম্পানির টাওয়ারের গ্রিনফিল্ড ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ডুবে যাওয়ার কারণে তৈরি হয় মোবাইল নেটওয়ার্ক জটিলতার। পরবর্তী সময়ে কিছু এলাকায় নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপন করা সম্ভব হলেও পানি না কমায় ১১টি জেলায় নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপন কার্যক্রম করা যাচ্ছে না। ফলে এখনও ৯১১টি টাওয়ার অচল হয়ে আছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) দিবাগত রাত ১১টা পর্যন্ত হালনাগাদ করা তথ্য অনুযায়ী, টেলিযোগাযোগ ব্যাহত হওয়া ১১টি জেলা হচ্ছে— নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট ও কক্সবাজার।
এরমধ্যে নোয়াখালী জেলায় ২৬৩টি, লক্ষ্মীপুর জেলায় ৫৯টি, ফেনী জেলায় ৪৬৩টি, কুমিল্লা জেলায় ৬৩টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৩টি, চট্টগ্রাম জেলায় ১৯টি, খাগড়াছড়ি জেলায় ২০টি, হবিগঞ্জ জেলায় ৩টি, মৌলভীবাজার জেলায় ৫টি, সিলেট জেলায় ৮টি ও কক্সবাজার জেলায় ৫টি মোট ৯১১টি টাওয়ার অচল হয়ে আছে। এর বিপরীতে এই ১১টি জেলার মোট টাওয়ার রয়েছে ১৪ হাজার ৫৫১টি। যার মধ্যে এখন সচল রয়েছে ১৩ হাজার ৬৪০টি।
অপরদিকে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে সমন্বিত প্রচেষ্টার কথা জানিয়েছেন বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগ মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, মোবাইল অপারেটর এবং টাওয়ারকো অপারেটরদের টেকনিক্যাল লোকবল, নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম, জেনারেটর ও জ্বালানি ইত্যাদি পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ফুলগাজী, সোনাগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় মোবাইল অপারেটর রবি, গ্রামীণফোন এবং টাওয়ারকো অপারেটর সামিট ও ইডটকোর সঙ্গে সমন্বয় করে নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপন ত্বরান্বিত করার জন্য ৬টি স্পিডবোট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ফুলগাজী এবং ছাগলনাইয়া উপজেলায় মোবাইল অপারেটর বাংলালিংককে গাড়ি সরবরাহের মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২২ আগস্ট থেকে বন্যার কারণে এই নেটওয়ার্ক জটিলতা শুরু হয়েছে। যা ৬ দিন ধরে চলমান রয়েছে। তবে বন্যার পানি কমলে শিগগিরই সব জেলার বিকল টাওয়ার দ্রুতই সচল করা সম্ভব হবে এমন প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।