ঢাকা ১১:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘অভ্যুত্থানের সময়ে নজিরবিহীন মাত্রায় দমন–পীড়ন চালানো হয়েছে’

শায়েস্তাগঞ্জের বাণী ডেস্ক ,

নিরাপত্তা বাহিনীকে সংস্কার করে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশের সংস্কার নিয়ে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটির এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল ‘আফটার দ্য মুনসুন রেভুলেশন : এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই–অভ্যুত্থানের সময়ে নজিরবিহীন মাত্রায় দমন–পীড়ন চালানো হয়েছে। এ ধরনের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সুপ্রতিষ্ঠিত অনুশীলন, যারা দীর্ঘ সময় ধরে দায়মুক্তির সংস্কৃতি উপভোগ করে আসছে। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটি (সিএটি) বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীকে ‘রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল। পুলিশসহ বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়মুক্তি ও জবাবদিহি না থাকার বিষয়টিও প্রতিষ্ঠিত।

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর বহু থানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং প্রতিশোধের ভয়ে পুলিশ সদস্যরাও গা ঢাকা দিয়েছিলেন। যদিও আগস্টের মাঝামাঝিতে ৬৩৯ থানার মধ্যে ৬২৮টি আবার কার্যক্রম শুরু করে। এখন নিরাপত্তা খাতের সংস্কার এবং একই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ও সংস্কারের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। আর গুমের বিষয়টি তদন্তে কমিশনও গঠন করেছে। এ ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সংস্কারের পাশাপাশি পুলিশের সংস্কার নিয়ে আলাদা কমিশন গঠন করেছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, আগে যে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিল নিরাপত্তা বাহিনীগুলো, তা যাতে আর করতে না পারে।

প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনীকে সংস্কার করে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সরকারি আইনজীবী ও বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি নাগরিক সমাজের ওপর নজরদারি ও নিবর্তনমূলক চর্চা বন্ধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করতে দাতাদেশগুলোর উচিত বিনিয়োগ করা। আর ভবিষ্যৎ সরকার ক্ষমতায় এসে যাতে এসব সংস্কারকে পাল্টে ফেলতে না পারে, সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে একটি প্রস্তাব নেওয়া, যাতে তারা সংস্কার বাস্তবায়নে সহযোগিতার পাশাপাশি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৩:১৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
৩ বার পড়া হয়েছে

‘অভ্যুত্থানের সময়ে নজিরবিহীন মাত্রায় দমন–পীড়ন চালানো হয়েছে’

আপডেট সময় ০৩:১৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

নিরাপত্তা বাহিনীকে সংস্কার করে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশের সংস্কার নিয়ে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটির এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল ‘আফটার দ্য মুনসুন রেভুলেশন : এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই–অভ্যুত্থানের সময়ে নজিরবিহীন মাত্রায় দমন–পীড়ন চালানো হয়েছে। এ ধরনের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সুপ্রতিষ্ঠিত অনুশীলন, যারা দীর্ঘ সময় ধরে দায়মুক্তির সংস্কৃতি উপভোগ করে আসছে। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটি (সিএটি) বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীকে ‘রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল। পুলিশসহ বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়মুক্তি ও জবাবদিহি না থাকার বিষয়টিও প্রতিষ্ঠিত।

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর বহু থানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং প্রতিশোধের ভয়ে পুলিশ সদস্যরাও গা ঢাকা দিয়েছিলেন। যদিও আগস্টের মাঝামাঝিতে ৬৩৯ থানার মধ্যে ৬২৮টি আবার কার্যক্রম শুরু করে। এখন নিরাপত্তা খাতের সংস্কার এবং একই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ও সংস্কারের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। আর গুমের বিষয়টি তদন্তে কমিশনও গঠন করেছে। এ ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সংস্কারের পাশাপাশি পুলিশের সংস্কার নিয়ে আলাদা কমিশন গঠন করেছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, আগে যে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিল নিরাপত্তা বাহিনীগুলো, তা যাতে আর করতে না পারে।

প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনীকে সংস্কার করে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সরকারি আইনজীবী ও বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি নাগরিক সমাজের ওপর নজরদারি ও নিবর্তনমূলক চর্চা বন্ধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করতে দাতাদেশগুলোর উচিত বিনিয়োগ করা। আর ভবিষ্যৎ সরকার ক্ষমতায় এসে যাতে এসব সংস্কারকে পাল্টে ফেলতে না পারে, সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে একটি প্রস্তাব নেওয়া, যাতে তারা সংস্কার বাস্তবায়নে সহযোগিতার পাশাপাশি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারে।