ঢাকা ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতির রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল Logo নবীগঞ্জে পুলিশের বিশেষ অভিযানে নারী ও শিশু নির্যাতন ও সি আর মামলার পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ।নারী শিশু মামলা নং-১৫২০/২০১৮, ধারা-৭/৯(১), ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩) এর এজাহার নামীয় আসামী হলো নবীগঞ্জ উপজেলা চরগাও গ্রামের কাঁচা মিয়ার পুত্র রায়হান মিয়া (২৬)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কামাল হোসেন, পিপিএম এর দিক নির্দেশনায় ও এস,আই সুমন মিয়ার নেতৃত্বে গোপন সংবাদ ভিত্তিতে উপজেলা রাজাবাদ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে নারী শিশু নির্যাতন মামলার ও সি আর পরোয়ানা ভুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন,নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কালাম হোসেন পিপিএম। তিনি বলেন গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে হবিগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। Logo নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবে শিক্ষানুরাগী আব্দুল হান্নানকে সংবর্ধনা Logo সিইসি হলেন সাবেক সচিব নাসীর উদ্দীন Logo সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত: প্রধান উপদেষ্টা Logo ব্যারিস্টার সুমনের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর Logo শায়েস্তাগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস Logo নবীগঞ্জে জামায়াত নেতার মামলায় আ.লীগ নেতা সাইফুল ও সন্তোষ গ্রেফতার Logo শায়েস্তাগঞ্জে ব্র্যাকের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি ও অবহিত করণ সভা অনুষ্ঠিত Logo তৃণমূল নেতাদের প্রাণপুরুষ তারেক রহমান

সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্ন ছিল বানিয়াচং উপজেলারশহিদ আকিনুরের

শায়েস্তাগঞ্জের বাণী ডেস্ক ,

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আকিনুর মিয়ার স্ত্রীর সঙ্গে শেষ কথা ছিল ‘আমি আন্দোলনে যাচ্ছি, যদি না ফিরি তাহলে আমার সন্তানদের তুমি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করো।’ আন্দোলনে গিয়ে আর জীবিত ফেরেননি আকিনুর।

লাশ হয়ে ফিরেছেন তিনি। তবে এখন সন্তানদের কিভাবে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন এবং কে এর ব্যয়ভার বহন করবে সেই চিন্তায় দিশেহারা তার স্ত্রী রাকিয়া আক্তার। নিহত আকিনুর মিয়া (৩৫) বানিয়াচং উপজেলার কামালখানী মহল্লার বন্দেরবাড়ি এলাকার তাহের মিয়ার ছেলে।

মা মিনারা খাতুন। আকিনুরের দুই কন্যা রাবিয়া, সামিহা ও ছেলে আব্দুল্লাহ। বড় মেয়ের বয়স ৯ ও ৫ বছর আর ছেলের বয়স ২ বছর। গত ৫ আগস্ট বানিয়াচংয়ে বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন আকিনুর। পরে বানিয়াচং হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

আকিনুরের স্ত্রী রাকিয়া আক্তার জানান, আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই আকিনুর সক্রিয় ছিল। গত ৫ আগস্ট দুপুরে যাওয়ার সময়ে বলেছিলেন, ‘আমি আন্দোলনে যাচ্ছি। আজ একটি ফয়সালা হবে।

যদি আমি জীবিত না ফিরে আসি তাহলে আমার সন্তানদের তুমি দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করো।’ স্বামীর স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন রাকিয়া খাতুন। কিন্তু রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।

বিভিন্ন জনের সাহায্যে সন্তানদের মাদ্রাসায় লেখাপড়া করানোর ব্যবস্থা নিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু নিয়মিতভাবে তাদের পড়ালেখার ব্যয় কিভাবে চলবে তা নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা। এছাড়া রয়েছে সংসারের খরচ।

স্বামী আকিনুরই ছিলেন সংসারের একমাত্র উপাজর্নকারী ব্যক্তি। তার মৃত্যুতে একেবারে অসহায় রাকিয়া খাতুন ভেঙে পড়েছেন।

তিনি তার পরিবার চালানো ও সন্তানদের স্বামীর কথা মতো দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে সকলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।

এদিকে স্বামীর হত্যা বিচার প্রসঙ্গে রাকিয়া খাতুন বলেন, আমি অবশ্যই এ হত্যাকান্ডের বিচার চাই।

প্রকৃত আসামীরা শাস্তি পেলে ভীষণ খুশি হবো। স্থানীয়রা জানান, আকিনুর আন্দোলনের শুরু থেকেই ভীষণ সক্রিয় ছিলেন। দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে একেবারে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

নিজেই কেবল আন্দোলনে অংশ নিতেন না সকলে যেন হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামে তাতেও উৎসাহ যোগাতেন। বেশ জোরেসোরে আওয়াজ তুলতেন তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে।

