ঢাকা ০৬:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবীগঞ্জে রিমন হত্যা মামলায় ৫সাংবাদিকসহ ১৮৬ আসামী

মোঃ সাগর আহমেদ নবীগঞ্জ( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:

নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় নতুন করে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
শুক্রবার রাতে নবীগঞ্জ থানায় এ মামলা রুজু করা হয়। মামলায় ১৮৪ জনকে নামীয় আসামি।গত ৭ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলার তিমিরপুর ও আনমনু গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দুই জন নিহত হন এবং শতাধিক মানুষ আহত হন।

এছাড়া ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর আগে ওই ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। একটি হত্যা মামলা, একটি পুলিশ এসল্ট মামলা এবং একটি হাসপাতাল ভাংচুর সংক্রান্ত মামলা। ওই তিন মামলায় প্রায় ১০ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
বৃহস্পতিবার নিহত রিমন মিয়ার হত্যার ঘটনায় ১৯১ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দেওয়া হয়।

পরে তালিকায় যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, তিন ব্যক্তির নাম একাধিকবার রয়েছে এবং দুইজন প্রবাসে অবস্থান করছেন। ফলে বাদী পাঁচজনের নাম প্রত্যাহার করে নেন।

পরবর্তীতে সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী ১৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা রেকর্ড করা হয়।

এই মামলায় আসামিদের তালিকায় রয়েছেন পাঁচজন সাংবাদিক। তারা হলেন দৈনিক মানবজমিনের সাংবাদিক এমএ বাছিত, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছনি আহমদ চৌধুরী, দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক সেলিম মিয়া তালুকদার এবং স্টাফ রিপোর্টার জাবেদ ইকবাল তালুকদার।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, সাংবাদিক আশাহিদ আলী আশা এবং আসামি সেলিম তালুকদারÑ উভয়েই সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত। একে অপরকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটূক্তিপূর্ণ পোস্ট করেন তারা।

এসব পোস্টকে কেন্দ্র করে সেলিম তালুকদার ও তার লোকজন নবীগঞ্জ নতুনবাজার এলাকার লতিফ সুপার মার্কেটের সামনে আশাহিদ আলী আশার ওপর হামলা চালান।

এ সময় স্থানীয়রা হামলাকারীদের দুজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন।

পরে প্রতিপক্ষের দুইজনকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সেলিম তালুকদারের নেতৃত্বে তিমিরপুর (পূর্ব ও পশ্চিম) ও চরগাঁও গ্রামের লোকজন একত্র হয়ে ওই মার্কেটে ভাংচুর চালান।

ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পূর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমিরপুর, চরগাঁওসহ আশপাশের গ্রামের লোকজন ১ নম্বর আসামি আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে একত্র হয়ে মিটিং করেন। একই সময় আনমনু গ্রামের লোকজনও মিটিংয়ে মিলিত হন।

বিকেল ২টার দিকে আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার লোক দেশীয় অস্ত্রসহ আনমনু গ্রামে হামলা চালান। এতে বহু লোক আহত হন এবং আনমনু গ্রামের বিভিন্ন দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

নিহত রিমনের ছোট ভাই রাজন আহমদ বিধু বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ কামরুজ্জামান বলেন, রিমন হত্যার অভিযোগে ১৮৪ জনের নামে নবীগঞ্জ থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।মামলার আসামি গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০২:১৯:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
৪ বার পড়া হয়েছে

নবীগঞ্জে রিমন হত্যা মামলায় ৫সাংবাদিকসহ ১৮৬ আসামী

আপডেট সময় ০২:১৯:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় নতুন করে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
শুক্রবার রাতে নবীগঞ্জ থানায় এ মামলা রুজু করা হয়। মামলায় ১৮৪ জনকে নামীয় আসামি।গত ৭ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলার তিমিরপুর ও আনমনু গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দুই জন নিহত হন এবং শতাধিক মানুষ আহত হন।

এছাড়া ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর আগে ওই ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। একটি হত্যা মামলা, একটি পুলিশ এসল্ট মামলা এবং একটি হাসপাতাল ভাংচুর সংক্রান্ত মামলা। ওই তিন মামলায় প্রায় ১০ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
বৃহস্পতিবার নিহত রিমন মিয়ার হত্যার ঘটনায় ১৯১ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দেওয়া হয়।

পরে তালিকায় যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, তিন ব্যক্তির নাম একাধিকবার রয়েছে এবং দুইজন প্রবাসে অবস্থান করছেন। ফলে বাদী পাঁচজনের নাম প্রত্যাহার করে নেন।

পরবর্তীতে সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী ১৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা রেকর্ড করা হয়।

এই মামলায় আসামিদের তালিকায় রয়েছেন পাঁচজন সাংবাদিক। তারা হলেন দৈনিক মানবজমিনের সাংবাদিক এমএ বাছিত, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছনি আহমদ চৌধুরী, দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক সেলিম মিয়া তালুকদার এবং স্টাফ রিপোর্টার জাবেদ ইকবাল তালুকদার।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, সাংবাদিক আশাহিদ আলী আশা এবং আসামি সেলিম তালুকদারÑ উভয়েই সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত। একে অপরকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটূক্তিপূর্ণ পোস্ট করেন তারা।

এসব পোস্টকে কেন্দ্র করে সেলিম তালুকদার ও তার লোকজন নবীগঞ্জ নতুনবাজার এলাকার লতিফ সুপার মার্কেটের সামনে আশাহিদ আলী আশার ওপর হামলা চালান।

এ সময় স্থানীয়রা হামলাকারীদের দুজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন।

পরে প্রতিপক্ষের দুইজনকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সেলিম তালুকদারের নেতৃত্বে তিমিরপুর (পূর্ব ও পশ্চিম) ও চরগাঁও গ্রামের লোকজন একত্র হয়ে ওই মার্কেটে ভাংচুর চালান।

ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পূর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমিরপুর, চরগাঁওসহ আশপাশের গ্রামের লোকজন ১ নম্বর আসামি আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে একত্র হয়ে মিটিং করেন। একই সময় আনমনু গ্রামের লোকজনও মিটিংয়ে মিলিত হন।

বিকেল ২টার দিকে আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার লোক দেশীয় অস্ত্রসহ আনমনু গ্রামে হামলা চালান। এতে বহু লোক আহত হন এবং আনমনু গ্রামের বিভিন্ন দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

নিহত রিমনের ছোট ভাই রাজন আহমদ বিধু বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ কামরুজ্জামান বলেন, রিমন হত্যার অভিযোগে ১৮৪ জনের নামে নবীগঞ্জ থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।মামলার আসামি গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।