ঢাকা ০৯:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নিখোঁজের ৫ দিন পর উদ্ধার অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ, স্বামী গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাটে জমি বিরোধে কৃষক খুন Logo হবিগঞ্জে নিজ ঘর থেকে গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। Logo নবীগঞ্জে “জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo হবিগঞ্জ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ পুলিশ সুপার Logo বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে- নাহিদ ইসলাম Logo হবিগঞ্জে অর্ধশতাধিক দোকানপাট উচ্ছেদ Logo শায়েস্তাগঞ্জে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু Logo চুনারুঘাটে ঢলে ভেসে গেছে ব্রিজ, দুর্ভোগে মানুষ

আজমিরীগঞ্জ কালনী নদীর ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে পাড়ে বসে চোখ মুছছেন সুনিতী

আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত বাঁশি সূত্রধরের স্ত্রী সুনিতী রাণী সূত্রধর (৮৭)। বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে চলা স্রোতস্বিনী কালনী নদীর ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে তার বাড়ি। নদীর পাড়ে বসে বারবার চোখ মুছছেন তিনি। মাত্র কয়েক মাস আগেও নিজের প্রয়াত স্বামীর ভিটায় বসবাস করছিলেন সুনিতী।

কালনী নদীর ভাঙনে নিজের বসতভিটা হারিয়ে এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রিতা বয়োবৃদ্ধা সুনিতী রাণীর চোখে এখন কেবল বিষাদের জল। জীবনের শেষ সময়ে যেখানে নিজের বসতঘরে শান্তির নিঃশ্বাস নেওয়ার কথা সেই সময়ে সুনিতী রাণীর দিন কাটছে মানুষের বাড়ির আশ্রিতা হিসেবে। শুধু সুনিতী রাণীই নন, কালনী নদীর ভাঙনে বিগত অর্ধযুগে বসতভিটা হারিয়েছেন কাকাইলছেও ইউনিয়নের কালনীপাড়া, বদরপুর, নদীপুর, সৌলরী, মনিপুর, সাহানগরসহ অন্তত আট গ্রামের অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবার।

সুনিতী রাণী জানান, কয়েক মাসে আগে ঘরে বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম। হঠাৎ ঘরের মেঝেতে ফাটল দেখা দিলে দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসি। কিছুক্ষণের মধ্যেই নদীতে চলে যায় বসতভিটা। এ সময়ে কোথায় যাব, শেষ বয়সে কীভাবে কাটবে বাকি দিন—সেই চিন্তায় এখন দিন কাটে।

স্থানীয়রা জানান, বিগত আড়াই বছর আগে কাকাইলছেও ইউনিয়নের নদী পাড়ের গ্রামগুলো বাঁচাতে কিছু অংশে জিও ব্যাগ ফেলা ছাড়া নদীভাঙন থেকে বাঁচাতে আর কোনো কাজই করা হয়নি। বছরের পর বছর আশ্বাস মিললেও অর্ধযুগেও নদী ভাঙনরোধে কোনো টেকসই প্রকল্প গ্রহণ না করায় প্রতিনিয়তই নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারিয়ে দিশেহারা গ্রামগুলোর সহস্রাধিক পরিবার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদন হলেই শুরু করা হবে কাজ৷ বিগত ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ দুই অর্থবছরে আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় নদীভাঙন রোধে ব্যয় করা হয়েছে ৩ কোটি টাকারও বেশি।

বদরপুর গ্রামের শংকর সূত্রধর জানান, বিগত অর্ধযুগের বেশি সময় ধরে কাকাইলছেও ইউনিয়নের বরপুরসহ প্রায় আটটি গ্রাম নদীভাঙনের কবলে পড়ে। বছরের পর বছর আশ্বাস মিললেও নদীভাঙন থেকে গ্রামগুলো রক্ষায় তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সন্ধ্যা রাণী সূত্রধর নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, কয়েকদিন আগে আমার বসতভিটাও নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তিনি অন্য এক বাড়ির পেছনে কোনোরকমে পরিবার নিয়ে অনিশ্চিত জীবনযাপন করছি৷

স্থানীয় শিক্ষক নিখিল সূত্রধর, স্থানীয় বাসিন্দা রমাকান্ত, মিলন মিয়া, ফয়সল মিয়ারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কালনী নদীর ভাঙনে বসতভিটা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ শত শত স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে৷ কিন্তু নদীভাঙন রোধে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো কাজই করা হয়নি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মহিবুর রহমান বলেন, কালনী নদীর ভাঙনে কয়েকটি গ্রামের শত শত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এখনো ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু নদীভাঙন রোধে কোনো কাজই করা হয়নি।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবিড় রঞ্জন তালুকদার বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি৷ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি৷ উনারা জানিয়েছেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া জরুরি মেরামতের প্রয়োজন হলে তারা করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।

হবিগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, পরিকল্পনা কমিশনে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদন হলেই দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ওই এলাকায় কাজ শুরু করা হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:৫৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
৪০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

আজমিরীগঞ্জ কালনী নদীর ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে পাড়ে বসে চোখ মুছছেন সুনিতী

আপডেট সময় ১১:৫৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত বাঁশি সূত্রধরের স্ত্রী সুনিতী রাণী সূত্রধর (৮৭)। বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে চলা স্রোতস্বিনী কালনী নদীর ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে তার বাড়ি। নদীর পাড়ে বসে বারবার চোখ মুছছেন তিনি। মাত্র কয়েক মাস আগেও নিজের প্রয়াত স্বামীর ভিটায় বসবাস করছিলেন সুনিতী।

কালনী নদীর ভাঙনে নিজের বসতভিটা হারিয়ে এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রিতা বয়োবৃদ্ধা সুনিতী রাণীর চোখে এখন কেবল বিষাদের জল। জীবনের শেষ সময়ে যেখানে নিজের বসতঘরে শান্তির নিঃশ্বাস নেওয়ার কথা সেই সময়ে সুনিতী রাণীর দিন কাটছে মানুষের বাড়ির আশ্রিতা হিসেবে। শুধু সুনিতী রাণীই নন, কালনী নদীর ভাঙনে বিগত অর্ধযুগে বসতভিটা হারিয়েছেন কাকাইলছেও ইউনিয়নের কালনীপাড়া, বদরপুর, নদীপুর, সৌলরী, মনিপুর, সাহানগরসহ অন্তত আট গ্রামের অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবার।

সুনিতী রাণী জানান, কয়েক মাসে আগে ঘরে বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম। হঠাৎ ঘরের মেঝেতে ফাটল দেখা দিলে দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসি। কিছুক্ষণের মধ্যেই নদীতে চলে যায় বসতভিটা। এ সময়ে কোথায় যাব, শেষ বয়সে কীভাবে কাটবে বাকি দিন—সেই চিন্তায় এখন দিন কাটে।

স্থানীয়রা জানান, বিগত আড়াই বছর আগে কাকাইলছেও ইউনিয়নের নদী পাড়ের গ্রামগুলো বাঁচাতে কিছু অংশে জিও ব্যাগ ফেলা ছাড়া নদীভাঙন থেকে বাঁচাতে আর কোনো কাজই করা হয়নি। বছরের পর বছর আশ্বাস মিললেও অর্ধযুগেও নদী ভাঙনরোধে কোনো টেকসই প্রকল্প গ্রহণ না করায় প্রতিনিয়তই নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারিয়ে দিশেহারা গ্রামগুলোর সহস্রাধিক পরিবার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদন হলেই শুরু করা হবে কাজ৷ বিগত ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ দুই অর্থবছরে আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় নদীভাঙন রোধে ব্যয় করা হয়েছে ৩ কোটি টাকারও বেশি।

বদরপুর গ্রামের শংকর সূত্রধর জানান, বিগত অর্ধযুগের বেশি সময় ধরে কাকাইলছেও ইউনিয়নের বরপুরসহ প্রায় আটটি গ্রাম নদীভাঙনের কবলে পড়ে। বছরের পর বছর আশ্বাস মিললেও নদীভাঙন থেকে গ্রামগুলো রক্ষায় তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সন্ধ্যা রাণী সূত্রধর নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, কয়েকদিন আগে আমার বসতভিটাও নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তিনি অন্য এক বাড়ির পেছনে কোনোরকমে পরিবার নিয়ে অনিশ্চিত জীবনযাপন করছি৷

স্থানীয় শিক্ষক নিখিল সূত্রধর, স্থানীয় বাসিন্দা রমাকান্ত, মিলন মিয়া, ফয়সল মিয়ারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কালনী নদীর ভাঙনে বসতভিটা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ শত শত স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে৷ কিন্তু নদীভাঙন রোধে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো কাজই করা হয়নি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মহিবুর রহমান বলেন, কালনী নদীর ভাঙনে কয়েকটি গ্রামের শত শত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এখনো ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু নদীভাঙন রোধে কোনো কাজই করা হয়নি।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবিড় রঞ্জন তালুকদার বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি৷ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি৷ উনারা জানিয়েছেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া জরুরি মেরামতের প্রয়োজন হলে তারা করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।

হবিগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, পরিকল্পনা কমিশনে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদন হলেই দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ওই এলাকায় কাজ শুরু করা হবে।