তারা আরো জানান, প্রতিদিনই আন্দোলনে অংশ নিতেন আকিনুর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা তিনি দেখে যেতে পারেন নি। ছোট ছোট সন্তান রেখে তিনি দেশের জন্যে জীবন দিয়েছেন।

শহিদ হয়েছেন। তারা বলেন, আমরা এ হত্যাকাÐের বিচার চাই। অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতিও আহŸান জানাই।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৪৮:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪
১৭ বার পড়া হয়েছে

নবীগঞ্জে পুলিশের বিশেষ অভিযানে নারী ও শিশু নির্যাতন ও সি আর মামলার পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ।নারী শিশু মামলা নং-১৫২০/২০১৮, ধারা-৭/৯(১), ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩) এর এজাহার নামীয় আসামী হলো নবীগঞ্জ উপজেলা চরগাও গ্রামের কাঁচা মিয়ার পুত্র রায়হান মিয়া (২৬)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কামাল হোসেন, পিপিএম এর দিক নির্দেশনায় ও এস,আই সুমন মিয়ার নেতৃত্বে গোপন সংবাদ ভিত্তিতে উপজেলা রাজাবাদ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে নারী শিশু নির্যাতন মামলার ও সি আর পরোয়ানা ভুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন,নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কালাম হোসেন পিপিএম। তিনি বলেন গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে হবিগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্ন ছিল বানিয়াচং উপজেলারশহিদ আকিনুরের

আপডেট সময় ০৪:৪৮:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আকিনুর মিয়ার স্ত্রীর সঙ্গে শেষ কথা ছিল ‘আমি আন্দোলনে যাচ্ছি, যদি না ফিরি তাহলে আমার সন্তানদের তুমি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করো।’ আন্দোলনে গিয়ে আর জীবিত ফেরেননি আকিনুর।

লাশ হয়ে ফিরেছেন তিনি। তবে এখন সন্তানদের কিভাবে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন এবং কে এর ব্যয়ভার বহন করবে সেই চিন্তায় দিশেহারা তার স্ত্রী রাকিয়া আক্তার। নিহত আকিনুর মিয়া (৩৫) বানিয়াচং উপজেলার কামালখানী মহল্লার বন্দেরবাড়ি এলাকার তাহের মিয়ার ছেলে।

মা মিনারা খাতুন। আকিনুরের দুই কন্যা রাবিয়া, সামিহা ও ছেলে আব্দুল্লাহ। বড় মেয়ের বয়স ৯ ও ৫ বছর আর ছেলের বয়স ২ বছর। গত ৫ আগস্ট বানিয়াচংয়ে বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন আকিনুর। পরে বানিয়াচং হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

আকিনুরের স্ত্রী রাকিয়া আক্তার জানান, আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই আকিনুর সক্রিয় ছিল। গত ৫ আগস্ট দুপুরে যাওয়ার সময়ে বলেছিলেন, ‘আমি আন্দোলনে যাচ্ছি। আজ একটি ফয়সালা হবে।

যদি আমি জীবিত না ফিরে আসি তাহলে আমার সন্তানদের তুমি দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করো।’ স্বামীর স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন রাকিয়া খাতুন। কিন্তু রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।

বিভিন্ন জনের সাহায্যে সন্তানদের মাদ্রাসায় লেখাপড়া করানোর ব্যবস্থা নিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু নিয়মিতভাবে তাদের পড়ালেখার ব্যয় কিভাবে চলবে তা নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা। এছাড়া রয়েছে সংসারের খরচ।

স্বামী আকিনুরই ছিলেন সংসারের একমাত্র উপাজর্নকারী ব্যক্তি। তার মৃত্যুতে একেবারে অসহায় রাকিয়া খাতুন ভেঙে পড়েছেন।

তিনি তার পরিবার চালানো ও সন্তানদের স্বামীর কথা মতো দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে সকলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।

এদিকে স্বামীর হত্যা বিচার প্রসঙ্গে রাকিয়া খাতুন বলেন, আমি অবশ্যই এ হত্যাকান্ডের বিচার চাই।

প্রকৃত আসামীরা শাস্তি পেলে ভীষণ খুশি হবো। স্থানীয়রা জানান, আকিনুর আন্দোলনের শুরু থেকেই ভীষণ সক্রিয় ছিলেন। দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে একেবারে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

নিজেই কেবল আন্দোলনে অংশ নিতেন না সকলে যেন হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামে তাতেও উৎসাহ যোগাতেন। বেশ জোরেসোরে আওয়াজ তুলতেন তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে।

তারা আরো জানান, প্রতিদিনই আন্দোলনে অংশ নিতেন আকিনুর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা তিনি দেখে যেতে পারেন নি। ছোট ছোট সন্তান রেখে তিনি দেশের জন্যে জীবন দিয়েছেন।

শহিদ হয়েছেন। তারা বলেন, আমরা এ হত্যাকাÐের বিচার চাই। অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতিও আহŸান জানাই।