আশুরার দিনে যা ঘটেছিল?
হিজরি সনের প্রথম মাস মহররম। এ মাসের ১০ তারিখের দিনকে আশুরা বলে। মহররম মাসকে হাদিসে আল্লাহর মাস বলে সম্মানিত করা হয়েছে। সেই সম্মানিত মাসের ১০ তারিখও ঐতিহাসিকভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এ দিনে রোজা রাখার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কেউ যদি এ দিন রোজা রাখা তাহলে আল্লাহ তাআলা রোজাদারের পূর্বের এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। (মুসলিম)
এ দিনের রোজার হাদিসে জানা যায়, আশুরার দিনে মুসা আলাইহিস সালামকে ফেরআউন থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করে মদিনায় এলেন এবং তিনি ইহুদিদেরকে আশুরার দিন রোজা পালন করতে দেখতে পেলেন।
এরপর তাদেরকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পর তারা বলল, এ সে দিন যে দিন আল্লাহ মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ফিরআউনের ওপর বিজয়ী করেছেন। তার সম্মানার্থে আমরা রোজা পালন করে থাকি।
তখন নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমরা তোমাদের চেয়েও মুসা (আ.)-এর অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিনে রোজা পালন করার নির্দেশ দিলেন। (মুসলিম ২৫২৩)
এ হাদিস থেকে এটা প্রমাণিত এদিন ফেরআউনকে পানিতে ডুবিয়ে মারা হয়েছিল। হাদিসে মুসা (আ.)-এর ঘটনা নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
এ দিনে আরও ৩টি ঘটনার কথা হাদিসের কিতাবসমূহে পাওয়া যায় তবে হাদিস বিসারদগণ সেগুলো অনির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে বলে মত দিয়েছেন। সে তিনটি ঘটনা হলো-
১. এ দিনে আল্লাহ তাআলা হজরত আদম (আ.)-এর তওবা কবুল করেন।
২. এ দিনে নুহ (আ.)-এর নৌকা জুদি পর্বতের উপর থামে।
৩. এ দিনে ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেন।
এ ছাড়া এ দিনে কেয়ামত সংঘটিত হবে বলে যে কথা প্রচলিত আছে তার কোনো ভিত্তি নেই।
যে বর্ণনায় আশুরার দিন কেয়ামত হওয়ার কথা এসেছে তা হাদিস বিশারদদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভিত্তিহীন, জাল। (কিতাবুল মাউজুআত ২/২০২)
তবে জুমার দিন কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার কথা নির্ভরযোগ্য সূত্রে হাদিসে এসেছে। (তিরমিজি ২/৩৬২)
এ দিনের একটি শোকাবহ ঘটনা হলো ইরাকের কারবালার প্রান্তরে হজরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত বরণের ঘটনা। যা মুসলিম জাতির জন্য অনেক দুঃখজনক বিষয়।