ঢাকা ১০:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে পাহাড় ধসের ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ

ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারে পৃথক স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে জেলা সদরের ঝিলংজায় একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে পাহাড় ধসে দুই শিশুসহ তিনজনের প্রাণ গেছে।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনা দুটি ঘটে। দিবাগত রাত ২টার দিকে ঝিলংজার দুই নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ডিককুলে এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, দক্ষিণ ডিককুলের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখি আকতার (২৫) এবং তার দুই শিশু কন্যা ময়না আকতার (৭) ও মায়া আকতার (২)।

নিহতের স্বজনরা জানান, ভারী বর্ষণের কারণে গভীর রাতে মিজানুরের বাড়ির ওপর পাহাড়ের একটি অংশ ধসে পড়ে। মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও তার স্ত্রী ও দুই সন্তান মাটি চাপা পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তাদের মরদেহ বের করে আনা হয়।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার দোলন আচার্য বলেন, তিনজনের মরদেহ বের করে আনা হয়েছে।

রাতে উখিয়ার হাকিমপাড়া ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের ব্লক ই-২ তে পাহাড় ধসে দুই শিশুসহ তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন- আব্দুর রহিম (৩০) আব্দুল হাফেজ (১০) ও আব্দুল ওয়াছেদ (৮)।

ডিককুলে পাহাড় ধসে নিহতের স্বজন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুল করিম সিকদার জানান, রাত ২টার দিকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সময় মিজানের বাড়ির দিক থেকে একটি পাহাড় ধসের বিকট শব্দ শুনতে পান তারা। পরে গিয়ে দেখেন মাটিচাপা পড়েছে মিজানের পরিবার। তাৎক্ষণিক মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। আজ ভোররাতের দিকে কক্সবাজার দমকল বাহিনীর সহযোগিতায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে স্ত্রী ও দুই শিশু মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, মিজানের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার বিকালে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। পরে মধ্যরাতে ওপর থেকে পাহাড় ধসে তার বাড়িতে পড়ে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে তিনজন নিহত হয়েছেন। এখানে দুইজন শিশু রয়েছে। তবে একই পরিবারের কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে বুধবার থেকে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে কখনও কখনও ভারী বর্ষণ হচ্ছে। ভারী বর্ষণে বৃহস্পতিবার জেলা শহরসহ বেশ কিছু গ্রামে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে অনেকের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৭৮ মিলিমিটার। চলমান মৌসুমে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১২:২৫:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৬ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজারে পাহাড় ধসের ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু

আপডেট সময় ১২:২৫:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারে পৃথক স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে জেলা সদরের ঝিলংজায় একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে পাহাড় ধসে দুই শিশুসহ তিনজনের প্রাণ গেছে।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনা দুটি ঘটে। দিবাগত রাত ২টার দিকে ঝিলংজার দুই নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ডিককুলে এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, দক্ষিণ ডিককুলের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখি আকতার (২৫) এবং তার দুই শিশু কন্যা ময়না আকতার (৭) ও মায়া আকতার (২)।

নিহতের স্বজনরা জানান, ভারী বর্ষণের কারণে গভীর রাতে মিজানুরের বাড়ির ওপর পাহাড়ের একটি অংশ ধসে পড়ে। মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও তার স্ত্রী ও দুই সন্তান মাটি চাপা পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তাদের মরদেহ বের করে আনা হয়।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার দোলন আচার্য বলেন, তিনজনের মরদেহ বের করে আনা হয়েছে।

রাতে উখিয়ার হাকিমপাড়া ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের ব্লক ই-২ তে পাহাড় ধসে দুই শিশুসহ তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন- আব্দুর রহিম (৩০) আব্দুল হাফেজ (১০) ও আব্দুল ওয়াছেদ (৮)।

ডিককুলে পাহাড় ধসে নিহতের স্বজন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুল করিম সিকদার জানান, রাত ২টার দিকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সময় মিজানের বাড়ির দিক থেকে একটি পাহাড় ধসের বিকট শব্দ শুনতে পান তারা। পরে গিয়ে দেখেন মাটিচাপা পড়েছে মিজানের পরিবার। তাৎক্ষণিক মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। আজ ভোররাতের দিকে কক্সবাজার দমকল বাহিনীর সহযোগিতায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে স্ত্রী ও দুই শিশু মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, মিজানের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার বিকালে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। পরে মধ্যরাতে ওপর থেকে পাহাড় ধসে তার বাড়িতে পড়ে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে তিনজন নিহত হয়েছেন। এখানে দুইজন শিশু রয়েছে। তবে একই পরিবারের কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে বুধবার থেকে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে কখনও কখনও ভারী বর্ষণ হচ্ছে। ভারী বর্ষণে বৃহস্পতিবার জেলা শহরসহ বেশ কিছু গ্রামে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে অনেকের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৭৮ মিলিমিটার। চলমান মৌসুমে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।