ঢাকা ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

পানি নিষ্কাশনের পথ ইট-পাথরের বাঁধ, পানিবন্দি ৫০ পরিবার

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

পানি নিষ্কাশনের পথে ইটপাথর দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার ৫০টি পরিবারের প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ গত দুই বছর ধরে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর

জীবনযাপন করছে। শুধু তাই নয় ১শ’ কিয়ার (৩০ শতাংশে এক কিয়ার) জমি অনাবাদি থাকে। এছাড়াও পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ থাকায় জমে থাকা পানি বাদাঘাট থেকে ঘাগড়া সড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ৩ স্থানে ভেঙে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামে এমনি ঘটনাটি ঘটেছে। আর পানি নিষ্কাশনের পথে ইটপাথর দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ায় এই গ্রামের আমির হোসেন নামের প্রভাবশালী এক যুবকের বিরুদ্ধে।

এই বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিনের কাছে গ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে ভুক্তভোগী প্রায় ৫০টি পরিবারের গণস্বাক্ষরীত একটি আবেদন করেন।

ভোক্তভোগীরা জানায়,পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় জমে থাকা বর্ষার পানি গ্রামের খড়,বাড়ি-ঘরের আঙিনা সীমানা প্রাচীরের নীচ পর্যন্ত অনেক বাড়িঘরের ভিতরে পানি উঠে যাওয়ায় অনেকেই রান্নাও করতে পারছেন না ছোট ছোট শিশু ও পারিবার পরিজন নিয়ে পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। ঘরের সামনে হাঁটু

পানি থাকায় বর্ষার কালে নর্দমার পানির সাথে বর্ষার পানি মিশে নোংড়া হয়ে পড়েছে। সেই নোংড়া পানি ভেঙ্গে গ্রামের মানুষ যাতায়াত করছে নারী এবং শিশুরা। সেই সঙ্গে জমে থাকা পানির কারণে এখানকার প্রায় ১০০ কেয়ার জমিতে (৩০ শতাংশে এক কিয়ার) কোন ফসল না করতে পারায় গত দুই বছর ধরে অনাবাদি রয়েছে।

ভুক্তভোগী আব্দুল করিম (৭১) বলেন, আমির হোসেন প্রভাবশালী মানুষ। সড়কের সঙ্গে সরকারি জায়গা দখলে নিয়ে গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেয়। প্রতিবাদ করলে আমির হোসেন গত বছর আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করে।

গ্রামের শাফিয়া বেগম (৬০) বলেন, এইখান ড্রেইন আছিন, (ছিল) আজীবন এই ড্রেইন দিয়া পানি নামছে। অন্নে (এখন) পাক্কাচাক্কা (পাকা সড়ক) কইরা বান (বাঁধ) দেলাইছে (দিয়েছে)। অন্নে (এখন) মেঘ আইলেই (আসলে) পানি লাইজ্ঞা (লেগে) থাকে। একই কথা এই গ্রামের ভুক্তভোগী কালা মিয়া (৬৫), জালাল উদ্দিন (৭১), আব্দুল আহাদ (৫৫)।

ঘাগড়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা নুর হোসেন মল্লিক (৬০) বলেন, গত দুই বছর পূর্বে আমির হোসেন এই জায়গা কিনে গ্রামের পানি নিষ্কাশনের খাল বন্ধ করে

দেয়। এখন সে ইটপাথর দিয়ে পানির যাওয়ার রাস্তায় স্থায়ীভাবে বাধঁ দেয়। যে কারণে গত দুই বছর ধরে এখানে বসবাসকারী ৫০টি পরিবারের প্রায় ৩শ’ মানুষ পানি জমে থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছে।

অভিযুক্ত ঘাগড়া গ্রামের আমির হোসেন (৩০) বলেন, আমি এই জাগা কিনে মাটি পালাইয়া বাড়ি বানছি। এখন এই জাগা দিয়া পানি যাইবার লাগি দিলে আমার মাটি সব কায়টা যায়গা। তাই ইট দিয়া বান দিছি।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন, গ্রামবাসী পানি নিষ্কাশনের জন্য আমার কাছে একটি আবেদন নিয়ে আসছিল। আমি এর আগেও বাধঁ ভেঙে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিয়ে আসছিলাম। এখন যদি আবার ওই স্থানে বাধঁ দিয়ে থাকে তাহলে আমি সরেজমিনে দেখে অতিদ্রুতই ওই গ্রামের জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের জন্য বাধঁ অপসারণ করে দিয়ে আসবো।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:৪১:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
২৫ বার পড়া হয়েছে

