শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৩ অপরাহ্ন

উত্তরের ঈদ যাত্রায় চার লেন চালু করায় স্বস্তির আশা, আছে শঙ্কাও

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ,পুরো দমে চলছে এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কের চার লেন প্রকল্পের কাজ। উত্তরের পথে ঈদযাত্রায় গাড়ির চাপ সামাল দিতে ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত চার লেন চালু করা হয়েছে। তবে মহাসড়কে চার লেনের কাজ চলমান থাকায় কোথাও কোথাও যানজটের আশঙ্কায় যাত্রীরা। যাতায়াতের স্বস্তি ফেরাতে দ্রুতই সব কাজ শেষ করার দাবি যাত্রী ও চালকদের। তাই ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াত নিশ্চিত করতে ওই সকল স্থানে ঝুকিপূর্ণ চিহ্নিত করে মেরামতের কাজ চলছে।

তবে জেলা পুলিশ বলছে, মহাসড়কের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। এবার ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তি এড়াতে নিরাপত্তা ও যানজট নিরসনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর থেকে ২২ কিলোমিটার মহাসড়ক পেরিয়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বর। এখান থেকে নাটোরের বনপাড়া, পাবনা ও বগুড়ার দিকে বিভক্ত হয়ে যায় এই মহাসড়ক। সারা বছরই এ মহাসড়ক দিয়ে উত্তর ও দক্ষিনঞ্চলের ২২ জেলার গাড়ির চাপ থাকে। ঈদযাত্রায় গাড়ির চাপ থাকে কয়েকগুণ। স্বাভাবিক দিনে প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে এই মহাসড়ক দিয়ে। তবে ঈদের আগে যানবাহনের চাপ বাড়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

ঈদের আগে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৩৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। অনেক সময় ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া ঢাকা-বগুড়া ও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে রাস্তা প্রশস্ত করণ ও ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ অধিকাংশ জায়গায় শেষ হলেও হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ কাজসহ অনেক জায়গায় ফোর লেনের কাজ চলমান রয়েছে। কাজ চলমান থাকায় কিছু কিছু জায়গায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে। তাই চালকদের দাবি দ্রুত সংস্কার করে ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্নে ও যানজট মুক্ত করা হোক।

প্রতিবছর ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল আযহার সময় বঙ্গবন্ধু সেতু গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল মোড় পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার এ মহাসড়ক পাড়ি দিতে যাত্রী ও চালকদের ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থেকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তবে এ বছর মহাসড়কের নলকা ব্রীজ, ফ্লাইওভার ও ফোর লেনের কাজ অনেকাংশ শেষ হওয়াতে অনেকটাই স্বস্থি পেতে পারে উত্তরবঙ্গের ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ, যাত্রী ও চালকেরা। তবে কিছু কিছু জায়গায় রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ ও হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে কিছু জায়গায় যানজট সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে যাত্রী ও চালকদের।

আর পরিবহনের চালকরা জানান, ঈদের আগে মহাসড়কের ঝুকিপূর্ণ অংশ সংস্কার করলে যানজট নিরসন লাঘব হবে।

ঢাকা থেকে বগুড়া গামী মোটরসাইকেল চালক রিপন শেখ বলেন, গতবারের চেয়ে এবার যাত্রা যানজট মুক্ত হবে। তবে হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত ফোরলেন রাস্তা কাজ চলমান থাকায় কিছু কিছু স্থানে রাস্তা সরু আছে যার কারণে এই স্থান দিয়ে গাড়ি পারাপারের জন্য যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

বাস চালক রজব আলী বলেন, আগের বছরের তুলনাই এবছর মহাসড়কের অবস্থা ভালো। বগুড়া পর্যন্ত ফোর লেনের কাজ সমাপ্তের দিকে। কিন্তু এখনও অনেক জায়গায় খানাখন্দ রয়েছে। বিশেষ করে হাটিকুমরুল চৌরাস্ত থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত যে জায়গাগুলোতে দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। ঈদের আগে মেরামত করা হলে যানজট হবে না।

বাস চালক আসলাম শেখ বলেন, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ভূইয়াগাতী থেকে ঘুরকা বেলতলা পর্যন্ত সমস্য হতে পারে। সংস্কার করা গেলে এ সমস্যা থাকবে না। এছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হলে এবার যানজট থাকবে না।

সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক-২) সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, উত্তরবঙ্গের ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াতে যেন বিঘ্ন না ঘটে এ জন্য হাটিকুমরুল মোড়ে একমাস আগেই কংক্রিটের রাস্তা মেরামত করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ চারটি লেগের মেরামত কাজ শুরু করেছে। আশা করছি এ বছর যানজট হবে না।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর মহাসড়কের অবস্থা খুবই ভালো। ঈদযাত্রায় উত্তরবঙ্গের ঘরে ফেরা মানুষরা নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে যানজটমুক্ত ঘরে ফিরতে পারে এজন্য দুই সপ্তাহ আগেই মহাসড়কের সর্বশেষ চিত্র পর্যবেক্ষণ করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে সকল তথ্য সড়ক বিভাগের কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আর কর্তৃপক্ষ সেগুলো আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে মেরামত করে দেবে বলে জানিয়েছে। মানুষের নিরাপদে ঘরে ফেরা ও নিশ্চিন্তে যাতায়াতে মহাসড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সাড়ে ৭০০ পুলিশ মোতায়ন থাকবে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.