পানি নিষ্কাশনের পথ ইট-পাথরের বাঁধ, পানিবন্দি ৫০ পরিবার

আপডেট সময় ০৭:৪১:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

পানি নিষ্কাশনের পথে ইটপাথর দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার ৫০টি পরিবারের প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ গত দুই বছর ধরে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর

জীবনযাপন করছে। শুধু তাই নয় ১শ’ কিয়ার (৩০ শতাংশে এক কিয়ার) জমি অনাবাদি থাকে। এছাড়াও পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ থাকায় জমে থাকা পানি বাদাঘাট থেকে ঘাগড়া সড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ৩ স্থানে ভেঙে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামে এমনি ঘটনাটি ঘটেছে। আর পানি নিষ্কাশনের পথে ইটপাথর দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ায় এই গ্রামের আমির হোসেন নামের প্রভাবশালী এক যুবকের বিরুদ্ধে।

এই বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিনের কাছে গ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে ভুক্তভোগী প্রায় ৫০টি পরিবারের গণস্বাক্ষরীত একটি আবেদন করেন।

ভোক্তভোগীরা জানায়,পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় জমে থাকা বর্ষার পানি গ্রামের খড়,বাড়ি-ঘরের আঙিনা সীমানা প্রাচীরের নীচ পর্যন্ত অনেক বাড়িঘরের ভিতরে পানি উঠে যাওয়ায় অনেকেই রান্নাও করতে পারছেন না ছোট ছোট শিশু ও পারিবার পরিজন নিয়ে পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। ঘরের সামনে হাঁটু

পানি থাকায় বর্ষার কালে নর্দমার পানির সাথে বর্ষার পানি মিশে নোংড়া হয়ে পড়েছে। সেই নোংড়া পানি ভেঙ্গে গ্রামের মানুষ যাতায়াত করছে নারী এবং শিশুরা। সেই সঙ্গে জমে থাকা পানির কারণে এখানকার প্রায় ১০০ কেয়ার জমিতে (৩০ শতাংশে এক কিয়ার) কোন ফসল না করতে পারায় গত দুই বছর ধরে অনাবাদি রয়েছে।

ভুক্তভোগী আব্দুল করিম (৭১) বলেন, আমির হোসেন প্রভাবশালী মানুষ। সড়কের সঙ্গে সরকারি জায়গা দখলে নিয়ে গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেয়। প্রতিবাদ করলে আমির হোসেন গত বছর আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করে।

গ্রামের শাফিয়া বেগম (৬০) বলেন, এইখান ড্রেইন আছিন, (ছিল) আজীবন এই ড্রেইন দিয়া পানি নামছে। অন্নে (এখন) পাক্কাচাক্কা (পাকা সড়ক) কইরা বান (বাঁধ) দেলাইছে (দিয়েছে)। অন্নে (এখন) মেঘ আইলেই (আসলে) পানি লাইজ্ঞা (লেগে) থাকে। একই কথা এই গ্রামের ভুক্তভোগী কালা মিয়া (৬৫), জালাল উদ্দিন (৭১), আব্দুল আহাদ (৫৫)।

ঘাগড়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা নুর হোসেন মল্লিক (৬০) বলেন, গত দুই বছর পূর্বে আমির হোসেন এই জায়গা কিনে গ্রামের পানি নিষ্কাশনের খাল বন্ধ করে

দেয়। এখন সে ইটপাথর দিয়ে পানির যাওয়ার রাস্তায় স্থায়ীভাবে বাধঁ দেয়। যে কারণে গত দুই বছর ধরে এখানে বসবাসকারী ৫০টি পরিবারের প্রায় ৩শ’ মানুষ পানি জমে থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছে।

অভিযুক্ত ঘাগড়া গ্রামের আমির হোসেন (৩০) বলেন, আমি এই জাগা কিনে মাটি পালাইয়া বাড়ি বানছি। এখন এই জাগা দিয়া পানি যাইবার লাগি দিলে আমার মাটি সব কায়টা যায়গা। তাই ইট দিয়া বান দিছি।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন, গ্রামবাসী পানি নিষ্কাশনের জন্য আমার কাছে একটি আবেদন নিয়ে আসছিল। আমি এর আগেও বাধঁ ভেঙে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিয়ে আসছিলাম। এখন যদি আবার ওই স্থানে বাধঁ দিয়ে থাকে তাহলে আমি সরেজমিনে দেখে অতিদ্রুতই ওই গ্রামের জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের জন্য বাধঁ অপসারণ করে দিয়ে আসবো।